Heartbeat In Space: ভিনগ্রহের ‘ধুকপুকানি’ ভেসে এল নীলগ্রহে! এলিয়েনদের হৃদয়ের ভাষা পড়তে পারবে মানুষ?

TV9 Bangla Digital | Edited By: আসাদ মল্লিক

Jul 17, 2022 | 7:31 PM

Strange Radio Signal: মহাকাশে অবাক করা কিছু রেডিও সিগন্যালের সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা দাবি করেছেন যে, সেই সিগন্যালের শব্দ হুবহু হার্টবিটের মতো। আর তা নিয়ে রীতিমতো চাঞ্চল্য দেখা গিয়েছে জ্যোতির্বিজ্ঞান মহলে। কী এই শব্দ?

Heartbeat In Space: ভিনগ্রহের ধুকপুকানি ভেসে এল নীলগ্রহে! এলিয়েনদের হৃদয়ের ভাষা পড়তে পারবে মানুষ?
মহাকাশে এ কিসের শব্দ, যা হার্টবিটের মতো? প্রতীকী ছবি।

Follow Us

সম্প্রতি বেশ কিছু মহাজাগতিক তরঙ্গের খোঁজ পেয়েছেন মহাকাশবিজ্ঞানীরা। বহু আলোকবর্ষ দূর থেকে পৃথিবীতে ভেসে আসা এই তরঙ্গের আকৃতি অবিকল হৃদয়ের ধুকপুকানির মতো, চাঞ্চল্যকর তথ্য জানিয়েছেন ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজির (MIT) গবেষকরা। তাঁদের দাবি, কয়েকশো কোটি আলোকবর্ষ দূর থেকে ভেসে এসেছে এই তরঙ্গ। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, এই ধরনের রেডিও সিগন্যাল বার্স্টকে (Radio Signal Burst) বলা হয় ‘ফাস্ট রেডিও বার্স্টস’।

ভিনগ্রহের প্রাণী হোক বা অজানা UFO, মানব সভ্যতার বহুদূরে বসবাসকারী সম্ভাব্য সভ্যতা সম্পর্কে মানুষের এই জানার আগ্রহ অতি প্রাচীন। বিজ্ঞান ও প্রকৃতি সম্পর্কে সঠিক জ্ঞান আয়ত্ত করার পর থেকেই আধুনিক মানুষের এই চাহিদা বাড়তে থেকেছে উত্তরোত্তর। বারংবার এমন বহু উড়ন্ত চাকতি বা এলিয়েন সদৃশ বস্তু দেখেছে মানুষ, ইতিহাস তার সাক্ষী। যদিও সে সব ঘটনার বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা বা সঠিক প্রমাণ সম্পর্কে সন্দেহ রয়েই গেছে।

ভিন গ্রহ বা কয়েক লক্ষ আলোকবর্ষ দূরে থাকা পৃথিবীর মতোই অন্যান্য গ্রহ বা ছায়াপথকে জানতে সেই অনন্তকাল ধরে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে NASA। ভারতের ISRO ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে চাঁদে। উন্নততর রকেট বা মহাকাশযানের কারণে মঙ্গলের বেশ কিছু রহস্যরেও উদঘাটন সম্ভব হয়েছে। সাম্প্রতিক কিছু ঘটনায় এটা স্পষ্ট যে, মহাজগতের যেটুকু অংশ মানুষ দেখতে পায়, তার বাইরেও রয়েছে অজানা অনেক কিছু। ঠিক সেরকমই এক অজানা শব্দ, যা অনেকটাই হার্টবিটের মতো।

মহাকাশবিজ্ঞানীদের এত বছরের গবেষণা অনুযায়ী, এই রেডিও সিগন্যাল বার্স্টের দৈর্ঘ্য মূলত সীমাবদ্ধ থাকে মাত্র কয়েক মিলিসেকেন্ডের মধ্যে। যদিও সাম্প্রতিক সিগন্যালের দৈর্ঘ্য প্রায় 3 সেকেন্ড! গড়ে প্রায় 100 গুণ দীর্ঘ এই সিগন্যালকে নিয়ে তোলপাড় চলছে বিজ্ঞানীমহলে। এমআইটির বিজ্ঞানীরা এই এফআরবির নামকরণ করেছেন ‘FRB 20191221A’। গবেষকদের মতে এই এফআরবির জন্ম হয়েছে মূলত কোনও পালসার বা ম্যাগনেটর থেকে।

পালসার বা ম্যাগনেটর আদতে নিউট্রন তারকার প্রকারভেদ। অতি অল্প ব্যাসের মধ্যেই বিশাল পরিমাণ ভর সঞ্চিত থাকলে সেটিকে বলে নিউট্রন তারকা। মূলত কোনও রেড জায়ান্ট স্টারের বিস্ফোরণ হলে তার কেন্দ্রটি ছিটকে পড়ে, ঘূর্ণায়মান অবস্থায় সেটি রূপান্তরিত হয় অত্যন্ত ভারী নিউট্রন তারকায়। এই তারার চৌম্বকীয় ক্ষেত্র মারাত্মক শক্তিশালী হয়।

MIT-র গবেষকরা আরও জানিয়েছেন যে, এই বার্স্টের ক্ষেত্রে কম্পনের মাত্রা মানব হৃদয়ের মতোই। যদিও প্রত্যেক 0.8 সেকেন্ডে যেখানে মানুষের হৃদয় একবার কম্পিত হয়, এই সিগন্যালের ক্ষেত্রে সেই সময় মাত্র 0.2 সেকেন্ড। বহু বিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত হওয়ায় এই নিউট্রন তারকাদের চিহ্নিত করা কঠিন হয়ে পড়ে, যদিও গামা রে বার্স্টের কারণে মানুষ সনাক্ত করতে পারে এই তারকাগুলোকে।

এমআইটির মহাকাশবিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রের গবেষক ড্যানিয়েল মিচিলি জানিয়েছেন, “সুনির্দিষ্ট কম্পনযুক্ত সিগন্যাল দিতে পারে, এমন বস্তু মহাজগতে কম। নিউট্রন তারকাই মূলত এমন সিগন্যাল ছড়াতে সক্ষম।” ওই গবেষকের আরও দাবি, “লাইটহাউসের মতো ঘুরতে থাকে নিউট্রন স্টার। যদিও কয়েক সেকেন্ডে সেই পাক খাওয়ার সংখ্যা ধারণার বাইরে। প্রায় 300 db পর্যন্ত শব্দ উৎপন্ন করতে পারে এই নিউট্রন তারকাগুলো, যার ফলে এত দূর এসে পৌঁছতে সক্ষম হয়েছে এই সিগন্যাল।”