আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলের উপরের অংশ ক্রমশ শীতল এবং সংকুচিত হচ্ছে। সম্প্রতি গবেষণার মাধ্যমে এমনটাই জানিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের কারণে প্রতি দশকে প্রায় ৬০ ফুট করে সংকুচিত হচ্ছে আপার অ্যাটমোস্ফিয়ার, এমনটাই মত বিজ্ঞানীদের। আর এইসব সমস্যার মূলে রয়েছে ক্ষতিকর গ্রিনহাউস গ্যাস। উল্লেখ্য, দীর্ঘদিন ধরেই গ্রিনহাউস গ্যাসের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে সোচ্চার হয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বৈজ্ঞানিকরা।
সম্প্রতি সায়েন্স ডিরেক্ট নামের একটি জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে একটি প্রতিবেদন। সেখানে বলা হয়েছে, মেসোস্ফিয়ার অর্থাৎ বায়ুমণ্ডলের সেই স্তর যা ভূপৃষ্ঠের উপরে ৫০ থেকে ৮০ কিলোমিটার এলাকায় অবস্থান করে, সেই মেসোস্ফিয়ার স্তর ক্রমশ শীতল এবং সংকুচিত হচ্ছে। বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষায় জানা গিয়েছে, পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে থাকা সামার মেসোস্ফিয়ার ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট হারে সংকুচিত হচ্ছে। এর পাশাপাশি প্রতি দশকে ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট সংকুচিত হচ্ছে এই মেসোস্ফিয়ার স্তর।
গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন ধরনের আবহাওয়া এবং জলবায়ুগত পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। এই প্রসঙ্গেই গবেষণা করতে গিয়ে, মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসার তিনটি স্যাটেলাইট থেকে তথ্য সংগ্রহ করেছেন বিজ্ঞানীরা। প্রায় ৩০ বছরের তথ্য সংগ্রহ করে একটি দীর্ঘকালীন প্রভবের বা লং-টার্ম রেকর্ড পরিবেশন করেছেন। আর সেখানেই উক্ত তথ্যগুলি দিয়েছেন বৈজ্ঞানিকরা। সায়েন্স ডিরেক্ট জার্নালে প্রকাশিত প্রতিবেদনের মূল প্রতিবেদক (লিড অথার) স্কট বেলি ভার্জিনিয়া টেকের একজন অ্যাটমোস্ফেরিক সায়েন্টিস্ট। স্কট জানিয়েছেন, গ্রিনহাউস গ্যাসের প্রভাবে সৌরজগতের কী ক্ষতি হচ্ছে তা সঠিকভাবে বুঝতে কয়েক দশক সময় লেগে যায়।
মেসোস্ফিয়ার গুরুত্বপূর্ণ কেন?
বায়ুমণ্ডলে বিভিন্ন স্তর রয়েছে। তার মধ্যে স্ট্র্যাটস্ফিয়ারের ঠিক উপরেই রয়েছে মেসোস্ফিয়ার। সূর্যের ক্ষতিকারক অতিবেগুনি রশ্মি থেকে আমাদের রক্ষা করে এই মেসোস্ফিয়ার স্তরই। তাই সেই স্তর যদি ক্রমাগত শীতল এবং সংকুচিত হয়ে যায়, তা সত্যিই উদ্বেগের কারণ। কারণ এমনটা দীর্ঘদিন ধরে হতে থাকলে ক্রমশ সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মির ক্ষতিকারক প্রভাবে সম্মুখীন হবে বায়ুমণ্ডল, আবহাওয়া, জলবায়ু সর্বোপরি প্রাণীকুল, যা কখনই কাম্য নয়। তাই এই মেসোস্ফিয়ার স্তর নিয়ে আলোচনা, গবেষণা এবং এই স্তরের সংরক্ষণ প্রয়োজন।
আরও পড়ুন- সূর্যের দিকে এগোচ্ছে সুবিশাল ধূমকেতু, পৃথিবী থেকে দেখা যাবে ২০৩১ সালে, জানিয়েছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা