Avatar Motion Tech: বিরল রোগ নির্ণয়ের কাজে ‘অবতার’ ছবির মোশন টেকনোলজি, ডাক্তারদের থেকে 6 মাস এগিয়ে

Track Rare Diseases: 'Avatar' ছবিতে ব্যবহৃত মোশন টেকনোলজি-কে কাজে লাগিয়ে বিরল রোগ সনাক্ত করলেন গবেষকরা। এই প্রযুক্তি এতটাই অ্যাডভান্সড যে, গবেষকরা দাবি করছেন তা ডাক্তারদের থেকেও ছয় মাস এগিয়ে।

Avatar Motion Tech: বিরল রোগ নির্ণয়ের কাজে 'অবতার' ছবির মোশন টেকনোলজি, ডাক্তারদের থেকে 6 মাস এগিয়ে
ডাক্তারদের থেকেও অন্তত ছয় মাস এগিয়ে এক প্রযুক্তি, রোগ নির্ণায়কে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 24, 2023 | 2:30 PM

Motion AI Tech Avatar: ‘অবতার’ ছবিটা নিশ্চয়ই দেখেছেন? বড় স্ক্রিনে দেখতে-দেখতে এক অন্য দুনিয়ায় চলে গিয়েছিলেন নিশ্চয়? আধুনিকের থেকেও অত্যাধুনিক প্রযুক্তির ডানায় ভর করে সেই দুনিয়া শুধু চলে যাওয়াই নয়, রীতিমতো উপভোগও করেছেন। তাই তো? এই ছবিতে ব্যবহৃত প্রযুক্তিও আপনাকে ভাবিয়েছে নিশ্চয়? এখন সেই ‘অবতার’ ছবিতে ব্যবহৃত মোশন টেকনোলজি-কে কাজে লাগিয়ে বিরল রোগ সনাক্ত করলেন গবেষকরা। গত রবিবার সংবাদমাধ্যম বিবিসি-র একটি রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, কোনও রোগের সূত্রপাত কোথা থেকে হচ্ছে, ‘অবতার’-এর মোশন ক্যাপচার আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে গবেষকরা তা ট্র্যাক করতে পারছেন।

ওই রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে, ‘অবতার’ ছবিতে যে সিস্টেমটি ব্যবহার করা হয়েছে তা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্সের সাহায্য নিয়ে মানুষের বডি মুভমেন্ট নিয়ে বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু তাই নয়। তার থেকেও কয়েক ধাপ এগিয়ে এই প্রযুক্তি ডাক্তারদের তুলনায় দ্বিগুণ দ্রুত বেগে রোগ নির্ণয় করতে পারে। এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে রোগ সনাক্তকরণ করে দেখেছে যে দল, সেই দলেরই একজন ডক্টর ভ্যালেরিয়া রিকোট্টি ফিল্মের প্রযুক্তি কীভাবে চিকিৎসা ক্ষেত্রেও কাজে লেগে গেল, তা যেন বিশ্বাসই করতে পারছেন না। বললেন, “ফলাফল দেখে আমরা হতবাক হয়ে গিয়েছিলাম।”

“যে কোনও রোগ নির্ণয় এবং তার উপরে ভিত্তি করে ওষুধ তৈরি করতে ব্যাপক ভাবে কার্যকর হতে পারে এই প্রযুক্তি”, যোগ করলেন ডক্টর রিকোট্টি। গবেষকরা জানিয়েছেন, বিগত 10 বছর ধরে এই প্রযুক্তিটি ডেভেলপমেন্টের পর্যায়ে রয়েছে। দুটি ভিন্ন-ভিন্ন স্টাডিতে ফ্রায়েডরেইখস অ্যাটাক্সিয়া (Friedreich’s Ataxia বা FA) এবং ডুচেন মাস্কুলার ডিস্ট্রফি (Duchenne Muscular Dystrophy বা DMD) আক্রান্ত রোগীদের উপর এই প্রযুক্তিটি টেস্ট করে দেখা হয়েছিল।

অভাবনীয় এই চিন্তাভাবনা যাঁর মস্কিষ্কপ্রসূত, তিনি ইম্পিরিয়াল কলেজের প্রফেসর আলদো ফয়জ়ল। তাঁর কথায়, “প্রথাগত ডায়গনস্টিক পদ্ধতির তুলনায় এই প্রযুক্তির অনেক সুবিধা রয়েছে।” সুবিধার দিকগুলি ধরিয়ে দিয়ে তিনি উল্লেখ করলেন, “মানুষ নিজেও বুঝতে পারেন না তাঁর শরীরে অনবরত এমন কিছু মুভমেন্ট হয়ে চলেছে, সেই সব সূক্ষ্ম মুভমেন্ট খুব সহজেই ধরতে পারে আমাদের এই প্রযুক্তি। ক্লিনিকাল ট্রায়ালগুলিকে রূপান্তর করার পাশাপাশি রোগীদের রোগ নির্ণয় এবং পর্যবেক্ষণ আরও নিবিড় করার ক্ষমতাও রয়েছে এই অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে।”

‘অবতার’-এর এই টেক যে কেবলই রোগ নির্ণয় এবং মানুষের মুভমেন্ট সনাক্তকরণেই সীমাবদ্ধ, বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করতে চাইছেন না। তাঁদের দাবি, ড্রাগ ট্রায়ালেও এই প্রযুক্তি গতি আনতে পারে, যার মাধ্যমে আখেরে ড্রাগ প্রস্তুতের খরচটা কমানো যায়। লন্ডন ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এর মেডিক্যাল রিসার্চ কাউন্সিলের প্রফেসর রিচার্ড ফেস্টেইনস্টেন বলছেন, “আমাদের এই গবেষণার প্রধান সুবিধাভোগী হতে চলেছেন রোগীরা। তার কারণ, এই প্রযুক্তি দ্রুত নতুন চিকিৎসাও নিয়ে আসবে বলে আমাদের ধারণা।”

এখন অ্যাপল স্মার্টওয়াচ কীভাবে রোগ নির্ণায়ক গ্যাজেটের ভূমিকা পালন করছে, নিশ্চয়ই খেয়াল রেখেছেন? ‘অবতার’ ছবির এহেন প্রযুক্তির ভবিষ্যদ্বাণীমূলক ক্ষমতার কারণেই সিস্টেমটি উন্নত পর্যবেক্ষণে সক্ষম। ইম্পেরিয়াল কলেজের গবেষকরা যখন FA আক্রান্ত রোগীদের উপর এটি পরীক্ষা করেছিলেন, তখন তাঁরা দেখতে পান এটি এক বছরের মধ্যেই সেই রোগের আরও খারাপ হওয়ার পূর্বাভাসও দিতে পারে। এদিকে গ্রেট অরমন্ড স্ট্রিট টিমের মেম্বাররা আরও একটি পরীক্ষা করে দেখেছেন। DMD আক্রান্ত 21 জনের উপর এই প্রযুক্তির ব্যবহার করে দেখা গিয়েছে, সিস্টেমটি সঠিকভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করতে সক্ষম হয়েছিল। 6 মাসের মধ্যে সেই 21 জনের মুভমেন্ট কীভাবে প্রভাবিত হবে, তা একজন ডাক্তার আগেভাগে বুঝতে পারলে ট্রিটমেন্টে আরও সুবিধা হতো— ঠিক সেই ভবিষ্যদ্বাণীই করে দেখিয়েছিল ‘অবতার’ ছবিতে ব্যবহৃত এই মোশন টেকনোলজি।

FA এবং DMD-র মতো রোগের যেখানে নিরাময় সম্ভব নয়, ঠিক সেখানেই এই দুই বিরল রোগে আক্রান্ত রোগীদের যত্নের জন্য প্রাথমিক রোগ নির্ণয়াকের ভূমিকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তার থেকেও বড় কথা হল, যে কোনও জেনেটিক রোগে আক্রান্তরা প্রাথমিক রোগ নির্ণয়ের মাধ্যমেই চিকিৎসা পান।