Hockey: ডিফেন্ডারদের বাঁচাতে ড্র্যাগ ফ্লিক তুলে দেওয়ার ভাবনা আন্তর্জাতিক হকি সংস্থার
ভারতীয় টিমের ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত সিং হকি দুনিয়ার অন্যতম সেরা ড্র্যাগ ফ্লিকার। ভারতের জয়ের সিংহভাগ দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন হরমনপ্রীত। পেনাল্টি কর্নার কাজে লাগিয়ে বিশ্বের সেরা টিমগুলোর বিরুদ্ধে ইদানীং বেশ কিছু সাফল্য এসেছে ভারতের। স্কোরার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর হরমনপ্রীত।
নয়াদিল্লি: ১৫০ কিমি গতিতে ধেয়ে আসা শট গায়ে লাগলে কতটা মারাত্মক হতে পারে? বলের আঘাতে ছোটোখাটো চোট তো হামেশাই লাগে। যে কোনও মুহূর্তে ঘটে যেতে পারে বিপজ্জনক ঘটনা। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে। এ কথা মাথায় রেখেই হকির একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় নিয়ম বদলের পথে হাঁটতে শুরু করেছে আন্তর্জাতিক হকি সংস্থা বা এফআইএইচ। আর তা যদি বদলে যায়, তা হলে হকির উত্তেজনা কি কমে যেতে পারে? যাঁরা ওই স্পেশালিস্ট প্লেয়ার তাঁদের ভবিষ্যৎ কী হবে? এ প্রশ্নও ঘোরাফেরা করছে। যদি সব ঠিক থাকে, তা হলে প্যারিস অলিম্পিকের (Paris Olympics) পর হয়তো হকি থেকে ড্র্যাগ ফ্লিক উঠে যেতে পারে। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের খবর অনুযায়ী, আপাতত এক বছর এ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালাবে এফআইএইচ। হকিতে (Hockey) ছেলে ও মেয়েদের সিনিয়র টিমের ছোটোখাটো টুর্নামেন্টে এই পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলবে। ফল যদি আশাব্যাঞ্জক হয়, তা হলে প্যারিস অলিম্পিকের পর হকিতে আর ড্র্যাগ ফ্লিক থাকবে না। বিস্তারিত জেনে নিন TV9Bangla Sports এর এই প্রতিবেদনে।
ভারতীয় টিমের ক্যাপ্টেন হরমনপ্রীত সিং হকি দুনিয়ার অন্যতম সেরা ড্র্যাগ ফ্লিকার। ভারতের জয়ের সিংহভাগ দায়িত্ব নিজের কাঁধেই তুলে নেন হরমনপ্রীত। পেনাল্টি কর্নার কাজে লাগিয়ে বিশ্বের সেরা টিমগুলোর বিরুদ্ধে ইদানীং বেশ কিছু সাফল্য এসেছে ভারতের। স্কোরার হিসেবে অত্যন্ত কার্যকর হরমনপ্রীত। এই ড্র্য়াগ ফ্লিক নিয়মই যদি পাল্টে যায়, হরমনপ্রীতের মতো অনেকেই কিন্তু কার্যকারিতা হারাবেন। গুরুত্ব হারানোর সঙ্গে সঙ্গে টিম থেকেও হয়তো জায়গা হারিয়ে ফেলবেন এঁরা। কারণ, হকিতে ড্র্যাগ ফ্লিকার সাধারণত ডিফেন্ডাররাই হন। যদি ড্র্যাগ ফ্লিক উঠে যায় তা হলে হরমনপ্রীত নিছক ডিফেন্ডার থেকে যাবেন।
কী এই ড্র্যাগ ফ্লিক? পেনাল্টি কর্নারের সময় পুশার যে বল পুশ করেন, ডি বক্সের ঠিক মাঝখানে দাঁড়িয়ে থাকা ড্র্যাগ ফ্লিকার সেখান থেকে চকিত শট নেন। ওই সময় গোলকিপারকে ঘিরে থাকেন বিপক্ষ টিমের হকি প্লেয়াররা। যাতে বল কোনও অবস্থায় গোলে না ঢোকে। যে কোনও ড্র্যাগ ফ্লিকের গড় গতি ১৫০ কিমি। তীব্র গতিতে ছুটে আসা বলের বিরুদ্ধে মোকাবিলা করা যে অত্যন্ত কঠিন কাজ, সন্দেহ নেই। এতেই শেষ নয়, ড্র্যাগ ফ্লিক নেওয়ার মুহূর্তে বিপক্ষ ডিফেন্ডাররা বল লক্ষ্য করে ছুটতে শুরু করেন। ফলে বলের বিরুদ্ধে নিজেদের বাঁচানোর পর্যাপ্ত সময়ও জোটে না। তাই চোটের পরিমাণ বাড়ে। ঠিক এই জায়গাতেই চিন্তিত এফআইএইচ। আন্তর্জাতিক হকি সংস্থার কর্তাদের যুক্তি, ড্র্যাগ ফ্লিকের মতো বিষয় হকি থেকে তুলে দিলে চোটের পরিমাণ যেমন কমবে, তেমনই খেলার গতি রুদ্ধ হবে না।
নতুন নিয়ম কী? যেমন পেনাল্টি কর্নার নেওয়া হচ্ছে তেমনই নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে ড্র্যাগ ফ্লিকার আর ডি বক্সে দাঁড়াবেন না। তিনি ডি বক্সের ৫ মিটার পিছনে ‘ডটেড বক্স’এর সামনে দাঁড়াবেন। শুধু তাই নয়, নতুন নিয়মে ড্র্যাগ ফ্লিকার সরাসরি শট নেবেন না। তিনি বল পাঠাবেন ডি বক্সের ভেতরে দাঁড়িয়ে থাকা ফরোয়ার্ডকে। তিনি নেবেন শট। পেনাল্টি কর্নারের সময় ডি বক্স ঘিরে দাঁড়িয়ে থাকা হকি প্লেয়ারদের আর বিপক্ষের বক্সে হামলে পড়ার সুযোগ থাকবে না। ফলে বলের আচমকা দিক বদলের সম্ভবনা কমবে। এতে ডিফেন্ডারদের যেমন দিগভ্রান্ত হয়ে ছুটতে হবে না, তেমনই হঠাৎ বলের গতিমুখও বদলাবে না।
এই নিয়ম কি কোনও ভাবে হকির পক্ষে ফলদায়ক হবে? বিশেষজ্ঞমহলের ধারণা, এতে হকির উত্তেজনা খানিকটা হলেও কমবে। এবং বিভিন্ন টিমের ড্র্যাগ ফ্লিকারদের ভবিষ্যৎও অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। অবশ্য বিশ্ব হকি নিয়ামক সংস্থা এই নিয়ম বদলের ক্ষেত্রে তাড়াহুড়ো করতে রাজি নয়।