বলবন্ত সিং নামের এক ব্যক্তি Ola Electric-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন সোশ্যাল মিডিয়ায়। Ola S1 Pro ইলেকট্রিক স্কুটার ব্যবহার করতে গিয়েই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছিলেন বলবন্তের পুত্র। আর সেই কারণেই তিনি এই Electric Scooter প্রস্তুতকারী সংস্থাটির বিরুদ্ধে ট্যুইট করে একহাত নিয়েছিলেন। তিনি আরও অভিযোগ করেছিলেন যে, ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারে একাধিক ত্রুটি রয়েছে। এদিকে সেই অভিযোগের ভিত্তিতে ত্রুটির সমাধানসূত্র বের করা বা ক্ষতিগ্রস্ত সেই যুবকের জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া তো দুরস্ত, বরং 24 ঘণ্টার মধ্যে সেই সব নেগেটিভ পোস্ট সোশ্যাল মিডিয়া থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য রীতিমতো শাসানি দিল ভাবিশ আগরওয়ালের Ola Electric। শুধু তাই নয়। বলবন্ত সিংকে একপ্রকার হুমকি দিয়েই সংস্থাটির তরফ থেকে বলা হয়েছে, “কখনও যেন সোশ্যাল মিডিয়ায় ওলা ইলেকট্রিকের বিরুদ্ধে মানহানিকর পোস্ট না করা হয়।” বিষয়টি নিয়ে ওলা ইলেকট্রিক তখনই নড়েচড়ে বসে, যখন সংস্থার কাছে একটি আইনি নোটিস পাঠান বলবন্ত সিং।
My notice to @OlaElectric to immediately take down my telemetry data which they have published in public without my consent violating privacy laws & the graphs whose authenticity has not been verified by me/ law agencies. Failure to do so, I will take legal action against @bhash pic.twitter.com/9r3yF6zYOx
— BALWANT SINGH (@BALWANT1962) April 23, 2022
গত এপ্রিল মাসে গুয়াহাটিতে Ola S1 Pro ইলেকট্রিক স্কুটারটি চালাতে গিয়ে দুর্ঘটনার সম্মুখীন হন বলবন্ত সিংয়ের পুত্র। তিনি অভিযোগ করেন যে, ওলার ইলেকট্রিক স্কুটার ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কারণেই তাঁর পুত্রের সঙ্গে এমন কাণ্ড ঘটে। জানান, রিজেনারেটিভ ব্রেকিংয়ের ত্রুটির কারণে একটি স্পিড ব্রেকারের সামনে হুট করেই স্কুটারটি স্লো হওয়ার পরিবর্তে স্পডি বেড়ে যায় এবং তার ফলেই দুর্ঘটনাটি ঘটে।
এদিকে Ola Electric বলবন্ত সিংয়ের এই দাবিকে নস্যাৎ করে দিয়ে জানায়, স্কুটারটির ওভারস্পিডিংয়ের ফলেই দুর্ঘটনা ঘটে। শুধু তাই নয়। এই তত্ত্বের সমর্থনে সংস্থাটি বলবন্ত সিংয়ের পুত্রের টেলিমেট্রি ডেটাও সোশ্যাল মিডিয়ায় ফাঁস করে দেয়। আর তাতেই গুয়াহাটির ওই ব্যক্তি রেগে বোম হয়ে যান! গ্রাহকের টেলিমেট্রির মতো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রকাশ্যে নিয়ে আসার জন্য Ola Electric-এর কাছে আইনি নোটিস পাঠিয়ে দেন তিনি, যার একটি স্ক্রিনশটও তিনি ট্যুইটারে শেয়ার করেন।
তবে Ola-র Electric Scooter-এর প্রযুক্তি নিয়ে বলবন্ত সিংই যে প্রথম অভিযোগ করলেন, এমনটা নয়। গত মাসে তামিলনাড়ুর এক Ola S1 Pro চালকের স্কুটারটিতে আগুন ধরে গিয়েছিল। সে সময় জানা গিয়েছিল, ওই বিদ্যুচ্চালিত স্কুটারটির অপর্যাপ্ত কর্মক্ষমতা এবং অনিয়মিত পরিসরের কারণেই আগুন ধরার কাণ্ডটি ঘটেছিল। শুধু তামিলনাড়ুর ঘটনাই নয়। বিগত কয়েক সপ্তাহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে Ola-র ইলেকট্রিক স্কুটারগুলিতে আগুন ধরার ঘটনা সামনে এসেছিল। আর সফ্টওয়্যার ও হার্ডওয়্যার সংক্রান্ত সমস্যা তো লেগেই রয়েছে।
এদিকে আবার গত 12 মে যোধপুরের এক ব্যক্তি Ola S1 Pro স্কুটারের সফ্টওয়্যার সংক্রান্ত সমস্যার কথা জানিয়েছিলেন। তিনি অভিযোগ করেছিলেন যে, বাড়ির গ্যারাজে তাঁর 65 বছরের বাবা ওলা এস১ প্রো স্কুটারটি পার্ক করছিলেন। আর সেই সময়েই তিনি দুর্ঘটনার কবলে পড়েন এবং তার জন্য বয়স্ক ওই ব্যক্তিটি মাথায় গুরুতর আঘাতও পান। তিনি অভিযোগ করেন, ওলার ইলেকট্রিক স্কুটারে এমনই বাগ রয়েছে, যার কারণে গাড়িটি রিভার্স মোডে ফুল স্পিডে চলছিল।
পল্লব মহেশ্বরী তাঁর লিঙ্কডইন পোস্টে লিখেছিলেন, “আমার বাবা ওলা ইলেকট্রিক স্কুটারটি বাইরে থেকে বাড়ির ভিতরে পার্ক করছিলেন। সেই সময় স্কুটারটি এমনই অস্বাভাবিক আচরণ করে যে, দেওয়ালে বাবার মাথা ঠুকে যায় এবং বাঁ হাতটা ভেঙে যায়। বাবার মাথায় ১০টা সেলাই পড়েছে এবং হাতে দুটো প্লেট বসাতে হয়েছে।” সরাসরি Ola Electric-এর CEO ভাবিশ আগরওয়ালকে ট্যাগ করে এই পোস্টটি করেছিলেন পল্লব মহেশ্বরী।
লঞ্চের পর থেকে ডেলিভারি ইস্তক ইলেকট্রিক স্কুটারগুলিকে নিয়ে বারবার বিতর্কে নাম জড়িয়েছে Ola Electric-এর। বিতর্কের জল এত দূর গড়ায় যে, ত্রুটিপূর্ণ হওয়ার কারণে খুব সম্প্রতি বাজার থেকে 1,441টি ওলা এস১ প্রো ইলেকট্রিক স্কুটার তুলে নেয় সংস্থাটি। মূলত ইনস্পেকশন এবং ব্যাটারি, থার্মাল এবং সেফটি সিস্টেমের ডায়াগনস্টিক টেস্টের কারণেই এমনটা করা হয়।