পরিবেশ সচেতনতার লক্ষ্যে অনেকদিন থেকেই নানা ধরনের পরিকল্পনানিয়ে চলেছে ভারত সরকার। এর মধ্যে বেশ কিছু আশানুরূপ হয়েছে, যদিও অধিকাংশই করা সম্ভব হয়ে ওঠেনি। তবে, অতিরিক্ত কার্বন কণা অপসারণ কমানোর লক্ষ্যে এবার একটা দারুণ পদক্ষেপ নেওয়ার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে সরকারের তরফ থেকে। ২০৭০ সালের মধ্যে নির্গমন-শূন্য দেশের লক্ষ্যে এগনোর শপথ নিয়েছে ভারত। আর সেটা বাস্তবায়িত করার অংশ হিসাবে এমন পদক্ষেপ কেন্দ্রের।
আজকের দিনে ইভি বা ইলেকট্রিক ভেহিকেল পরিবেশ সুরক্ষার একটা দারুণ ব্যবস্থা। এই ইভি বা ইলেকট্রিক ভেহিকেলের ওপর নির্ভরশীলতাও দিনের পর দিন বেড়ে চলেছে। এই অবস্থায় ভারত সরকারও এবার ইলেকট্রিক ভেহিকেলের গুরুত্বপূর্ণতাকে এগিয়ে রাখল। আগামী ৩ বছরের মধ্যে ইভিতে সুইচ করতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। আগামীদিনে কেন্দ্রীয় সরকারি ফিল্ড অফিসে নতুন গাড়ি কেনার সময়ে শুধু ইলেকট্রিকই কেনা হতে পারে। তবে পুরোটাই পরিকল্পনার স্তরে আছে। ওয়াকিবহাল মহল সূত্রে মিলেছে এমনটাই খবর।
পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রী রাজকুমার সিং এর আগে সমস্ত কেন্দ্রীয় সরকারের মন্ত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের তাঁদের সরকারি গাড়ির কনভয়কে ইভিতে রূপারন্তরিত করার অনুরোধ করেছিলেন। এদিকে যে কোনও কেন্দ্র বা রাজ্যের মন্ত্রী, সাংসদ, বিধায়ক থেকে উচ্চপদস্থ আমলা, ভারতে সকলেই প্রায় বিশাল কনভয় নিয়ে যাতায়াত করেন। প্রধানমন্ত্রীর কনভয়তে ১০ থেকে ১২ টি বিলাসবহুল বুলেটপ্রুফ এসইউভি থাকে। এগুলি লিটারে ৪ থেকে ৫ কিলোমিটার মাইলেজ দেয়। কোনও কোনও রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীও ১৫ থেকে ২০ টি গাড়ির কনভয় নিয়ে যাতায়াত করেন। ফলে এক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ যে প্রয়োজন, তা নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশ নেই।
সরকারি পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২৫ সাল নাগাদ জনসাধারণের আরও কিছুটা নাগালের কাছে আসবে ইলেকট্রিক গাড়ি। তৈরি হয়ে যাবে আরও চার্জিং, সার্ভিসিং পরিকাঠামোও। সেই সঙ্গে অনেকের কাছেই ইভি কেনার সুযোগ আর সুবিধা হবে বিস্তর। আর একবার যদি সরকারি যানবাহন ইলেকট্রিক হওয়া শুরু করে তবে বলাই বাহুল্য, সাধারণের কাছেও সেই ধরনের যানবাহন বহাল করা অনেক সুবিধাজনক হয়ে উঠবে। বিশেষ করে দিল্লির মতো জায়গায় ইভির ব্যবহার অত্যন্ত আবশ্যক বলেই মনে করা হচ্ছে।
সবকিছু পরিকল্পনা মতো এগোলে, ২০৭০-এর লক্ষ্যে ভারত পৌঁছতে পারবে বলেই মনে করা হচ্ছে। যদি ইভির উৎপাদনে বেসরকারি সংস্থার অংশগ্রহণ বাড়তে থাকে তাহলে সেক্ষেত্রে খুব তাড়াতাড়িই এই লক্ষ্যে পৌঁছনো যাবে। যদিও, এই সব কিছুর জন্যই সরকার আর প্রাইভেট সেক্টরগুলির একত্রে বিনিয়োগ করা অত্যন্ত জরুরি।