Jalpaiguri News: পেট্রোল পাম্পের আলোতে পড়াশুনো!
বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই,তাই পেট্রোল পাম্পের আলোতে পড়াশোনা করে দুই খুদে পড়ুয়া।জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পাহাড়পুর মোড় সংলগ্ন বালাপাড়া জাতীয় সড়কের পাশে প্রত্যেক দিন সন্ধ্যার পর এভাবে পড়াশোনা করে এই পরিবারের দুই সন্তান।
বাড়িতে বিদ্যুৎ নেই,তাই পেট্রোল পাম্পের আলোতে পড়াশোনা করে দুই খুদে পড়ুয়া। জলপাইগুড়ি সদর ব্লকের পাহারপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন পাহাড়পুর মোড় সংলগ্ন বালাপাড়া জাতীয় সড়কের পাশে পেট্রোল পাম্প সংলগ্ন এলাকার দৃশ্য। প্রত্যেক দিন সন্ধ্যার পর এভাবে পড়াশোনা করে এই পরিবারের দুই সন্তান।পরিবারের বড় ছেলে রাজ তন্ত্র বর্তমানে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে। প্রথম শ্রেণী থেকেই এভাবে পড়াশোনা করে চলেছে। তার বোন রাখি তন্ত্র প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। তারও দাদার সঙ্গে পেট্রোল পাম্পেই হাতে খড়ি হয়েছে। জলপাইগুড়ি পাহাড়পুর গ্রামপঞ্চায়েতের বাসিন্দা আপন তন্ত্র। আজ থেকে দশ বছর আগে তার বাড়িতে বিল এসেছিল দেড় লাখ টাকা। দিন আনি দিন খাই পরিবার বিল মেটাতে না পারায় বিদুৎ সংযোগ কেটে দেয় বিদ্যুৎ দপ্তরের কর্মীরা। এরপর মানসিক অবসাদে আত্মঘাতী হন আপন তন্ত্রের বাবা নিরেন তন্ত্র। এরপর একে একে কেটে যায় দশ বছর। দিন আনি দিনখাই পরিবারের কেরোসিন কিনতেও হিমসিম খেতে হয়। তাই কার্যত অন্ধকারে ডুবে থাকে পরিবার। কিন্তু এর মধ্যেও থেমে নেই বাড়ির দুই সন্তানের পড়াশোনা। তাদের ছেলে মেয়ের পড়াশোনা চালিয়ে যেতে একপ্রকার বাধ্য হয়ে রাস্তার পাশে পেট্রল পাম্পের লাইটের আলোতেই খোলা আকাশের নিচে এককোনে বসে পড়াশুনা চালিয়ে যাচ্ছেন দুই খুদে।এইভাবে দু এক বছর নয়। গত দশ বছর ধরে এভাবেই পড়াশোনা চালাচ্ছে ছোট্ট দুই পড়ুয়া।
এখন একটাই প্রশ্ন যখন অসহায় মানুষের জন্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প চালু হয়েছে তখন এই পরিবারের সন্তানদের এখনও রাস্তার আলোয় পড়াশোনা করতে হয় কেনো। সদ্য পঞ্চায়েত ভোট সমাপ্তি হলো। এত বছর ধরে কারো চোখে পড়লো না এ দৃশ্য। প্রশাসন, পঞ্চায়েত বা প্রধান কোনভাবে কি এই পরিবারটির খোঁজখবর নিয়ে পাশে দাঁড়াতে আসেন নি। আপন তন্ত্রের দাবি তার পিতা নিরেন তন্ত্র অতিরিক্ত বিদ্যুতের বিল মেটাতে না পারায় আত্মহত্যা করেছিলেন।বিদ্যুৎ দপ্তরের পক্ষ থেকে বিগত প্রায় ১০ বছর আগে বাড়ির বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। তারপর থেকেই দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর কুপির আলোতেই শুধুমাত্র রান্নাবান্না খাওয়া দাওয়া। সামান্য দিনমজুর আপন তন্ত্রের এক ছেলে ও দুই মেয়েকে পড়াশোনা করানোর জন্য বাড়িতে আলো না থাকার অভাবে রাস্তার ধারে পেট্রোল পাম্পের আলোয় পড়াশোনা করায় বলে জানান তিনি।
স্ত্রী সুধা তন্ত্র বলেন দশ বছর আগে তাদের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। এরপর থেকে তারা ছেলে মেয়েদের পড়াশোনা জন্য এভাবেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।ছেলে রাজ তন্ত্র জানায় এভাবে পড়াশোনা করতে তার খুব কষ্ট হয়। কেউ যদি সাহায্য করে তাদের বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ করিয়ে দেয় তবে তাদের খুব উপকার হয়। তার পড়াশোনা করতে সুবিধা হয়। পেট্রোল পাম্পের কর্মী অনুপ দেবনাথ বলেন আমি দীর্ঘদিন ধরে দেখে আসছি এই দুই ভাইবোন আমাদের পেট্রোল পাম্পের আলোতে পড়াশোনা করে। বৃষ্টি হলে বাড়ি চলে যায়। বৃষ্টি কমলে আবার ফিরে আসে।দেখে খুব খারাপ লাগে। কার্তিক দাস নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন এই পরিস্থিতি দেখে খুব খারাপ লাগলো।স্থানীয় পঞ্চায়েত বা প্রধানের এগিয়ে আসা উচিৎ ছিল। পাহাড়পুর গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃনমূলের উপপ্রধান বেনুরঞ্জন সরকার জানান, এই সময় দাঁড়িয়ে এ ধরনের ঘটনা কোন ভাবেই কাম্য নয়। যদিও এই পরিবারের তরফে আমাদের জানানো হয়নি।জানানো হলে আমরা বিদ্যুৎ দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা করার চেষ্টা করতাম। আপনাদের কাছ থেকে জানলাম খুব শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।