কৌস্তভ গঙ্গোপাধ্যায়
একনাথ সোলকারকে মনে আছে? মালির ছেলের আকাশ ছোঁয়ার গল্প আজও ভারতীয় ক্রিকেটের রুপকথা।
ভারত (India) যদি টোকিও গেমসের (Tokyo Games) হকি থেকে পদক নিয়ে আসে, তাহলে এমনই এক ‘সোলকার’কে নিয়ে আলোচনা থাকবে। তিনি কে? হার্দিক সিং (Hardik Singh)। ছেলেবেলায় হকি মাঠের আনাচেকানাচে দেখা যেত তাঁকে। তখনও প্লেয়ার হননি। কিন্তু হকির নেশা ধরে গিয়েছিল। তাই হকির সঙ্গে মিশে যেতে বল বয় হয়ে গিয়েছিলেন। সেখান থেকেই জাতীয় দলের ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হার্দিক সিং।
গ্রাহাম রিডের দলের অন্যতম প্রধান অস্ত্র। দেশবাসীকে ভরসা দিচ্ছেন ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হার্দিক সিং। কোয়ার্টার ফাইনালে গ্রেট ব্রিটেনের বিরুদ্ধে দুরন্ত পারফর্ম করেন। একটা অ্যাসিস্টের পাশাপাশি, গোলও করেন হার্দিক। মাঠের বাইরে যতটা শান্ত, মাঠের ভিতরে ততটাই আক্রমণাত্মক। হার্দিকের আইডল সর্দার সিং। ২৩ বছরের হার্দিক বেলজিয়ামের বিরুদ্ধেও ভয়ডরহীন খেলতে চান। বিশ্বের অন্যতম কঠিন প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে নিজের সেরাটা উজাড় করে দিতে চান। একটা সময় জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। তবে জেদ আর পরিশ্রমই তাঁকে ফিরিয়ে আনে জাতীয় দলে। জাতীয় দল থেকে বাদ পড়ার সময় তাঁর পাশে ছিলেন কাকা যুগরাজ সিং। ভারতীয় দলের এই প্রাক্তন ড্র্যাগ ফ্লিকারই হার্দিকের মেন্টর।
২০১৩ সালে হকি ইন্ডিয়া লিগের প্রথম সংস্করণে বল বয়ের কাজ করতেন হার্দিক। ১৫ বছরের সেই হার্দিক নিজের গ্রাম ছেড়ে মোহালি হকি অ্যাকাডেমিতে চলে গিয়েছিলেন। তখনকার হকি তারকাদের কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল তাঁর। আর সেটাই জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। সর্দার সিংরা অনুপ্রেরণা হয়ে উঠেছিলেন ছোট্ট হার্দিকের। সাব-জুনিয়র দলে ডাক পেয়েই চমকে দেন এই পঞ্জাব তনয়। মেলে সিনিয়র জাতীয় দলের ডাকও। তবে বাদ পড়ার পর তাঁকে ঘুরে দাঁড়াতে অনেক সাহায্য করেছিলেন যুগরাজ সিং। মানসিক ভাবে উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। গত বছর কলকাতায় বেটন কাপ খেলতে এসেছিলেন ভারতীয় দলের এই ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার। হকি পরিবার থেকেই বেড়ে ওঠা হার্দিকের। ঠাকুর্দা প্রীতম সিং ভারতীয় সেনা দলের কোচ ছিলেন। মাত্র ৪ বছর বয়স থেকেই ঠাকুর্দার সঙ্গে জলন্ধরের খুসরোপুর গ্রামের মাঠে হকি খেলতে যেতেন হার্দিক। ২০১৭ সালে মারা যান হার্দিকের ঠাকুর্দা। তবে প্রীতম সিংয়ের সেই স্বপ্নকে এখনও বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছেন হার্দিক।
অলিম্পিকের আরও খবর পড়তে ক্লিক করুনঃ টোকিও অলিম্পিক ২০২০