আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মঙ্গলগ্রহে (Mars) উড়বে নাসার (NASA) পাঠানো (Mars Helicopter) মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে অভিযান হলে কোন কোন জায়গায় মহাকাশযান অবতরণ করানো যেতে পারে, আপাতত সেই বিষয়েই পর্যবেক্ষণ চালাবে মার্কিন স্পেস এজেন্সির মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। সম্প্রতি এমনটাই জানিয়েছেন বৈজ্ঞানিকরা। পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহে যে কোনও হেলিকপ্টার উড়তে পারে, বছর খানেক আগেই এ ব্যাপারে কারও ধারণাই ছিল না। তবে অসাধ্যসাধন করেছে নাসা। মঙ্গলের বুকে Ingenuity হেলিকপ্টার পাঠিয়ে তারা প্রমাণ করে দিয়েছে যে পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহের হেলিকপ্টারের উড়ান সম্ভব। লালগ্রহের অত্যন্ত পাতলা বায়ুমণ্ডলে ইতিমধ্যেই ২১টি উড়ান সম্পন্ন করে ফেলেছে এই মার্স হেলিকপ্টার। হিমশীতল রাত, রুক্ষ পাথুরে প্রকৃতি— সব মিলিয়ে মঙ্গলের বুকে Ingenuity- র টিকে থাকা মোটেই সহজ কাজ ছিল না। তবে সফল হয়েছেন নাসার বিজ্ঞানীরা। পারসিভের্যান্স রোভারে করে মঙ্গলে পাঠানো Ingenuity হেলিকপ্টার শুধু লালগ্রহের বুকে টিকেই থাকেনি, সেই সঙ্গে সফলভাবে উড়ানও সম্পন্ন করেছে।
জানা গিয়েছে, নাসা আগামী সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity- র উড়ান চালু রাখবেন মঙ্গলগ্রহে। সেখানে পারসিভের্যান্স রোভারকে সাহায্য করবে এই কপ্টার। মঙ্গলগ্রহে মূলত প্রাণের অস্তিত্বের খোঁজে গিয়েছে এই রোভার। সেই কাজেই পারসিভের্যান্স রোভারকে সাহায্য করবে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। লালগ্রহের দুর্গম পৃষ্ঠদেশের উপর উড়ে বেরিয়ে খোঁজ করবে প্রাচীন জীবাণুর জীবনের। এই প্রমাণ সংগ্রহের কাজেই মূলত বহাল হয়েছে রোভার পারসিভের্যান্স এবং মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে যেসব যান যাবে তাদের সমর্থন করার জন্য নিজের যন্ত্রাংশের পরীক্ষা নিরীক্ষাও করবে এই হেলিকপ্টার।
আপাতত মঙ্গলগ্রহে কী করছে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity?
জানা গিয়েছে, লালগ্রহের জনপ্রিয় গহ্বর Jazero crater- এর কাছে থাকা অঞ্চল Séítah- এর উত্তর-পশ্চিমাংশে উড়ছে এই মার্স হেলিকপ্টার। পরবর্তী অপারেশনের জন্য এই এলাকাকেই বেছে নেওয়া হয়েছে। এই নতুন গন্তব্যে পৌঁছোনোর জন্য তিনটি উড়ানের প্রয়োজন। তার মধ্যে দুটো সম্পূর্ণ করে ফেলেছে মার্স হেলিকপ্টার Ingenuity। প্রথমে থেকে অর্থাৎ গত এপ্রিল মাস থেকে যে ধরনের সমতল ভূমিতে মার্স হেলিকপ্টার উড়েছিল, নতুন গন্তব্যপথ তার তুলনায় অনেকটাই বন্ধুর। তবে এক্ষেত্রে সফলভাবেই দু’টি উড়ান সম্পন্ন হয়েছে। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, Jezero Crater- এর প্রাচীন নদী ব-দ্বীপ এলাকার Séítah অঞ্চলে বহু ভূতাত্ত্বিক প্রমাণ রয়েছে। মঙ্গলগ্রহে বহু লক্ষ বছর আগে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা তা বোঝার জন্য এগুলি হয়তো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হতে পারে।