Top Secret File, The Himalayas: হিমালয়ে জমছে ‘বাক্স রহস্য’

Indian calamities: চামড়ার অসুখ, দৃষ্টিশক্তি কমে আসা, সর্বক্ষণ গায়ে জ্বালা-জ্বালা ভাব অনুভূত হচ্ছে। বেশ কয়েকজন ক্যান্সারেও আক্রান্ত হয়েছেন। কেন এমন হচ্ছে? শারীরিক পরীক্ষার পরে দেখা যায় যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের জেরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই মানুষগুলো। তবে, ওই এলাকায় কীভাবে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ালো, তা স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লুটোনিয়াম ক্যাপসুল লিক করে এমনটা হতে পারে। ওই ক্যাপসুল ঠাণ্ডায় দেড়শো বছরও থাকতে পারে। তবে এটা এখনও স্রেফ একটা সম্ভাবনা। এখনই এবিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না।

Top Secret File, The Himalayas: হিমালয়ে জমছে ‘বাক্স রহস্য’
| Edited By: | Updated on: Aug 17, 2024 | 8:42 PM

হিমালয়ের বুকে হারিয়ে যাওয়া বাক্স রহস্য। ঘটনার ঘনঘটা। তবে, তা কোনও সরকারি নথিতে লেখা নেই। থাকলেও সেটা আছে টপ-সিক্রেট ফাইল হিসাবে। এর বাইরে সরকারি স্তরে কোথাও এনিয়ে এক কুচি তথ্যও আপনি পাবেন না। প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন মোরারজি দেশাই সংসদে এই ঘটনার কথা জানিয়েছিলেন। কিন্তু ডিটেলস দেননি। কী এমন হয়েছিল যা নিয়ে এত রাখঢাক? সেটাই আপনাদের সামনে তুলে ধরছি। ষাটের দশকের মাঝামাঝি। দুনিয়ার বড় দেশগুলোর মধ্যে তখন পরমাণু শক্তিধর হয়ে ওঠার প্রবল প্রতিযোগিতা। আমেরিকা উদ্বিগ্ন। এই বুঝি চিন পরমাণু অস্ত্র তৈরির খুব কাছাকাছি পৌঁছে গেল। ভারতের আশঙ্কা কিছু কম নয়। সেটা ১৯৬৫ সাল। ৩ বছর আগেই চিনের সঙ্গে যুদ্ধে হারতে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থাগুলো নিয়মিত খবর পাঠাচ্ছে যে চিন যে কোনও দিন পরমাণু বোমা পরীক্ষা করতে পারে। ভারতের পরমাণু প্রকল্প তখন শুরুই হয়নি। সেই সময়ে এক যৌথ অপারেশনে হাত মিলিয়েছিল আমেরিকার সিআইএ এবং ভারতের ইনটেলিজেন্স ব্যুরো। কাজটা ছিল নন্দাদেবীর চূড়ায় প্লুটোনিয়াম বেসড রেডিওটোপ থার্মোইলেকট্রিক জেনারেটর বা পিআরটিজে ইনস্টল করা। সহজ কথায় একটা বেশ বড় আকারের লোহার বাক্স। চিন হিমালয়ের কোথাও পরমাণু বোমা পরীক্ষা করলে তা ওই থার্মোইলেকট্রিক বক্সে ধরা পড়বে। মানে চিনের তরফে সেরকম কোনও চেষ্টা হলে আমেরিকা ও ভারতের কাছে সঙ্গে সঙ্গে খবর পৌঁছবে। ১৯৬৫ সালের অক্টোবর, সম্ভবত ১০ অক্টোবর একদল অভিযাত্রী নন্দাদেবীর উদ্দেশ্যে রওনা দেন। ৮ জনের টিম। সকলেই ভারত ও আমেরিকার দুঁদে গোয়েন্দা এবং বিজ্ঞানী। সামিটে অভিজ্ঞ পর্বতারোহীরও প্রয়োজন। তাই দুই পর্বতারোহীও দলে ছিলেন। নন্দাদেবী ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ শৃঙ্গ। এর বাইরেও তার একটা পরিচয় আছে। কে-টু-র পর অন্যতম কঠিন ও চ্যালেঞ্জিং মাউন্টেন রুট বলা হয় নন্দাদেবীকে। তো সেই পাহাড়ের মাথায় উঠতে গিয়ে অভিযাত্রীদের পদে পদে বাধার মুখে পড়তে হয়। তুষারঝড়ে দলের এক সদস্য অল্পের জন্য প্রাণে বাঁচেন। বাকিরা বুঝে যান, পাহাড়ের চূড়ায় মেশিন ইনস্টল করা সম্ভব হবে না। ফিরে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ। আসল চমকটা অপেক্ষা করে ছিল ফেরার পরে। ১৯৬৬ সালের মে মাসে দিল্লি ফেরার পরে বোঝা যায়, টিমের সঙ্গে থাকা অর্ধেক যন্ত্রপাতিই মিসিং। কোথায়, কীভাবে? কেউ জানে না।

ওই দলটা প্রায় ২৫টা ব্যাগে যন্ত্রপাতি ভরে নিয়ে গিয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, পাহাড় চূড়ায় সেগুলোকে অ্যাসেম্বলিং করে বসানোর। কিন্তু প্রায় ৬০ শতাংশ যন্ত্রাংশ আর ফেরত আসেনি। প্লুটোনিয়াম ক্যাপসুলের স্টক, বিপজ্জনক সব রাসায়নিক, জেনারেটর চালানোর জন্য পরমাণু জ্বালানি। উধাও হওয়া জিনিসের লিস্ট দেখলে পিলে চমকে উঠবে। অন্যভাবে বলতে গেলে পরমাণু বোমার যাবতীয় মশলা, যা কয়েক মিনিটের মধ্যেই কয়েকশো কিলোমিটার এলাকায় চরম বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। এত বিপজ্জনক সব জিনিসপত্র কোথায় গেল, তা আর কখনই জানা যায়নি। প্রথমবার গোয়েন্দা দলের সঙ্গে যাওয়া ৮ শেরপার মধ্যে প্রত্যেকে ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। এমন ক্যান্সার যা কিনা পরমাণু বিকিরণের মতো তেজস্ক্রিয়তা থেকেই হয়। এই ঘটনার পর বেশ কয়েকবার নন্দাদেবীতে অভিযাত্রী দল পাঠিয়েছে সিআইএ, মার্কিন সেনা। তারা কিছুই খুঁজে পায়নি। যে গোয়েন্দারা অভিযানের শরিক ছিলেন, তাঁদের কী পরিণতি হয়েছিল, সে ব্যাপারেও কোনও তথ্য নেই। তা হলে বিপজ্জনক, প্রাণঘাতী এসব জিনিসগুলো গেল কোথায়? আর এই ২০২৪ সালের অগাস্টেই বা সেসব প্রসঙ্গ কেন? উঠছে কেননা, উত্তরাখণ্ডে লাগাতার প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের সঙ্গে ১৯৬৫ সালের এই ঘটনার যোগ দেখছেন বিজ্ঞানীরা। আর সেটা স্পষ্ট হচ্ছে টানা কয়েক বছরের গবেষণার পর। চামোলির বাসিন্দাদের একটা অংশের অভিযোগ ২০২১ এবং ২০২২ সালের ধস ও বন্যার পর তাঁদের শরীর ভেঙে পড়েছে। চামড়ার অসুখ, দৃষ্টিশক্তি কমে আসা, সর্বক্ষণ গায়ে জ্বালা-জ্বালা ভাব অনুভূত হচ্ছে। বেশ কয়েকজন ক্যান্সারেও আক্রান্ত হয়েছেন। কেন এমন হচ্ছে? শারীরিক পরীক্ষার পরে দেখা যায় যে তেজস্ক্রিয় বিকিরণের জেরেই অসুস্থ হয়ে পড়েছেন এই মানুষগুলো। তবে, ওই এলাকায় কীভাবে তেজস্ক্রিয়তা ছড়ালো, তা স্পষ্ট নয়। বিজ্ঞানীরা বলছেন, প্লুটোনিয়াম ক্যাপসুল লিক করে এমনটা হতে পারে। ওই ক্যাপসুল ঠাণ্ডায় দেড়শো বছরও থাকতে পারে। তবে এটা এখনও স্রেফ একটা সম্ভাবনা। এখনই এবিষয়ে নিশ্চিত করে কিছুই বলা যাবে না।

Follow Us: