মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালাচ্ছে নাসার পাঠানো রোভার পারসিভের্যান্স। লাল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে নমুনা সংগ্রহ করে (পাথর) পৃথিবীতে ফিরবে এই রোভার। তবে প্রথম পাথর সংগ্রহের কাজে ব্যর্থ হয়েছে রোভার পারসিভের্যান্স। যদিও প্রথম পর্যায়ে অসফল হলে ফের নতুন করে মঙ্গল গ্রহ থেকে পাথর সংগ্রহের জন্য প্রস্তুতি নিয়েছে রোভার পারসিভের্যান্স। দ্বিতীয় চেষ্টার একদম শেষ পর্যায়ে রয়েছে নাসার এই মার্স রোভার। প্রথমবারের মতোই এ বারও পাথর খুঁড়ে অর্থাৎ খনন কার্য চালিয়ে নমুনা সংগ্রহ করবে মার্কিন স্পেস এজেন্সির রোভার পারসিভের্যান্স। জানা গিয়েছে, ‘Rochette’ নামের একটি প্রস্তর খণ্ডের উপর খনন কার্য চালাবে এসইউভি সাইজের রোভার পারসিভের্যান্স। এরপর ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে যে গর্ত তৈরি হবে সেখান দিয়ে বৈজ্ঞানিকরা ওই পাথরের ভিতরের অংশ দেখে সিদ্ধান্ত নেবেন যে আদৌ এখান থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হবে, নাকি হবে না।
পৃথিবীর বাইরে অন্য গ্রহেও প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না তার সন্ধানেই মঙ্গল গ্রহে অভিযান চালাচ্ছে নাসা। মার্কিন স্পেস এজেন্সির চলতি মিশনে আপাতত লাল গ্রহের বিখ্যাত স্থান Jazero crater- এর আশপাশের ঘুরপাক খাচ্ছে মার্স রোভার পারসিভের্যান্স। জানা গিয়েছে, ৭ ফুট লম্বা একটি রোবোটিক হাত (আর্ম) ব্যবহার করে পাথরের উপর খোঁড়াখুঁড়ি (স্ক্র্যাপ) করা হবে। তারপর বৈজ্ঞানিকদের দল সিদ্ধান্ত নিলে সেখান থেকে নমুনা সংগ্রহ (রক বা পাথর) করবে রোভার পারসিভের্যান্স। এই সমস্ত কর্মকাণ্ডই ঘটতে চলেছে আগামী সপ্তাহে। এই গোটা কর্মকাণ্ডের জন্য রোভার পারসিভের্যান্স তার নিজস্ব সাবসারফেস র্যাডার এবং র্যাডার ইমেজার ফর মার্স সাবসারফেস এক্সপেরিমেন্ট (RIMFAX) ব্যবহার করবে। আর তার ফলেই কনন কার্যের নীচের রক লেয়ার থেকে প্রয়োজনে নমুনা সংগ্রহ করা সম্ভব হবে।
এর আগে গত ৬ অগস্ট প্রথমবার লাল গ্রহের পৃষ্ঠদেশ থেকে নমুনা সংগ্রহের তোড়জোড় করেছিল রোভার পারসিভের্যান্স। কিন্তু ভঙ্গুর ও চূর্ণবিচূর্ণ শিলার কারণে রক স্যাম্পেল সংগ্রহ করা সম্ভব হয়নি। প্রথম চেষ্টায় Citadelle নামের একটি রিজ (পাহাড় জাতীয় উঁচু টিলা) থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে গিয়েছিল রোভার পারসিভের্যান্স। অন্যদিকে, রোভার পারসিভের্যান্সের ভিতরে থাকা তার আর এক সঙ্গী হেলিকপ্টার Ingenuity জানান দিয়েছে যে, সেডিমেন্টারি রক নমুনা সংগ্রহের জন্য আদর্শ। কারণ এই ধরনের পাথরের উপরেই আবহাওয়া বিভিন্ন উপাদান অর্থাৎ জল, বায়ু- এদের প্রভাব স্পষ্ট ভাবে লক্ষ্য করা যায়। এর আগের বার যে রিজের উপর রোভার খোঁড়াখুঁড়ি করেছিল সেখানে বায়ু প্রবাহের ফলে ক্ষয় হয়ে যাওয়া পাথরের আস্তরণ ছিল। আর তাই ড্রিলিং শুরু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই চূর্ণ বিচূর্ণ হয়ে যায় ওই শিলাখণ্ড। এদিকে জানা গিয়েছে, মঙ্গল গ্রহের দক্ষিণ ভাগে South Séítah এলাকায় অনেক পুরনো পাথর রয়েছে। Jazero crater- এর আশপাশ থেকে নতুন স্যাম্পেল সংগ্রহ করলে ওই এলাকার সমগ্র সময়কাল অর্থাৎ সৃষ্টি থেকে বর্তমান পর্যন্ত সময়সূচী নির্ধারণ করা সম্ভব।
আরও পড়ুন- Falcon-9 রকেট উত্ক্ষেপনের আগে টেস্ট-ফায়ারে সফল SpaceX! আশা দেখছে নাসা