NASA’s Scientists: পৃথিবীটা গোলাকার। তবে টেলিস্কোপ (Telescope) আবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা (Scientists) দেখেছেন, শুধু পৃথিবীই নয়, কিছু ব্যতিক্রম ছাড়া চাঁদ–সূর্য এবং গ্রহ–নক্ষত্র–উপগ্রহসহ মহাকাশের বেশিরভাগ বস্তুই গোলাকার (Spherical)। বর্তমানে বিজ্ঞানীরা গ্যালাক্সি দিয়ে মহাকাশে উঁকি দেন। গ্রহের (Planets) নিজস্ব কোনও আলো নেই, তাই এদের পর্যবেক্ষণ করা কঠিন। তারপরও অসংখ্য গ্রহ পর্যবেক্ষণ করেছেন বিজ্ঞানীরা। চলতি বছরের শুরুর দিকে নাসা (NASA) জানিয়েছিল, তারা 5 হাজার এক্সোপ্ল্যানেটের তালিকা তৈরি করে ফেলেছে। আশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে, এই বিপুল সংখ্যক গ্রহের সবগুলোই গোলাকার! কোন ঘনকাকার, পিরামিড বা বিষম আকারের গ্রহের দেখা বিজ্ঞানীরা পাননি। কেন সমস্ত গ্রহের আকৃতি একই এবং কেন তারা সবসময় বৃত্তাকার? নলাকার বা আয়তক্ষেত্রাকার নয় তা নিয়ে একটি বড় প্রশ্ন উঠেছে। চলুন দেখে নেওয়া যাক বিজ্ঞানীরা এর কারণে কী বলছেন।
সাও পাওলো বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইউএসপি) জ্যোতির্বিদ্যা, জিওফিজিক্স এবং বায়ুমণ্ডলীয় বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক এনোস পিকাজিওর মতে, “এটি মহাকর্ষের কারণে ঘটে। এই আকৃতিকে বলা হয় ওব্লেট স্পেরয়েড (oblate spheroid)। এই শক্তিই পদার্থকে একত্রে ধরে রাখে। গ্রহের আকৃতি অ-সম্পূর্ণ গোলাকার। গ্রহের মেরু দিয়ে পরিমাপ করা পরিধি বিষুবরেখার পরিধির চেয়ে ছোট। গ্রহ যদি ঘনকের মত হতো, তার অর্থ হতো এর কোণাগুলি অপেক্ষাকৃত উঁচু।”
মাধ্যাকর্ষণ শক্তি সমস্ত পদার্থের উপর কাজ করে এবং আকৃষ্ট কণাগুলি একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষে পরিণত হয়ে একটি গরম এবং তরল ভর তৈরি করে। সময়ের সঙ্গে-সঙ্গে এই ভর ঠান্ডা হয়ে একটি গোলাকার পৃষ্ঠ তৈরি করে। এ জন্যেই গ্রহ, উপগ্রহ, নক্ষত্ররা গোলকাকার। যেসব গ্রহাণুর অভিকর্ষ অপেক্ষাকৃত কম, তারা গোল হতে পারে না। হয় এবড়ো থেবড়ো। বিষুব রেখার সম্প্রসারণ অনেক গ্রহেই বেশি। বৃহস্পতির বিষুব রেখা মেরুগুলির পরিধির চেয়ে 0.3 শতাংশ প্রশস্ত। বিজ্ঞানীরা বলছেন যে এই আকারের অনেক গ্রহে এই পার্থক্য 7 শতাংশ পর্যন্ত পৌঁছোয়। সামগ্রিকভাবে সমস্ত গ্রহ একই আকারের।
মহাকাশে শুধু গ্রহই নয়, নক্ষত্র বা বড় কোনও উপগ্রহের আকারও গোলাকার হয়। অনিয়মিত বা বিষম আকার দেখা যায়, গ্রহাণু, উপগ্রহ বা ধুমকেতুর মত ছোট আকারের বস্তুর বেলায়। আকার ছোট হওয়ায় ভর কম থাকে এসব বস্তুর। ফলে এদের মধ্যে বিদ্যুৎচুম্বকীয় বল এবং নিউক্লীয় বলকে উপেক্ষা করার মত শক্তিশালী মহাকর্ষ বল তৈরি হয় না। এদের মৌল উপদানগুলোর ওপর নির্ভর করে বিদ্যুৎচুম্বকীয় এবং নিউক্লিয়ার বলের তারমতম্য তৈরি হয়।