কলকাতা: শরীরে নাকি তাঁর পুরুষ হরমোনের বাড়াবাড়ি। চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় যাকে বলা হয় হাইপেরান্ড্রোজেনিসম। শরীরে পুরুষ হরমোনের আধিক্য নিয়ে জন্মেছেন বলে ছেলে বলে দাগিয়ে দেওয়া হয়। শেষমুহূর্তে এশিয়ান গেমস ও কমনওয়েলথ গেমস থেকে বাদ পড়েন। তারপর আদালতে দীর্ঘ লড়াই ও জয়। গর্বের জুন মাসের (Pride Month) শেষলগ্নে আলোচনায় দেশের গর্ব স্প্রিন্টার দ্যুতি চাঁদ (Dutee Chand)। সমকামী সম্পর্কে শিলমোহর দেওয়া দেশের প্রথম অ্যাথলিট (Athlete)।
ওড়িশার এক অখ্যাত গ্রামের নিম্নবিত্ত পরিবারের মেয়েটি ঘোড়ার মতো দৌড়াত। শেষ প্রান্তের দড়িতে সবার আগে বুক ঠেকানোই লক্ষ্য। মেয়েসুলভ ভাবভঙ্গী কম। প্রতিযোগিতায় নামলেই পদক, ট্রফির ছড়াছড়ি। রাজ্য ও গ্রামের গর্ব সেই দ্যুতিই একদিন সবার চক্ষুশূল হয়ে উঠলেন। আপন মানুষরাই দূরে যেতে শুরু করল। মেয়ে হয়ে মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক! সংগ্রাম করে ক্রীড়া জগতে পরিচয় তৈরি করা অ্যাথলিটও লড়াই ছাড়েননি। শেষ পর্যন্ত জয় হয়েছে ভালোবাসার। সঙ্গিনীর সঙ্গে সম্পর্কের কথা প্রকাশ্যে এনেছেন দ্যুতি।
২০১৭ সালে সম্পর্ক জড়ান দ্যুতি। স্ট্রাগলের দিনগুলিতে ভুবনেশ্বরে চারজন মিলে একটি ঘরে ভাড়া থাকতেন। দ্যুতির সঙ্গিনী ও তাঁর ভাইও থাকত। দ্যুতির কথায়, “আমরা একে অপরের কষ্ট ভাগ করে নিতাম। ও আমাকে বুঝত। আমি ওকে। এভাবেই কাছে আসা।” বছর দুয়েক আগে সমকামিতার কথা খোলাখুলি স্বীকার করলেও নিরাপত্তার কারণে সঙ্গিনীর পরিচয় প্রকাশ্যে আনেননি । সমকামী সম্পর্ক ও এলজিবিটি অধিকার নিয়ে তখন থেকেই ভোকাল তিনি। বলেছেন, “প্রতিটি মানুষেরই নিজের মতো করে ভালোবাসার অধিকার থাকা উচিত।” এশিয়ান গেমসে জোড়া পদক জয়ী দ্যুতির লক্ষ্য অলিম্পিক পদক। তারই মাঝে সঙ্গিনীর সঙ্গে সাতপাকে বাঁধা পড়বেন কোনও একদিন।