বিশ্বের সবচেয়ে দামি ধাতু কোনটি বলুন তো? সোনার কথা ভাবছেন? কিংবা প্ল্যাটিনাম? না, সঠিক হল না। দেখেছেন কখনও বিশ্বের সবচেয়ে দামি ধাতুকে ঠিক কেমন দেখতে? তাহলে জানুন। সালটা 1800, যুক্তরাজ্যের বিজ্ঞানী উইলিয়াম হাইড ওলাস্টন নুয়েভা গ্রানাডা (আজকের কলম্বিয়া) থেকে খাঁটি প্ল্যাটিনাম আকরিকের একটি টুকরো সেখানে পাচার করেছিলেন। তাঁর বিশ্বাস ছিল, এই এক টুকটো কঠিন ধাতুকে রাসায়নিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নমনীয় প্লাটিনামে পরিণত করা সম্ভব। কিন্তু গবেষণার পর জানা গেল, সেটি দিয়ে অন্য একটি ধাতু তৈরি করা গিয়েছে। সেটি ছিল একটি নতুন এবং বিরল ধাতু। আর তারপরে তা বিশ্বের সবচেয়ে দামি ধাতু হিসেবে পরিচিত হয়।
নাম কী জানেন?
এই ধাতুটির নাম রোডিয়াম, যার রাসায়নিক প্রতীক Rh এবং পারমাণবিক সংখ্যা 45। তার পাচার করা প্ল্যাটিনাম আকরিকের টুকরো ব্যবহার করে, ওলাস্টন যা করতে পারেনি, তা অন্য বিজ্ঞানীরা করেছিলেন। তিনি একটি রাসায়নিক প্রক্রিয়া আবিষ্কার করেছিলেন, যা প্ল্যাটিনামকে বিচ্ছিন্ন করে এবং এটিকে নরম করে তোলে। এই গবেষণার পরে তিনি দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় অবশিষ্টাংশ খুঁজে পান। দ্রবণীয় দ্রবণটি প্রসারিত করার পরে তিনি দেখতে পান যে, একটি লাল রঙের লবণ সেই ধাতুতে রয়েছে।
তারপরেই রোডিয়াম আবিষ্কৃত হয়…
প্লাটিনামে এই ধরনের লাল লবণ থাকে না। এর পরে ওলাস্টন আরও গবেষণা শুরু করেন। আর তারপরে বুঝতে পারেন, এর ভিতরে আরও কিছু রয়েছে। 1803 এবং 1804 সালে তিনি প্ল্যাটিনাম আকরিক থেকে দু’টি নতুন ধাতু আবিষ্কার করেন। তিনি একটির নাম রাখেন প্যালাডিয়াম এবং অন্যটির নাম রোডিয়াম। রোডিয়াম একটি খুব চকচকে ধাতু, যাতে মরচে পড়ে না। এটি অটোমোবাইল, জুয়েলারি, রাসায়নিক এবং বৈদ্যুতিক খাতে ব্যবহৃত হয়।
রোডিয়ামের দাম কত?
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাড়ি উৎপাদন খাতে এর বিরাট চাহিদা রয়েছে। আর তার জন্যই এর দাম এত বেশি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এর দাম আরও বেড়েছে। রোডিয়ামের দাম প্রতি গ্রাম 11 হাজার টাকা। 10 গ্রামের সোনার দাম প্রায় 50 হাজার টাকা, সেখানে 10 গ্রাম রোডিয়াম কিনতে দিতে হবে 1 লাখ 10 হাজার টাকা।