Sundarbans News: স্বপ্ন দেখাচ্ছেন অর্ণব
জীবনের সব বাধা কাটিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সুন্দরবনে বেড়ে ওঠা বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক। অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে তাঁর শারিরীক প্রতিবন্ধকতাও। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর দু'নম্বর ব্লকের চাপলার বাসিন্দা বছর পঁয়তিরিশের অর্ণব হালদার। এলাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতায় বাঁধা পেয়ে বছর খানেক আগে গ্রামেরই স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিয়েছিলেন।
জীবনের সব বাধা কাটিয়ে দিনবদলের স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সুন্দরবনে বেড়ে ওঠা বিশেষভাবে সক্ষম এক যুবক। অদম্য জেদের কাছে হার মেনেছে তাঁর শারিরীক প্রতিবন্ধকতাও। তিনি দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার মথুরাপুর দু’নম্বর ব্লকের চাপলার বাসিন্দা বছর পঁয়তিরিশের অর্ণব হালদার। এলাকার একটি স্কুলে শিক্ষকতায় বাঁধা পেয়ে বছর খানেক আগে গ্রামেরই স্কুলে শিক্ষকতার কাজে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর প্রত্যেক মাসের মাইনে থেকে কিছু কিছু জমানো অর্থ ব্যায় করে স্কুলেই গড়ে তুললেন ডিজিটাল ক্লাসরুম। এবার থেকে আর পাঠ্যপুস্তের বইয়ে মুখ গুঁজে না থেকে অডিও ভিস্যুয়াল পদ্ধতিতে পড়াশুনো করতে পারবে পড়ুয়ারা।
জায়ান্ট স্ক্রিনের মাধ্যমে পঠন পাঠন চালাবেন স্কুলের শিক্ষকরা। ফলে এই ডিজিটাল ক্লাস রুম পেয়ে খুশি স্কুলের খুঁদে পড়ুয়ারা।আর পাঁচটা শিক্ষককের মত অর্ণবের শিক্ষকতা করাটা সহজ ছিল না। ২০১৭ সালের মার্চ মাসে রায়দিঘির রায়মনিখাকি এফপি স্কুলে যোগ দিয়ে অভিভাবকদের বাঁধার পাশাপাশি নানান রকম কটুক্তির মুখে পড়তে হয়েছিল তাকে। শারীরিক গঠন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন সেখানকার বড় অংশের অভিভাবকরা। অসহায় অবস্থায় ক্রমাগত সকলকে বোঝানোর চেষ্টা করেছিলেন, তিনি পারবেন পড়াতে। কিন্তু কেউ তাঁর কোন কথাই শুনতে চাননি। উল্টে অভিভাবকদের লাগাতার অসহযোগিতায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিলেন তিনি।
তবে দীর্ঘ টালবাহানার পর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় অর্ণব বছর খানেক আগে স্কুল বদল করে চলে আসেন চাপলা নিম্ন বুনিয়াদি বিদ্যালয়ে। এই স্কুলেরই প্রাক্তণ ছাত্র ছিলেন তিনি। বর্তমানে নিজের স্কুলকে ডিজিটাল স্কুল হিসাবে গড়ে তুলেছেন। প্রতিবন্ধী হওয়ার কারণে এতদিন যারা কটুকথা শুনিয়েছেন, আজ তাদের অনেকেই তাঁর পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন অর্ণব। বয়স যখন ১২ বছর আচমকা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিসে আক্রান্ত হয়ে হাঁটাচলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেন। এমনকি হাতেও জোর পান না। গলার আওয়াজ ক্ষীণ থাকায় ল্যাপেলের মাধ্যমে সাউন্ড সিস্টেমে গলার ভয়েস বাড়িয়ে স্কুলের পঠন পাঠন চালান। বর্তমানে স্কুলের ছাত্রছাত্রী সংখ্যা তিনশোর কাছাকাছি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত এলাকার এই স্কুলে ডিজিটাল ক্লাসরুম গড়ে তোলায় অর্ণবের প্রশংসায় পঞ্চমুখ সকলে। নিজের লক্ষ্যে অবিচল অর্ণব জানান, ‘হাঁটাচলা করতে পারি না তো কি হয়েছে, আমার মগজই আমার হাতিয়ার।’ তাঁর স্বপ্ন স্কুলটিকে শিশুবান্ধব স্কুল হিসাবে গড়ে তোলা। সেই লক্ষ্যে তিনি একদিন না একদিন পৌঁছাবেন বলে আশাবাদী।