জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত করতে পারে ম্যানগ্রোভের বৃদ্ধিকে, দাবি নতুন রিপোর্টে

জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে কী হতে পারে আমাজন অরণ্যের, তা দেখেছে মানবসমাজ। এবার সেই একই পরিণতির সম্মুখীন ম্যানগ্রোভ অরণ্য। শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, ম্যানগ্রোভের ধ্বংসের শুরু দেখছে একবিংশ শতাব্দী। আর এর কারণ যে আমরাই, তা সাফ জানাচ্ছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা।

জলবায়ু পরিবর্তন প্রভাবিত করতে পারে ম্যানগ্রোভের বৃদ্ধিকে, দাবি নতুন রিপোর্টে
প্রতীকী ছবি।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 02, 2022 | 9:53 PM

ক্রমশ বদলে যাচ্ছে আবহাওয়া, বদলে যাচ্ছে জলবায়ু। মানুষের কার্যকলাপে বিষ মিশছে বাতাসে, ধূসর হচ্ছে আকাশ। সবুজ হারিয়ে ফ্যাকাশে পৃথিবী। নবজাতককে নতুন ভোরের স্বপ্ন দেখাতে ব্যর্থ হচ্ছে যুবসমাজ, প্রতিদিন, প্রতিনিয়ত…

জলবায়ু পরিবর্তনের জেরে কী হতে পারে আমাজন অরণ্যের, তা দেখেছে মানবসমাজ। এবার সেই একই পরিণতির সম্মুখীন ম্যানগ্রোভ অরণ্য। শুধু ভারত বা বাংলাদেশ নয়, ম্যানগ্রোভের ধ্বংসের শুরু দেখছে একবিংশ শতাব্দী। আর এর কারণ যে আমরাই, তা সাফ জানাচ্ছেন পরিবেশবিজ্ঞানীরা।

আস্তে আস্তে হলেও বদলে যাচ্ছে সমুদ্রের জলের রঙ, এমনকি আগের মতো লবণাক্তও নয় জল। মহাসাগরের জলের ঘনত্ব থেকে অন্যান্য চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, আমূল বদলাচ্ছে সবই, ব্রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিদ্যা বিভাগের অধ্যাপকদের গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই এক তথ্য।

সমুদ্রের ধরন বদলে যাওয়ার জেরে প্রভাব পড়ছে ম্যানগ্রোভের চরিত্রেও। হারিয়ে যাচ্ছে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের বহু বিরল প্রজাতি। অবলুপ্তির পথে বহু প্রাণী। শ্বাসমূল নিয়ে বেঁচে থাকে যে অদ্ভূত প্রজাতির গাছগাছালি, তারাও বিপন্ন। অদূর ভবিষ্যতে হয়তো এমন দিন আসবে, যখন সুন্দরবনে গিয়ে দেখবেন সুন্দরী, হোগলার বদলে আম, কাঁঠালের বন!

সমুদ্র তীরবর্তী অঞ্চলের আবহাওয়ার বদলের নেপথ্যে বহুলাংশে দায়ী ম্যানগ্রোভ। এক্ষেত্রে ম্যানগ্রোভ অরণ্যের অবলুপ্তি ঘটলে সম্পূর্ণ পাল্টে যেতে পারে জলবায়ু। ফলত প্রবল সমস্যায় পড়বেন সেই অঞ্চলের নাগরিকরা। চাষ আবাদ থেকে অরণ্যের জীবনযাপন, সব ক্ষেত্রেই পড়বে ভয়াবহ প্রভাব।

সূত্রের খবর, ঘেন্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়ো-ওরাকলের তথ্যভাণ্ডার ব্যবহার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে এনেছেন গবেষকরা। ইউনেস্কোর EOS-80 equation তথ্য ব্যবহার করছেন বিশেষজ্ঞরা। Global Warming-এর জেরে যেভাবে নষ্ট হচ্ছে বাস্তুতন্ত্র, পাল্টে যাচ্ছে সমুদ্রতলের উষ্ণতা, সে বিষয়ে আগাম সতর্কতা জারি করেছেন গবেষকরা।

ব্রাসেল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার co-author Nico Koedam-এর সাফ বক্তব্য, ‘একবিংশ শতাব্দীর শেষেই হয়তো সমুদ্রের জলের ঘনত্ব নষ্ট হবে, পাশাপাশি তলানিতে ঠেকবে উপকূলবর্তী অরণ্যের পরিমাণও। Atlantic East Pacific অঞ্চলের থেকে Indo-West Pacific অঞ্চলে এই প্রবণতা অত্যধিক।’

‘আমাদের সমীক্ষায় ম্যানগ্রোভ অরণ্যের ভয়াবহ ভবিষ্যতের ছবি স্পষ্ট। যদিও এই তথ্য কতটা যুক্তিযুক্ত বা আদতে গবেষণার ফলের সঙ্গে কতদূর মিলবে বাস্তব,সে সম্পর্কে সন্দেহ রয়েছে’, VUB-এর অধ্যাপক Bram Vanschoenwinkel-এর মতামত এমনই। গবেষণায় যে ভয়াবহ চিত্র উঠে এসেছে, বাস্তবের ছবি যে আরও মারাত্মক হতে পারে, তা সাফ জানাচ্ছেন আবহবিদ ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা।