হানঝাউ: চিন ‘প্রাচীন’ নয়। বরং সময়ের সঙ্গে আধুনিকতায় তাক লাগায়। এশিয়ান গেমসের ইতিহাসে সবচেয়ে সফল দেশ চিন। মাল্টি স্পোর্টস ইভেন্ট আয়োজনের ক্ষেত্রেও তারা কয়েক যোজন এগিয়ে। ২০০৮ সালে অলিম্পিক হয়েছিল চিনের বেজিং শহরে। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যদি বৃষ্টি ব্যাঘাত ঘটায়? ২০০৮ বেজিং অলিম্পিকের উদ্বোধন হয়েছিল বার্ড নেস্ট স্টেডিয়ামে। পাখির বাসায় গেমসের উদ্বোধন। আর বৃষ্টি প্রসঙ্গে উদ্যোক্তারা সদর্পে জানিয়েছিলেন, মেঘ এলে সরিয়ে দেব। তার দু-বছর পর চিনে হয় এশিয়ান গেমস। ২০১০ সালে গুয়াংঝৌ এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের জন্য খরস্রোতা পার্ল নদীর ওপর একটি কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করা হয়েছিল। এ বার আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং ইকো ফ্রেন্ডলি টেকনোলজিতে তাক লাগাল চিন। গত ১৫ বছরে তৃতীয় মেগা ইভেন্টে আধুনিকতা কোন জায়গায় নেওয়া যায়, আরও এক বার দেখিয়ে দিল চিন। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports-এর এই প্রতিবেদনে।
এশিয়ান গেমসের যাত্রা শুরু হয়েছিল ভারতে। ১৯৫১ সালে প্রথম এশিয়ান গেমস হয় নয়াদিল্লিতে। ১৯তম এশিয়ান গেমস হচ্ছে হানঝাউতে। সময়ের সঙ্গে বদলেছে অনেক কিছু। অনেক স্পোর্টস যোগ হয়েছে। ব্যপ্তি বেড়েছে। প্রত্যাশাও আকাশ ছুঁয়েছে। টিম ইভেন্টগুলো আগেই শুরু হয়েছিল। এ দিন সরকারি ভাবে ১৯তম গেমসের যাত্রা শুরু হল। উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের অন্তর্বর্তী সভাপতি রনধীর সিং। ভারতের এই অলিম্পিক কর্তা উদ্বোধনী ভাষণে গেমসের সঙ্গে যুক্ত সকলকে, দর্শকদের সেলাম জানান। সঙ্গে স্থানীয় ভাষায় শে-শে অর্থাৎ ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। উদ্বোধনী মঞ্চে চিনের প্রেসিডেন্ট শি জিন পিংকে আহ্বান জানান রনধীর সিংই। সরকারি ভাবে এশিয়ান গেমসের সূচনা ঘোষণা করেন চিনের প্রেসিডেন্ট। এশিয়ান অলিম্পিক কাউন্সিলের পতাকা আনা হয় উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সেন্টারে।
হানঝাউ অলিম্পিক স্পোর্টস সেন্টার স্টেডিয়াম, যা বিগ লোটাস নামেই পরিচিত, সে খানেই উদ্বোধন হল ১৯তম এশিয়ান গেমসের। প্রায় ৮০ হাজার দর্শক আসন এই স্টেডিয়ামে। প্যারেডে টিম ইন্ডিয়া আসতেই গ্যালারিতে বাড়তি উচ্ছ্বাস। ভারতের পতাকা বইলেন পুরুষ হকি দলের ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত সিং এবং বক্সার লভলিনা বরগোহাইন। মাসকট ডান্স, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্সের মাধ্যমে নানা তথ্য, বর্ণাঢ্য এক অনুষ্ঠানে শুরু হল এশিয়ান গেমস। ব্যাকগ্রাউন্ডে চিনের ঐতিহ্যবহনকারী বাদ্যযন্ত্রে বাজল ‘আওয়ার এশিয়া’ গান। প্রত্যেক দেশের পতাকা বাহকদের পোশাকে ‘অসমানথাস’ এর ছাপ। হানঝাউ শহরের বিশেষ ফুল। এর মাধ্যমে বন্ধুত্ব এবং গেমস অংশগ্রহণকারী সমস্ত অ্যাথলিটকে শুভেচ্ছা বার্তা দেওয়া হয়।
গত এশিয়ান গেমস অর্থাৎ ২০১৮ সালে জাকার্তায় ৭০টি পদক জিতেছিল ভারত। এ বার লক্ষ্য একশো পার। ভারতের প্রায় ৬৫০ অ্যাথলিট অংশ নিচ্ছেন এ বারের গেমসে। একশো পদক সে কারণেই অসম্ভব নয়। সব মিলিয়ে প্রায় ১২ হাজার অ্যাথলিট অংশ নেবেন। স্পোর্টসের মাধ্যমে ভালোবাসার বার্তা এশিয়ান গেমসের উদ্বোধনে।