Mysterious Glowing Spiral: আকাশে রহস্যময় ঘটনার জন্য আলাস্কার কম পরিচিতি নেই। মেরুজ্যোতি বা অরোরা বা নর্দার্ন লাইট চাক্ষুষ করার অন্যতম সেরা জায়গা হিসেবে বিবেচনা করা হয় এই আলাস্কাকেই। এখানকার মনোরম প্রাকৃতিক দৃশ্যও মানুষের মন ভুলিয়ে দেয়। সেই আলাস্কাতেই গত 15 এপ্রিল একটি রহস্যময় ছবি দেখা যায়। প্যাঁচানো এক অদ্ভুত গঠন আলাস্কার আকাশজুড়ে ফুটে ওঠে, যা বিজ্ঞানীদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। মেরুজ্যোতি নিয়ে গবেষণা করেন টোড সালাট নামের এক ব্যক্তি আলাস্কার আকাশে এই অদ্ভুত জিনিসটি চাক্ষুষ করেন গত 15 এপ্রিল। সে সময় তিনি মেরুজ্যোতিদের ছবি তুলছিলেন। বলললেন, “উত্তর দিগন্ত থেকে আমার দিকে আসা দূরবর্তী উজ্জ্বল আলোটি যখন আমি প্রথম দেখলাম, অত্যন্ত বিস্মিত হয়েছিলাম।”
সালাট তাঁর নিজের ওয়েবসাইটে এই অদ্ভুত জিনিসটির ছবি প্রকাশ করেছে। জানিয়েছেন, 2023 সালের জন্য উত্তর আলোর পূর্বাভাসটি যথেষ্ট ভাল দেখাচ্ছে, কারণ সৌরচক্র আরও উত্তপ্ত হতে চলেছে। মেরুজ্যোতি তখনই শুরু হয়, যখন সূর্য থেকে নির্গত চার্জযুক্ত কণা পৃথিবীর চৌম্বকক্ষেত্রের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়া করে। আলাস্কার ডেল্টা জাংশনের কাছে ডোনেলি ডোম এলাকা থেকে আকাশে এই অদ্ভুত সর্পিল আকারের বস্তুটির ছবিটি তুলেছিলেন সালাট। তাঁর কথায়, “আমি ভেবেছিলাম, কী যেন একটা আকাশে রয়েছে! বিস্মিত হতে আমার বেশ ভালই লাগছিল। কিন্তু রহস্যের সমাধানও হয়ে গেল মুহূর্তে।”
আসলে SpaceX Falcon-9 রকেট দ্বারা উৎপন্ন নির্গমনের কারণে এই প্যাঁচানো আকারটি দেখা গিয়েছিল। পুনর্ব্যবহারযোগ্য রকেটটি ট্রান্সপোর্টার 7 মিশন থেকে লঞ্চ হওয়ার ঠিক তিন ঘণ্টা পরে মেরু কক্ষপথে এই ছবিটি ধরা পড়ে। মহাকাশযানটি ক্যালিফর্নিয়া থেকে তার যাত্রা শুরু করেছিল। সংবাদমাধ্যম স্পেসওয়েদার ডট কমের কাছে সালাট বলেছেন, “আমি দুটি ক্যামেরা, ট্রাইপড সেটআপ নিয়ে উন্মত্তভাবে শুটিং করছিলাম। সাত মিনিটের জন্য এই অদ্ভুত দৃশ্য চাক্ষুষ করেছিলাম। কয়েক মুহূর্তের জন্য আমি যেন মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম।”
ট্রান্সপোর্টার-7 ছিল SpaceX-এর সপ্তম ডেডিকেটেড স্মলস্যাট রাইডশেয়ার প্রোগ্রাম মিশন, যা লঞ্চ করা হয় ক্যালিফোর্নিয়ার ভ্যানডেনবার্গ স্পেস ফোর্স বেসে স্পেস লঞ্চ কমপ্লেক্স 4E থেকে। মহাকাশযানটি কিউবস্যাটস, মাইক্রোস্যাটস, হোস্টেড পেলোড এবং অরবিটাল ট্রান্সফার যান সহ 51টি উপগ্রহ বহন করছিল। এই প্যাঁচানো আকারটি Falcon-9 রকেটের উপরের স্তর দ্বারা গঠিত হয়, যা সমুদ্রে দীর্ঘ অবতরণের সময় অপ্রয়োজনীয় জ্বালানি বের করে দেয়।
তবে এই প্রথম যে এমন সর্পিল আকার রাতের আকাশে ধরা পড়ল এমনটা নয়। গত 18 জানুয়ারি ভোরবেলা সুবারু-আসাহি স্টার ক্যামেরা দ্বারা আকাশে এটি শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল। একটি টাইমল্যাপস ভিডিয়োতে অবজ়ার্ভেটরিটি ক্যামেরার ভিউর বাঁ দিকে একটি বিন্দুর মতো আবির্ভাব হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই ওই অদ্ভুত আকৃতিটিকে নড়তে দেখা গিয়েছিল। তারপর ওই বিন্দুটি প্রচণ্ড চাপ থেকেই এই সর্পিল আকৃতির আকারের বস্তুটি বের করে দেয়, যা ধীরে ধীরে আকারে বাড়তেও থাকে।