আপনি কি মঙ্গলগ্রহে যেতে যান? তাহলে আপনাকে সেই সুযোগ দেবে মার্কিন স্পেস এজেন্সি নাসা। শুনে বিশ্বাস হচ্ছে না? কিন্তু সত্যিই এমনটা হতে চলেছে। লালগ্রহের পৃষ্ঠদেশে পৌঁছে যে যে সমস্যার সম্মুখীন হওয়া সম্ভব এবং তা সমাধানের জন্য কী করণীয়- সেইসব ব্যাপারেই সাধারণ মানুষকে প্রশিক্ষণ দেবে নাসা। ইতিমধ্যেই অ্যাপ্লিকেশন চেয়ে টুইটারে বার্তাও দিয়েছে মার্কিন স্পেস এজেন্সি। তবে মাত্র চারজন পাবেন এই সুবর্ণ সুযোগ। জানা গিয়েছে, এই চারজনকে বিশেষ ভাবে প্রস্তুত করা হবে। মঙ্গলগ্রহে ভবিষ্যতের অভিযানে যে ধরনের সমস্যা হতে পারে এবং তা সমাধানে কী করতে হবে, তার জন্য এই চারজনকে একটি simulated Martian exploration environment অর্থাৎ মঙ্গলগ্রহের মতো একটি নকল পরিবেশ তৈরি করে, সেখানে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।
জানা গিয়েছে, নাসা যে চারজনকে বেছে নেবে, তাঁদের এক বছরের জন্য Mars Dune Alpha- তে থাকতে হবে। এই Mars Dune Alpha হল ১৭০০ বর্গফুটের এমন একটি জায়গা যেখানে মঙ্গলগ্রহের পরিবেশ তৈরি করা হবে একটি ICON 3D প্রিন্টারের সাহায্যে। টেক্সাসের হাউস্টনে রয়েছে Johnson Space Center। এর ভিতরে একটি বিল্ডিংয়ে এই Mars Dune Alpha তৈরি করা হবে। নাসা সূত্রে খবর, ২০২২ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যেই এই simulated mission বা নকল অভিযান শুরু হবে। জানা গিয়েছে, ১৭০০ বর্গফুটের ওই Mars Dune Alpha- তে থাকবে আলাদা আলাদা ঘর, দু’টি বাথরুম, একটি মেডিক্যাল এরিয়া, একটি রান্নাঘর। এর পাশাপাশি শস্য ফলানো, একসারসাইজ করা এবং হ্যাংআউটের জন্যও আলাদা করে জায়গা নির্দিষ্ট করা হবে।
দেখুন সেই টুইট
Calling all Martians! @NASA is recruiting four crew members for a year-long mission that will simulate life on a distant world, living in “Mars Dune Alpha,” a 3D-printed habitat. Want to take part in research for the first human Mars mission?
Learn more! https://t.co/v3dL7qzRk9 pic.twitter.com/k5sviRXvtV
— NASA Mars (@NASAMars) August 6, 2021
একটি বিবৃতিতে নাসা জানিয়েছে, ভবিষ্যতে মঙ্গলগ্রহে অভিযানের সময় যে যে সমস্যার সম্মুখীন হওয়া সম্ভব, সেই সমস্ত পরিস্থিতিতেই এই চারজনকে রাখা হবে। পরিস্থিতি অনুযায়ী আগ্রহী চারজন কী প্রতিক্রিয়া দিচ্ছেন সেটাই খতিয়ে পর্যবেক্ষণ করা হবে। এর ফলে আগামী দিনে মঙ্গলগ্রহ এবং চাঁদে অভিযান করলে কী কী সম্ভাব্য সমস্যা হতে পারে এবং তার জন্য সম্ভাব্য কী কী পদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সেটাই বুঝতে পারবেন বিজ্ঞানীরা। আপাতত নাসার এই simulated mission- এর জন্য অ্যাপ্লিকেশন জমা দেওয়া যাচ্ছে। ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবেদন জানানোর সময় রয়েছে।
নাসার এই মিশনে যোগ দেওয়ার জন্য কারা আবেদন জানাতে পারবেন? এক্ষেত্রে কয়েকটি শর্ত রয়েছে-
নাসার একটি ব্লগ পোস্টে বলা হয়েছে, মাস্টার ডিগ্রি সংক্রান্ত যে রিক্যুয়ারমেন্ট রয়েছে, তার বদলে এমন কোনও ব্যক্তি যিনি STEM- এর ক্ষেত্রে দু’বছরের জন্য ডক্টরাল প্রোগ্রামে কাজ করেছে অথবা একটি মেডিক্যাল ডিগ্রি শেষ করেছেন অথবা একটি পাইলট টেস্ট প্রোগ্রামে অংশ নিয়ে পাশ করেছেন- তিনিও আবেদন জানাতে পারবেন। এর পাশাপাশি চার বছরের প্রফেশনাল এক্সপিরিয়েন্স, মিলিটারি অফিসারের ট্রেনিং কিংবা STEM ফিল্ডে ব্যাচেলর অফ সায়েন্স ডিগ্রি থাকলেও আবেদন করা যাবে নাসার এই মিশনের জন্য।
নাসার সূত্রে জানা গিয়েছে, এই মিশনের ক্ষেত্রে ক্রু সদস্যরা বিজ্ঞানভিত্তিক গবেষণার পাশাপাশি ভার্চুয়াল রিয়েলটি এবং রোবোটিক নিয়ন্ত্রণ পর্যবেক্ষণ করবেন। এর সঙ্গে স্পেসওয়াক এবং কমিউনিকেশন এক্সচেঞ্জের দিকেও তাঁদের মনসোগ দিতে হবে।
আরও পড়ুন- মঙ্গলগ্রহ থেকে ‘পাথর’ সংগ্রহে সফল হয়নি নাসার মার্স রোভার পারসিভের্যান্স