যেভাবে আসা, সেভাবেই ফিরে যাওয়া! সম্প্রতি খুঁজে পাওয়া মমির স্থিতি দেখে ঠিক এমনটাই মনে করছেন বিজ্ঞানীরা। পেরুতে ইনকা সভ্যতার চেয়েও পুরনো এক সমাধিস্থলের সন্ধান মিলেছে। ভূগর্ভস্থ এই কবরখানা খুঁড়ে মমি উদ্ধার করতে বেশ কয়েক মাস সময় লেগেছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। প্রত্নতাত্ত্বিকরা জানাচ্ছেন, মমির বয়স কম করে ১০০০ বছর।
আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুসারে, পেরুতে ভূগর্ভস্থ প্রাচীন কবরখানায় দড়ি দিয়ে বাঁধা এক পুরুষ মমির সন্ধান পেয়েছেন প্রত্নতাত্ত্বিকরা। পরীক্ষা করতে গিয়ে দেখা যায়, অন্তত ১০০০ বসন্ত পার করেছে এই মমি। মৃত্যুর আগে ২৫-৩০ বছর বয়স ছিল পুরুষের, বয়স নির্ণায়ক পরীক্ষার পর জানা গিয়েছে এমনই তথ্য। বিজ্ঞানীদের বর্ণনা অনুযায়ী, দড়ি দিয়ে এমন ভঙ্গিমায় বাঁধা ছিল এই মমি, ঠিক যেন একটা ভ্রূণের মতোই। যেভাবে মায়ের জরায়ুতে অবস্থান করে ছোট্ট শিশু, ঠিক সেভাবেই মুখের সামনে দু’হাত রেখে ঘুমোচ্ছেন এই প্রাচীন ব্যক্তি!
সূত্রের খবর, পেরুর কাজামার্কিলা অঞ্চলে এই মমির বাসস্থান। মমি উদ্ধারে হাত লাগিয়েছিলেন মেয়র দি সান মার্কোস জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (UNMSM)-এর গবেষকরা। দেহের আশেপাশে পড়েছিল একটি কুকুর ও একটি গিনিপিগের দেহাবশেষ। এমনকি, কিছু শাকসবজির অংশও পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ভূতাত্বিকদের মতে, “মমিটিকে বেশ ভাল অবস্থাতেই পাওয়া গিয়েছে। সমাধিস্থ করার পরেও তাঁর প্রিয়জনরা দেখতে আসতেন কাছের মানুষকে।”
সম্প্রতি, সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এই মমির ছবি। যদিও ২০২১ সালের অক্টোবর নাগাদ উদ্ধার হয়েছিল এই মমি। প্রায় ৮০০-১২০০ বছর আগে পেরুর লিমা উপকূলবর্তী অঞ্চলে কী বিচিত্র উপায়ে মমি প্রস্তুত করা হত, বরাবরাই সে বিষয়ে বিজ্ঞানীদের অপরিসীম আগ্রহ। মিশরীয় মমি ও পেরুর মমির মধ্যে আকাশপাতাল ফারাক না থাকলেও, ভেষজ উপাদান বা ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে যে উপদানগত পার্থক্য যথেষ্টই চোখে পড়ে। আপাতত তাই খুঁজে বের করার আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন রসায়নবিদরা।