India Defence Ministry: অস্ত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম রফতানিতে ভারত গ্লোবাল প্লেয়ার হয়ে উঠছে!

Defence Minister: আমরা ডিফেন্সে যত ইমপোর্ট সাবস্টিটিউশন করতে পারব। তত বাঁচবে বিদেশি মুদ্রা। সরকারি কোষাগারের ওপর চাপ কমবে। সে টাকা সাধারণ মানুষের জন্য নানা প্রকল্পে খরচ করা যাবে। ফলে এক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক পথেই এগোচ্ছি বলতে পারি। আর সেই পথে এগোতে গিয়ে ভারতীয় সেনার শক্তিও বাড়ছে। আর সেটা জরুরিও। কেন জানেন। রিপোর্ট বলছে যে অদূর ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে বড় আকারে সংঘাত বাধবেই।

India Defence Ministry: অস্ত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম রফতানিতে ভারত গ্লোবাল প্লেয়ার হয়ে উঠছে!
| Updated on: Aug 23, 2024 | 10:30 PM

অস্ত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম রফতানিতে ভারত গ্লোবাল প্লেয়ার হয়ে উঠছে! তবে, প্রতিরক্ষামন্ত্রক যে লেটেস্ট তথ্য দিয়েছে তা কিন্তু নতুন করে চমকে দেওয়ার মতো। ভারত এই মুহূর্তে ৯০টি দেশে অস্ত্র এবং যুদ্ধ সরঞ্জাম রফতানি করছে। ইউরোপ ও পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধ চলায় বহু দেশ তাদের প্রতিরক্ষা নিয়ে চিন্তিত। যা কিনা ভারতের রফতানি বাড়াতে সাহায্য করেছে। এতো না হয় হলো। কিন্তু, আমি যদি বলি এই মুহূর্তে ভারতীয় যুদ্ধ সরঞ্জামের সবচেয়ে বড় ক্রেতা আমেরিকা। ভারতের টোটাল ডিফেন্স এক্সপোর্টের প্রায় ৫০ পার্সেন্ট যাচ্ছে মার্কিন মুলুকে। শুনে অবাক হলেন তো। অবাক হলেও এটাই সত্যি। আমেরিকার বড় বড় ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারাররা বিভিন্ন ভারতীয় সংস্থার সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে কাজ করছে। ভারতের মাটিতেই হচ্ছে উত্‍পাদন। এরপর তা পাড়ি দিচ্ছে আমেরিকায়। উদাহরণ দিলে বুঝতে সুবিধা হবে। বোয়িংয়ের সঙ্গে টাটাদের চুক্তির পর তৈরি হয় যৌথ সংস্থা Tata Boeing Aerospace Ltd. যাদের হায়দরাবাদের কারখানায় এখন তৈরি হচ্ছে অ্যাপাচে হেলিকপ্টারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ। একইভাবে, টাটাদের প্রতিরক্ষা সংস্থা Tata Advanced Systems Limited-এর সঙ্গে লকহিড মার্টিনের চুক্তি সই হয়েছে। যার জেরে লকহিড মার্টিনের তৈরি নানা সামরিক বিমানের একাধিক যন্ত্রাংশও এখনও ভারতে তৈরি হয়ে আমেরিকায় রফতানি হচ্ছে। দেখুন, ২০০১ সালের মে মাসে ১ম প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উত্‍পাদনে বেসরকারি সংস্থাগুলোকে লাইসেন্স দেওয়া শুরু হয়। এখন সারা দেশে প্রায় ৪০০ বেসরকারি সংস্থা ডিফেন্স ম্যানুফ্যাকচারার হিসাবে কাজ করছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রকের তথ্য বলছে গত এক দশকে অস্ত্র ও প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি প্রায় ৩০ গুণ বাড়িয়েছে ভারত। সরকারি নীতি বদলের ফল যে পাওয়া যাচ্ছে তা তো বুঝতেই পারছেন। চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ৩ মাসেই ভারত প্রায় ৭ হাজার কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করেছে। গত অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকে যেটা ছিল ৪ হাজার কোটি টাকার কিছু কম। মানে রেকর্ড আটাত্তর শতাংশ বৃদ্ধি। আর এই রফতানির ৪০ শতাংশই এসেছে প্রাইভেট প্লেয়ারদের হাত ধরে। এর সঙ্গেই আপনাদের জানিয়ে রাখি, গত অর্থবর্ষে ভারতের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানির পরিমাণ ২১ হাজার কোটি টাকার ল্যান্ডমার্ক ছাড়িয়ে গিয়েছে। তার আগের অর্থবর্ষের তুলনায় যা কিনা প্রায় ৩৩ শতাংশ বেশি। এই নিয়ে পরপর ৩ বছর আমাদের ডিফেন্স এক্সপোর্ট বাড়ল। আমরা এখন বিশ্বের top 25 arms exporters country-র তালিকায় ঢুকে পড়েছি। ভারতের লক্ষ্য এই অর্থবর্ষেই প্রতিরক্ষা রফতানির অঙ্ক ৩৫ হাজার কোটি টাকায় নিয়ে যাওয়া। আগামী ৫ বছরে টার্গেট ৫০ হাজার কোটি টাকার জিনিস রফতানি করা।

শুধুমাত্র ডিফেন্স পিএসইউগুলোর পক্ষে এই টার্গেট ছোঁয়া কঠিন। তাই প্রাইভেট প্লেয়ারদেরও উত্‍সাহ দেওয়া হচ্ছে। উত্তরপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে তৈরি হয়েছে defence industrial corridor. টাটা-মাহিন্দ্রা-রিলায়েন্সের মত বড় সংস্থাগুলো বাজারে থাকলেও, এই মুহূর্তে প্রতিরক্ষা রফতানিতে ১ নম্বরে আছে বেঙ্গালুরুর সংস্থা Indo-MIM. তারা পঞ্চাশের বেশি দেশে রফতানি চালিয়ে যাচ্ছে। সারা দেশে একশোর বেশি ভারতীয় সংস্থা বিদেশে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম রফতানি করছে। যার মধ্যে রয়েছে হ্যালের তৈরি ডর্নিয়ার বিমান। ব্রহ্মস মিসাইল। পিনাকা রকেট লঞ্চার। আর্টিলারি গান। রেডার। ভারী সামরিক যান। নানারকম বন্দুক। বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট। ড্রোন। টর্পেডো। আরও কতো কী। মূলত আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলো ভারতীয় অস্ত্রের ক্রেতা। ফিলিপিন্সের সঙ্গে সম্প্রতি ব্রহ্মোস ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহের চুক্তি করেছে ভারত। সাবেক সোভিয়েত দেশ আর্মেনিয়াকে কামান আর এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বিক্রি করা হবে। মালয়েশিয়াকে তেজস যুদ্ধবিমান দেওয়া নিয়ে কথা চলছে। পুরনো ক্রেতাদের মধ্যে রয়েছে মায়ানমার। নতুন ক্রেতাদের তালিকায় ঢুকে পড়েছে ইজরায়েলের মত দেশও। ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এখন সবচেয়ে বড় বিপদ চিন। তাই চিনের প্রতিবেশী আসিয়ানের দেশগুলোয় অস্ত্র রফতানিতে বেশি মন দিয়েছে সাউথ ব্লক। গত আর্থিক বছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ ১ লক্ষ ২৬ হাজার কোটি টাকার ডিফেন্স ইকুয়েপমেন্টস তৈরি হয়েছে। যা আগের বছরের তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ বেশি। যার ২০ শতাংশ আমরা বন্ধু দেশগুলোকে রফতানি করছি। এবছর টার্গেট ১ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা। আগামী ৫ বছরে সরকারের টার্গেট দেশে ৩ লক্ষ কোটি টাকার প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম তৈরি করা। আমরা ডিফেন্সে যত ইমপোর্ট সাবস্টিটিউশন করতে পারব। তত বাঁচবে বিদেশি মুদ্রা। সরকারি কোষাগারের ওপর চাপ কমবে। সে টাকা সাধারণ মানুষের জন্য নানা প্রকল্পে খরচ করা যাবে। ফলে এক্ষেত্রে আমরা ইতিবাচক পথেই এগোচ্ছি বলতে পারি। আর সেই পথে এগোতে গিয়ে ভারতীয় সেনার শক্তিও বাড়ছে। আর সেটা জরুরিও। কেন জানেন। রিপোর্ট বলছে যে অদূর ভবিষ্যতে চিনের সঙ্গে বড় আকারে সংঘাত বাধবেই।

Follow Us: