বিশ্বাসে মিলায় বস্তু তর্কে বহুদূর- ভুত, প্রেত, আত্মা, ঈশ্বর এই সব কিছুর মধ্যে বিজ্ঞানকে খুঁজে পেতে চেয়েছিলেন অসংখ্য বিজ্ঞানী। কিন্তু তা অধরাই রয়ে গিয়েছে। যুগের পর যুগ কেটে গিয়েছে। উত্তর খুঁজে পাওয়া যায়নি অনেক কিছুরই। বিজ্ঞানী মানেই বিজ্ঞানই শেষ কথা। কিন্তু সত্যিই কি তাই? ঈশ্বর, যাকে কি না চোখে দেখা যায় না। তার মতো এক জিনিসকে বিজ্ঞানীরা কীভাবে দেখেন, ভেবে দেখেছেন কখনও? বিজ্ঞান মানেই যুক্তি ও বাস্তবতার উপর ভিত্তি করে নতুন এক আবিষ্কারের জন্ম দেয়। বিজ্ঞান গভীর রহস্য উদঘাটন করতে পারে। কিন্তু মানুষ কোনও কিছু চিন্তা করতে করতে ক্লান্ত হয়ে পড়লেই তখন তা বিশ্বাসের উপর ছেড়ে দেয়। আরও ভাল করে বললে, ঈশ্বরের উপর ছেড়ে দেয়। আর যে বিজ্ঞানীরা শত শত বছর ধরে পৃথিবীকে পাল্টে দিচ্ছেন বিজ্ঞান দিয়েই, তারা ঈশ্বর সম্পর্কে কী ভাবেন জানেন?
1. গ্যালিলিও গ্যালিলি (1564 – 1642)- জ্যোতির্বিজ্ঞানী এবং বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন, পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে ঘোরে। তার পিছনেও ছিল বিরাট এক বিজ্ঞান। এই আবিষ্কারের জন্য তাকে সমাজে ‘বিধর্মী’ বলে ঘোষণা করা হয়। আর সেই ঘোষণা করেছিল রোমান ক্যাথলিক চার্চ। কিন্তু সেই সময়ও গ্যালিলিও বলেছিলেন যে, “তিনি যা আবিষ্কার করেছিলেন তার পুরোটাই বিজ্ঞান।” গ্যালিলিও ঈশ্বর সম্পর্কে তার একটি লেখনিতে লিখেছেন, “আমি বিশ্বাস করি না যে, ঈশ্বর আমাদের ইন্দ্রিয়, যুক্তি এবং বুদ্ধিমত্তা দিয়েছেন। আর যদি দিয়েই থাকেন, তাহলে সেই বুদ্ধি ব্যবহার করা উচিত।”
2. অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (1879 – 1955)- অ্যালবার্ট আইনস্টাইন ইহুদি পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তিনি সবসময়ই ঈশ্বর-এর ধারণাকে মানতে নারাজ ছিলেন। ফলে কোনও রকম ধর্মীয় কিছুতে নিজেকে রাখতেন না। তবে তিনি কখনওই নিজেকে নাস্তিক বলেননি। আইনস্টাইন একটি প্রবন্ধে ঈশ্বর সম্পর্কে তাঁর মতামত দিয়ে লিখেছন, “আমাদের কাছে যা কিছুর অস্তিত্ব আছে, তা হল জ্ঞান। আর আমরা শুধু ঈশ্বরকে অনুভব করতে পারি। তাই আমাদের কাছে পুরোটাই রহস্যময়। আমার কল্পনাটা কিছুটা অন্যরকম। আমি মনে করি ঈশ্বর বলে কিছু নেই। ঈশ্বর আমাদের নিজেদের মধ্যে আছে।”
3. চার্লস ডারউইন (1809 – 1882)- চার্লস ডারউইন তার বিবর্তন তত্ত্বের জন্য পরিচিত। ঈশ্বরের প্রশ্ন উঠলেই, তিনি বলতেন, “এটা পুরোটাই একটা অনুভুতি। এতে কোনও বিজ্ঞান নেই। আর কোনওদিন তা বিজ্ঞান দিয়ে প্রমাণ করা সম্ভবও নয়। কিন্তু মানতে কষ্ট হয়, এত দুঃখকষ্টে ভরা পৃথিবী ঈশ্বর কীভাবে তৈরি করতে পারেন।”