কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
শুক্রবার জাতীয় টেবিল টেনিস (Table Tennis) কোচ সৌম্যদীপ রায়ের (Soumyadeep Roy) বিরুদ্ধে গড়াপেটার অভিযোগ এনেছিলেন মণিকা বাত্রা (Manika Batra)। যে অভিযোগে টিটি সার্কিটে অনেকে দুর্নীতির কালোছায়া দেখছেন। ২৪ ঘণ্টা পেরিয়ে গেলেও মণিকার অভিযোগের জবাব দেননি সৌম্যদীপ। ফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না তাঁকে। সৌম্যদীপের বাড়িতে গিয়ে দেখা গেল, সেখানে নেই তিনি। শনি সকালেই নাকি পরিবার নিয়ে বেরিয়ে গিয়েছেন। যাদবপুরের অ্যকাডেমিতে গিয়ে জানা গেল, তিনি নাকি দিল্লি চলে গিয়েছেন। মণিকার অভিযোগ এড়াতেই বোধহয় মিডিয়ার মুখোমুখি হতে চাইছেন না সৌম্যদীপ।
টোকিও অলিম্পিকে মেয়েদের সিঙ্গলসে মণিকার সঙ্গে প্রতিনিধিত্ব করেন সুতীর্থা মুখোপাধ্যায়ও। মণিকাকে হারিয়েই অলিম্পিকের টিকিট নিশ্চিত করেছিলেন সুতীর্থা। মণিকাকে ওই ম্যাচ ছাড়তে বাধ্য করেছিলেন সৌম্যদীপ, শোকজের উত্তরে জানিয়েছেন মণিকা। টোকিও অলিম্পিকের সময় কোচ সৌম্যদীপের সঙ্গে ঝামেলা তুঙ্গে ওঠে। তাঁর কাছে ট্রেনিং বা ম্যাচ নিয়ে পরামর্শ নিতে অস্বীকার করেন মণিকা। জাতীয় কোচ তখন গ্যালারিতে বসতেন। ওই ঘটনার জেরেই অলিম্পিকে খেলাকালীনই মণিকাকে শোকজ করে টিটিএফআই। গড়াপেটার চাঞ্চল্যকর অভিযোগে শোরগোল পড়ে যায় ভারতীয় ক্রীড়াদুনিয়ায়। সত্যিটা আসলে ঠিক কী, তা জানতে চাইছে টিটি মহলও।
টিটিমহলে কেউ কেউ মনে করছেন, ব্যক্তিগত কোচকে টোকিওতে না নিয়ে যেতে পারার জন্যই এমন আচরণ মণিকার। আবার কেউ বলছেন, নিজের ছাত্রীকে সুযোগ পাইয়ে দেওয়ার জন্যই এমন কাণ্ড করেছেন সৌম্যদীপ। জাতীয় টিটি ফেডারেশন এই ঘটনার জেরে নড়েচড়ে বসতে বাধ্য হয়েছে। চিঠি পাঠানো হয়েছে সৌম্যদীপকে তার উত্তর অবশ্য এখনও দেননি বাঙালি কোচ।
অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, ১৪ আগস্ট শো কজের উত্তর দিয়েছেন মণিকা। প্রায় ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও কেন টিটিএফআই এ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়নি? অনেক মহল থেকে বলা হচ্ছে, জাতীয় টিটি ফেডারেশনের কর্তারা পুরো ব্যপারটাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছেন। অলিম্পিকে দেশের প্রতিনিধিত্ব বাড়ানোর জন্য নাকি সুতীর্থাকে ম্যাচ ছেড়েছিলেন মণিকা। ওই ঘটনা অনেক কর্তারই জানা। আর তাই, মণিকা গড়াপেটার অভিযোগ আনলেও ফেডারেশন নীরব থাকার চেষ্টা করছে। সেই কারণে মণিকা বলেছেন, ‘আমি শোকজের উত্তর দেওয়া সত্ত্বেও কেন তা গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে না, এটাই আমার কাছে আশ্চর্য লাগছে। অবাক লাগছে এটা ভেবে যে, কেউ যখন কোনও গুরুতর অভিযোগ করছে, তা কোনও অবস্থাতেই খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হচ্ছে না।’
পাশাপাশি প্রশ্ন উঠছে স্বার্থের সংঘাত নিয়ে। জাতীয় কোচ হওয়া সত্ত্বেও কেন অ্যাকাডেমি চালান সৌম্যদীপ? এই ‘কনফ্লিক্ট অফ ইন্টারেস্ট’ শব্দবন্ধনী কিছুদিন আগে তোলপাড় করে দিয়েছিল ভারতীয় ক্রিকেট। যার ছায়া থেকে এখনও বেরিয়ে আসতে পারেনি সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের বিসিসিআই। এই স্বার্থের সংঘাত এড়াতে টিটিএফআই কি নতুন নিয়ম আনবে? ভারতীয় টিটিকে একগুচ্ছ প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে মণিকা বাত্রার গড়াপেটার অভিযোগ।
আরও পড়ুন: #BIG NEWS# TABLE TENNIS: এবার গড়াপেটায় ‘অভিযুক্ত’ বাংলার টিটি কোচ সৌম্যদীপ