বেঙ্গালুরু: শুটিং বিশ্বকাপে (ISSF World Cup) শোরগোল ফেলে দিয়েছে এক বাঙালি মেয়ে। মহিলাদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে ব্রোঞ্জ পেলেন তিলোত্তমা সেন (Tilottama Sen)। মিশরের রাজধানীতে ১৪ বছরের বঙ্গতনয়ার সাফল্যে জড়িয়ে থাকল এই রাজ্যও। তিলোত্তমা সেন বাঙালি হলেও পশ্চিমবঙ্গে থাকে না। বেঙ্গালুরুতেই তার বেড়ে ওঠা। পরিবারের সঙ্গে সেখানেই থাকে। বাবা সুজিত সেন বেঙ্গালুরুতেই এক বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরি করেন। কোভিডের সময় মেয়ের কার্টুনের নেশা ছাড়াতে শুটিংয়ে ভর্তি করে দিয়েছিলেন। মাত্র আড়াই বছরেই এল বিরাট সাফল্য। একেবারে চমকে দেওয়ার মতো কাহিনি তিলোত্তমার। মাত্র ৩ বছর বন্দুক হাতে শুটিং (Shooting) রেঞ্জে ট্রেনিং করেই বিশ্বমঞ্চে ব্রোঞ্জ পেয়ে হইচই ফেলে দিলেন বাঙালি মেয়ে। কায়রোতে শুটিং বিশ্বকাপে মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে ২৬২ পয়েন্ট সংগ্রহ করে তিলোত্তমা।
তিন বছর আগে কোভিডের সময় সারাক্ষণ ঘরে বসে টিভিতে একের পর এক কার্টুন দেখে যেত ১১ বছরের তিলোত্তমা। ছোট থেকেই ভলিবল আর ক্যারাটে শিখত। সারাক্ষণ ঘরে কার্টুন দেখে একঘেয়ে লাগত তিলোত্তমার। মেয়ের একঘেয়েমি কাটাতেই বাড়ির কাছে এক শুটিং অ্যাডাকেমিতে ভর্তি করে দেয় বাবা সুজিত সেন। আর সেখান থেকে স্বপ্নের উত্থান।
বেঙ্গালুরুতে শরণানন্দ্রের অ্যাকাডেমিতে নিজেকে ক্রমশ চৌখস করে তোলে তিলোত্তমা। কয়েক মাস আগে কর্ণাটকের রাজ্য শুটিং চ্যাম্পিয়নশিপে পারফেক্ট ৪০০/৪০০ স্কোর করেছিল। তিলোত্তমার কথায়, ‘প্রথমে তো রাইফেল হাতে নিয়ে আর জ্যাকেট পরে ওভাবে শুটিং করতে খুবই বিরক্ত লাগত। ধাতস্থ হতে আমার কিছুটা সময় লেগেছিল। তবে যখনই আয়ত্তে নিয়ে ফেলার পর আমি খেলাটাকে খুব উপভোগ করি।’
দু’বছর আগে জাতীয় স্তরে জুনিয়র পর্যায়ে তিনটে ব্রোঞ্জ আর একটা রুপো জিতেছিল। গত বছর জাতীয় স্তরের সিনিয়র পর্যায়ে ১০ মিটার এয়ার রাইফেলে ৬ নম্বরে শেষ করেছিল তিলোত্তমা। শুটিং শেখার জন্য অনেক টাকাও খরচ করেন সুজিত সেন। সে প্রসঙ্গে প্রবাসী বাঙালি বলেন, ‘২ লাখ ৩৫ হাজার টাকা খরচ করে বন্দুক কিনতে হয়েছিল। ৬৫ হাজার টাকা দিয়ে জ্যাকেট কিনে দিই। জমানো টাকা থেকে ওর এই সরঞ্জাম কিনে দিই। আমার বাইকে করে ওকে অ্যাকাডেমিতে নিয়ে যেতাম। ওর প্র্যাকটিস চলাকালীন সারাদিন ওখানেই ল্যাপটপে অফিসের কাজ করতাম। ট্রেনিং সেশন শেষের পর বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যেত।’