Dolphins Pee: প্রস্রাব ও বন্ধুত্বের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, ‘ফ্রেন্ডস’ এপিসোডের তত্ত্বটাই অক্ষরে-অক্ষরে মেলালেন বিজ্ঞানীরা

TV9 Bangla Digital | Edited By: সায়ন্তন মুখোপাধ্যায়

May 29, 2022 | 7:03 PM

Friendship And Pee: কে কাছের, আর কে দূরের - তা বুঝতে ডলফিনদের একমাত্র সূত্র হলে প্রস্রাব। সম্প্রতি বিজ্ঞানীরা এমনই তথ্য পেয়েছেন। ঠিক কী দাবি করছেন তাঁরা জেনে নিন।

Dolphins Pee: প্রস্রাব ও বন্ধুত্বের মধ্যে নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে, ফ্রেন্ডস এপিসোডের তত্ত্বটাই অক্ষরে-অক্ষরে মেলালেন বিজ্ঞানীরা
বন্ধুত্ব ও প্রস্রাব - ফ্রেন্ডস সিটকমের সেই জনপ্রিয় দৃশ্য।

Follow Us

আমেরিকান সিটকম ‘ফ্রেন্ডস’ নিশ্চয়ই দেখেছেন? 1994 সালের জনপ্রিয় এই সিটকমের প্রতিটা সিজ়ন যদি আপনি দেখেন, তাহলে আইকনিক একটা এপিসোড আপনার নিশ্চয়ই মনে থাকবে। একটা দৃশ্যে দেখা যায়, জোয়ি মূত্রত্যাগ করছে মনিকার পায়ে। কারণ, তাঁর পা আঁকড়ে ধরেছিল একটি জেলিফিশ। কিন্তু তা বলে জোয়ি এভাবে প্রস্রাব করে দেবেন? উত্তরে তিনি বলেছিলেন যে, প্রস্রাবই হল সত্যিকারের বন্ধুত্বের চিহ্ন। এই যুক্তি জঘন্য বা ঘৃণ্য মনে হতে পারে আপনার। হেঁয়ালিও মনে হতে পারে। কিন্তু যখন বন্ধুত্বের প্রসঙ্গ আসে, প্রস্রাব (Urine) আসলে ডলফিনদের (Dolphins) বন্ধুত্ব (Friendship) সত্যিই শক্তিশালী করে তোলে।

অস্টিন স্টেট ইউনিভার্সিটি এবং ইউনিভার্সিটি অফ সেন্ট অ্যান্ড্রুজ়-এর গবেষকদের দ্বারা পরিচালিত সাম্প্রতিক গবেষণা অনুসারে বোতলনোজ় ডলফিনরা তাদের প্রস্রাবের স্বাদের উপরে ভিত্তি করে বন্ধুদের চিনতে পারে। তাঁরা দাবি করেছেন, একটি উন্মুক্ত সমুদ্রে প্রাণীটি চলে যাওয়ার পরেও কিছু সময়ের জন্য প্রস্রাবের প্লামগুলি অব্যাহত থাকে। এটি আসলে ডলফিনের জন্য একটি সংকেত হিসেবে কাজ করে। এর মাধ্যমে একটা ডলফিন তার বন্ধুদের জানায় যে, তারা বন্ধুর থেকে বেশি দূরে যায়নি।

পরীক্ষা করার জন্য গবেষকরা পরিচিত এবং অপরিচিত মোট আটটি ডলফিন ও তাদের প্রস্রাবের নমুনা উপস্থাপন করেছিল। গবেষকরা দেখেছেন যে, প্রস্রাবের নমুনা নিয়ে ডলফিনরা তিনগুণ বেশি সময় ব্যয় করেছে যাকে তারা জানে তাকে চিনতে। আর ঠিক সেখানেই যাদের তারা চেনে না, তাদের সনাক্তও করতে চায়নি ডলফিনরা।

এদিকে আবার ডলফিনদের যৌনাঙ্গ পরিদর্শনেও অংশগ্রহণ করতে দেখা যায়, যেখানে তারা তাদের চোয়াল ব্যবহার করে অন্য ডলফিনের যৌনাঙ্গে স্পর্শ করে। আসলে এটি একটি সাধারণ সামাজিক মিথস্ক্রিয়া অভ্যাস, যার মাধ্যমে তারা অন্যান্য ডলফিনের প্রস্রাবের স্বাদও চেখে নিয়ে তাদের চিনতে পারে। যদিও ডলফিনরা গন্ধ শুঁকতে পারে না। গবেষকরা উল্লেখ করেছেন, গন্ধ নেওয়া নয়, বরং স্বাদের মাধ্যমেই বন্ধুর প্রস্রাব এবং অপরিচিতদের মধ্যে পার্থক্যটা সঠিক ভাবে ধরতে পারে ডলফিনরা।

এদিকে অন্য আর একটি পরীক্ষায় গবেষক দলটি জলের নীচে স্পিকারের মাধ্যমে বাজানো হুইসেলের রেকর্ডিংয়ের সঙ্গে প্রস্রাবের নমুনা যোগ করে দেখেছেন। কখনও দেখা গিয়েছে, শব্দটি একই ডলফিনের থেকে প্রতিধ্বনিত হয়েছে, যা আসলে প্রস্রাবের নমুনা থেকেই সনাক্ত করা গিয়েছে। কখনও আবার তা মেলেনি। গবেষকরা দেখেছেন যে, ডলফিনগুলি স্পিকারের সামনে দীর্ঘক্ষণ বসেছিল। কারণ ওই ভয়েসের সঙ্গে প্রস্রাবের নমুনা মিলে যাচ্ছিল। আর এখান থেকেই প্রমাণিত হয়ে যায় যে, ডলফিনরা কীভাবে পরিচিত ও অপরিচিতদের আলাদা করতে পারে।

গবেষণাপত্রের মূল লেখক টেক্সাসের স্টিফেন এফ. অস্টিন স্টেট ইউনিভার্সিটির প্রফেসর সংবাদমাধ্যম এএফপি-র কাছে দাবি করেছেন, “প্রতিটা দিন এমন হয় না যে, বিজ্ঞানীরা অ-মানব কণ্ঠতন্ত্রে বিশেষ্য-র মতো সংকেত ব্যবহারের প্রমাণ খুঁজে পান। এটি বেশ উত্তেজনাপূর্ণ।” তিনি আরও যোগ করে বলছেন, “ডলফিনের সমৃদ্ধ সামাজিক জগৎ রয়েছে এবং এটি তাদের বন্ধু ও শত্রুদের সহজেই চিনতে সাহায্য করতে পারে।”

গবেষকরা আরও যোগ করে বলেছেন যে, লিপিড সম্ভবত ডলফিনের নির্দিষ্ট রাসায়নিক স্বাক্ষর চিনতে সক্ষম হওয়ার জন্য দায়ী। তাঁরা আশা করেন যে, এর উপর ভিত্তি করে ডলফিনরা প্রজনন অবস্থার মতো প্রস্রাব থেকে অন্যান্য ধরনের তথ্যও বের করতে পারে বা একে অপরের আচরণকে প্রভাবিত করতে ফেরোমোন ব্যবহার করতে পারে।

Next Article