BUDGET 2023: ক্ষুদ্র কৃষকদের দুঃখ-কষ্টের অবসান হয় না কেন? কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রীর কাছে কৃষকের কাতর আর্জি
কিষাণ ক্রেডিট কার্ড অনেক দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আজও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অনুমোদন পেতে আমার মতো কৃষকদের টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও, ব্যাঙ্কের কর্মীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে।
নির্মলা বোন,
সুপ্রভাত। আমি পারবিন্দর দেশওয়ালি। বুলন্দশহর জেলার ঠিক পরেই অবস্থিত একটি গ্রামে বসবাসকারী একজন কৃষক আমি। আমার খামারের ধারে বসে আমি সুনিতাকে তোমার কাছে এই চিঠি লিখতে অনুরোধ করেছি। সুনিতা আমার মেয়ে, সে দশম শ্রেণিতে পড়ে।
নির্মলা বোন, আজ, আমি খুবই বিষণ্ণ। লম্পি বলে একটি অসুখের ফলে আমার গরুটি মারা গিয়েছে। আমরা আদর করে ওকে শ্যামা বলে ডাকতাম। সন্ধ্যায় সে আমার সঙ্গে এই বেড়ার ধারে বসে বাড়ি যাওয়ার অপেক্ষায় থাকত। অনেক চিকিৎসা করেও ওকে আমরা বাঁচাতে পারিনি। মহাশয়া, আপনিই বলুন, আমার মতো ক্ষুদ্র কৃষকদের দুঃখ-কষ্টের অবসান হয় না কেন?
এ বছর ধান চাষে ভালো দাম পাওয়ার আশা ছিল। কিন্তু আমার সব স্বপ্ন ভেস্তে গেল! এই চিঠির সঙ্গে আমার ক্ষেতের ক্ষতির ছবিও পাঠাচ্ছি। এই ডুবে যাওয়া ধান কোনও বাজারে বিক্রি হয়নি। কিন্তু হয়তো আপনার অফিসাররা আপনাকে বলবেন যে কৃষকেরা তাদের ফসলের ভাল দাম পাচ্ছেন। দুধের দাম বেড়ে যাওয়ায় কৃষকেরা খুবই খুশি।
মহাশয়া, আপনার ফাইল অনুযায়ী গ্রামে হয়তো সবকিছু ঠিক আছে কিন্তু এই পরিসংখ্যান মিথ্যা, এই দাবি নেহাতই কাগুজে। যাই হোক, এই মুহূর্তে আমার জমিতে গমের বীজ বপনের কাজ শেষ হয়েছে। এ বছরও বাজারে সারের ঘাটতি রয়েছে। আপনারা লক্ষ লক্ষ কোটি টাকার ভর্তুকি ঘোষণা করেন, তারপরও আমি দামের চেয়ে বেশি মূল্য দিয়ে সার কিনি। এত বড় সরকার কি এই কালোবাজারি বন্ধ করতে পারবে না?
ওষুধ দামি, সার দামি। ডিজেলের দাম বেশি। তবে আবারও মাঠের প্রস্তুতি নিচ্ছি। রক্ত-ঘাম ঝরিয়েও যে টাকা হাতে আসবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। আপনি যদি এই চিঠিটি পড়ে থাকেন, হয়ত নিশ্চয়ই ভাবছেন যে আমি হয়তো ফসল বীমা সম্পর্কে জানি না। আপনি কি জানেন, কাগজে লেখা নিয়ম কৃষকদের ক্ষতির জন্য ক্ষতিপূরণ দিতে পারে না।
চলুন এখন বীমার অবস্থা দেখা যাক। কিষাণ ক্রেডিট কার্ড অনেক দিন ধরে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু আজও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের অনুমোদন পেতে আমার মতো কৃষকদের টাকা দিতে হচ্ছে। এছাড়াও, ব্যাঙ্কের কর্মীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে। ব্যাঙ্কে গেলে মনে হয় কোনও অপরাধ করে ফেলেছি।
কিষাণ সম্মান নিধির টাকা কখনওই যথেষ্ট ছিল না। এখন মূল্যস্ফীতির জেরে তো আমাদের নাভিঃশ্বাস হওয়ার জোগাড়। নির্মলা বোন, আপনার বাজেট কি আমাদের চাষের খরচ কমাতে পারে না? মূল্যস্ফীতি অনুযায়ী কি আমাদের ফসলের দাম বাড়তে পারে না?
আশা তো তাঁর কাছ থেকেই করা যায় যিনি সত্যিই সাহায্য করতে পারেন। আমার মেয়ে সুনিতাও বলছে নির্মলা আন্টি নিশ্চয়ই কিছু করবে। দয়া করে আমাদের নিরাশ করবেন না।
আপনার ভাই,
পারবিন্দর