Homo Sapiens New Study: আধুনিক যুগে অনেকেই গেড়ি-গুগলি খান। তবে তা একেবারে মাংসের মতো কষিয়ে। তবে না খাওয়ার মানুষই বেশি। তবে বেশ দামও আছে বাজারে। আবার অনেকে এই রেসিপিতে নাক কোঁচকানও বটে। আজকালকার বিরিয়ানি, পিৎজা-বার্গার থেকে বাড়িতে মায়ের হাতের মুসুর ডাল কিংবা মুড়োঘণ্ট, এসব ছেড়ে খামোখা শামুকের মতো ওই ক্ষুদ্র প্রাণী খেতে যাবেনই বা কেন! কিন্তু এই গেড়ি-গুগলি কিংবা শামুক কিন্তু আজ থেকেই মানুষের পাতে পড়ছে না। এই সবকিছুই আমাদের পূর্বপুরুষরা খেত আজ থেকে 1.70 লক্ষ বছর আগেও। অর্থাৎ আদিম মানুষ, যাদের কাছে না ছিল শাকসবজি, আর না ছিল শিকার করার ক্ষমতা। আদিমকাল থেকেই মানুষ ছিল গুহাবাসী। গুহা থেকে বেরিয়ে এসেই প্রথমে তারা শিকার করা শেখেনি। তারপরে বিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে শিকার করা, আগুন জ্বালানো সব কিছুই শিখেছে। প্রথমদিকে তারা আগুনের ব্যবহার জানত না বলে কাঁচা মাংস খেত। শিকার করে পাওয়া পশুর মাংস তারা সকলের মধ্যে ভাগ করেও নিত। পরবর্তীকালে আগুনের ব্যবহার শিখে তারা মাংস পুড়িয়ে খাওয়ার অভ্যাস করে। তার তারপরে ধীরে ধীরে তারা নিকটবর্তী বনজঙ্গল থেকে বিভিন্ন ধরনের ফলমূল, শাকসবজি, পাখির ডিম প্রভৃতি সংগ্রহ করত খাওয়ার জন্য। কিন্তু এসব তথ্য অনেকেরই জানা। যা জানা নেই তা হল, গবেষণায় উঠে আসা নতুন তথ্য। কী সেই তথ্য? বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, আজ থেকে 1.70 লক্ষ বছর আগে মানুষ শামুক খেত। তাও আবার রোস্ট করে। অবাক হচ্ছেন? সেটাই স্বাভাবিক।
গবেষণায় কী বলা হয়েছে?
সম্প্রতি, Quaternary Science Reviews-এ প্রকাশিত গবেষণা অনুসারে , আদিম মানুষ মাটি থেকে বা যে কোনও ভেজা জায়গা থেকে শামুক ধরে খেত। এখনও পর্যন্ত জানা যাচ্ছে, 49,000 বছর আগে আফ্রিকাতে আর 36,000 বছর আগে ইউরোপে আদিম মানুষরা শামুক খেয়েছে। বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন কয়েক লক্ষ বছর আগে, দক্ষিণ আফ্রিকায় বসবাসকারী মানুষ এই স্বাদহীন পুষ্টিকর শামুক রোস্ট করে খেত। এই শামুকগুলি তখন একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের হাতের তালুর মতোই বড় হতো। এই শামুক থেকেই তারা প্রচুর পরিমাণে প্রটিন পেত।
কীভাবে শুরু হয় এই গবেষণা?
ব্রাসেলসের রয়্যাল ইনস্টিটিউট ফর কালচারাল হেরিটেজের রসায়নবিদ মেরিন ওয়াজসিজাক এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সীমান্তে পাওয়া গুহাটি খনন করা হলে সেখানে শামুকের খোলসের টুকরো পাওয়া যায়। আর সেই টুকরোকে কেন্দ্র করেই শুরু হয় গবেষণা। গবেষকরা জানান, এই খাবারটি 170,000 থেকে 70,000 বছর আগে খুব জনপ্রিয় ছিল। তাই পলি স্তরে শামুকের খোলসের এত বড় টুকরো পাওয়া গিয়েছে। তারা গবেষণার পর জানাচ্ছেন, শিকারীরা আফ্রিকার এই বৃহৎ শামুকগুলিকে পোড়াতো। অর্থাৎ রোস্ট করে খেয়ে ফেলত।