টসিলিজ়ুমাব একটি জীবনদায়ী ওষুধ। সাম্প্রতিক সময়ে এই ওষুধটির নাম কালোবাজারি প্রসঙ্গে উঠে এসেছিল সংবাদের শিরোনামে। মানব শরীরে কোনও ভাইরাস, ব্যাক্টেরিয়া বা ছত্রাক সংক্রমণ হলে শরীর সাইটোকাইন ক্ষরণ করে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কোভিড ১৯ করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত একজন রোগী যখন আশঙ্কাজনক অবস্থায় থাকেন, তখন ওই ব্যক্তির শরীরে একটি সাইটোকাইন ঝড় শুরু হয়। কিন্তু সেই সাইটোকাইন ক্ষরণ যখন ঝড়ের আকার ধারণ করে, তখন তা শরীরের অন্য অঙ্গগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। কোভিডের ক্ষেত্রে সাইটোকাইন স্টর্মে ফুসফুস আক্রান্ত হয়ে পড়ে। এর থেকে আক্রান্ত রোগীর প্রাণসংশয় পর্যন্ত হয়।
এই পরিস্থিতি থেকে টসিলিজ়ুমাবের মতো ওষুধ বাঁচাতে পারে রোগীর জীবন। কিন্তু সুইজারল্যান্ডের রসে ফার্মা-র তৈরি এই ওষুধ ভারতীয় বাজারে প্রতি ভায়ালের দাম ৪০ হাজার টাকা। এই বিপুল দাম সাধারণ মানুষের ধরা ছোঁয়ার বাইরে। আর এই জায়গাটিতেই কাজ করছে হায়দ্রাবাদের হেটেরো ফার্মা। তারাই আগে ভারতে রসের তৈরি টসিলিজ়ুমাব-এর বাণিজ্যিক মার্কেটিং করত। এখন তারাই দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি করেছে টসিলিজ়ুমাবের দেশীয় সংস্করণ।
শহরের বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে এই ভারতীয় টসিলিজ়ুমাবের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে বর্তমানে। ওই হাসপাতালে ভর্তি তিন জন রোগীর শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছে ওষুধটি। তাদের মধ্যে দু’জন রোগীর শারিরীক অবস্থার অনেকটা উন্নতি হয়েছে বলে মত ডাঃ অজয় কৃষ্ণ সরকারের।
আর এই কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ওই হাসপাতালেরই ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ডিরেক্টর ডাঃ শুভ্রজ্যোতি ভৌমিক বলছেন, “টসিলিজ়ুমাবের কালোবাজারি রুখতে সুদূরপ্রসারী প্রভাব ফেলবে এই ট্রায়াল।” হেটেরো হেলথকেয়ারের রিসার্চ ভাইস প্রেসিডেন্ট ক্লিনিক্যাল রিসার্চ তার শুভদীপ সিনহাও আশাবাদী, তাঁদের তৈরি করা টসিলিজ়ুমাবের দাম ওই ওষুধের বিদেশি সংস্করণের তুলনায় অনেকটাই কম হবে। ফলে জীবনদায়ী ওই ওষুধটির আকাল কমবে সারা দেশে।
আরও পড়ুন- জেফ বেজোসের আগেই মহাকাশে পাড়ি দিচ্ছেন এই কোটিপতি, জানুন তাঁর পরিচয়