যেদিন লাঙ্গল ছেড়ে চাষিদের কাছে ট্রাক্টর এল, সেদিনও ছিল কৃষিকাজে এক বিরাট পরিবর্তন। তারপর থেকে থেমে থাকেনি কিছুই। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আধুনিক কৃষিকাজে অনেক পরিবর্তন লক্ষ্য করা গিয়েছে। বিজ্ঞানীরা একের পর এক নতুন নতুন সমাধান খুঁজে পেয়েছেন। মানুষ ও পশুপাখির মল-মূত্রকেও কৃষিকাজে ব্যবহার করা শুরু হয়েছে। এবার এল ইলেকট্রিক শক। এমনই এক অসাধ্য সাধন করেছেন বিজ্ঞানীরা। শুনেই চমকে গেলেন তো? আদতেই এমনটা হচ্ছে। তবে এই পদ্ধতিটি এখনও বড় পরিসরে ব্যবহৃত হচ্ছে না। আশা করা হচ্ছে, শীঘ্রই সারা বিশ্বের কৃষকরা পরিবেশের রক্ষা করতে আর উৎপাদন বাড়িয়ে তুলতে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা শুরু করবে। এই পদ্ধতি আয় বাড়াতেও সাহায্য করবে। বিজ্ঞানীরা এই পদ্ধতির নাম দিয়েছেন ‘বৈদ্যুতিক বাগান’ বা ‘বৈদ্যুতিক চাষ’। কী এই বৈদ্যুতিক বাগান (Electro Culture Farming)? আর কীভাবেই বা ফসল ফলবে এই উপায়ে? চলুন জেনে নেওয়া যাক।
বৈদ্যুতিক বাগান কী?
এটি একটি নতুন ধরনের কৃষি কৌশল, যা নিয়ে বিজ্ঞানীরা অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালিয়ে চলেছেন। বিভিন্ন দেশের গবেষকরা পরিবেশকে রক্ষা করতে কৃষি পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছেন। তাঁদের মতে, পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে কৃষি পদ্ধতিতে বিপ্লব ঘটানো যাবে। কেউ কেউ একে ‘চতুর্থ কৃষি বিপ্লব’ও বলছেন।
বৈদ্যুতিক শকেই বেড়ে উঠছে ফসল:
ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের প্ল্যান্ট মরফোজেনেসিস ল্যাবরেটরিতে একটি প্রকল্প তৈরি করা হয়েছে। সেখানে বীজ থেকে যে কোনও ফসল বেড়ে উঠছে খুব সহজেই। তাও আবার বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করে। তারা বাঁধাকপি চাষ করেছেন। আর সেই পুরো পদ্ধতিতে লক্ষ্য করেছেন যে, ফসলের কোনওরকম ক্ষতি হচ্ছে না। বিভিন্ন কিউব তৈরি করা হয়েছে। আর তাতেই বৈদ্যুতিক শকের ছোটো ছোটো ডোজ় দেওয়া হচ্ছে।
বিজ্ঞানীদের মতে, এই উদ্যোগে কৃষিতে বিরাট পরিবর্তন আনা সম্ভব হবে। গত এক দশক ধরে, বিজ্ঞানীরা কৃষিতে বৈদ্যুতিক শক্তি ব্যবহারের বিভিন্ন উপায় খুঁজছেন। আর তা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছেন। বিজ্ঞানীরা দ্রুত অঙ্কুরোদগমের জন্য বীজে বৈদ্যুতিক শক ব্যবহার করছেন। শুধু তাই নয়, উদ্ভিদের বৃদ্ধি দ্রুত করতে ঠান্ডা প্লাজমাও ব্যবহার করা হচ্ছে। আর এই সব কিছু নিয়ে বিভিন্ন দেশ বিভিন্ন পরীক্ষা নিরীক্ষা করছে।
বৈদ্যুতিক চাষের উদ্দেশ্য কী?
বৈদ্যুতিক চাষের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হল ফসলের ফলন বাড়ানো। ফলন বাড়ানোর ক্ষমতা বাড়িয়ে দেওয়া। এই পদ্ধতিকে কাজে লাগিয়ে ফলন 20 থেকে 75 শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে এই পদ্ধতিকে কতটা কাজে লাগানো যাবে, এখন সেটাই দেখার।