5

Durga Puja 2023: পুজোর কাজে পড়ুয়ারা

বাড়তি উপার্জনের জন্য পুজোর মন্ডপ তৈরিতে ব্যবহৃত নানা উপকরণ তৈরি করছেন স্কুল কলেজ পড়ুয়ারা। পুজোর আগে হাতের কারুকার্য করে বাড়তি উপার্জন করছেন গৃহবধূরাও। বালুরঘাট শহরের ব্রীজকালি এলাকায় গত এক মাসের বেশি সনয় ধরে হাতের নানা কাজ করছেন প্রায় ৬০ জন।

| Edited By: | Updated on: Sep 12, 2023 | 8:28 PM

বাড়তি উপার্জনের জন্য পুজোর মন্ডপ তৈরিতে ব্যবহৃত নানা উপকরণ তৈরি করছেন স্কুল কলেজ পড়ুয়ারা। পুজোর আগে হাতের কারুকার্য করে বাড়তি উপার্জন করছেন গৃহবধূরাও। বালুরঘাট শহরের ব্রীজকালি এলাকায় গত এক মাসের বেশি সনয় ধরে হাতের নানা কাজ করছেন প্রায় ৬০ জন। শহরে এই সংখ্যা কয়েকশো। যারা সকলেই মহিলা। দিনরাত এক করে কাজ করছেন তারা। এই কাজ করে দিনে ২৫০ – ৩০০ টাকা করে উপার্জন করেন মহিলারা। এই কাজে বহু কলেজ পড়ুয়ারা রয়েছে। যারা পড়ার খরচের পাশাপাশি পুজোর জামা কাপড় কেনার টাকা এই কাজ করে জোগার করছেন। অন্যান্য বারের তুলনায় এবারে কলেজ পড়ুয়াদের সংখ্যা অনেকটাই বেশি। যারা পড়াশোনার ফাঁকে এই কাজ করছেন। কথায় আছে বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বন। সেই তেরো পর্বের মধ্যে বাঙালিদের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপূজা। পূজার মরসুম আশা মানেই সংসারে একটু বাড়তি অর্থের প্রয়োজন। সে তার নিজের পোশাকের জন্যই হোক বা প্রিয়জনকে উপহার দেওয়া। আর এই বাড়তি অর্থ উপার্জনের জন্য পূজোর আগে বালুরঘাট শহর সহ শহর লাগোয়া পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলির মহিলারা বিভিন্ন ডেকোরেটরসের কাছে হাতের কাজ করছেন। মূলত এই হাতের কারুকার্য গুলি বিভিন্ন পুজো মন্ডপে লাগানো হবে। বর্তমানে দিন রাত এক করেই কাজ করছেন মহিলারা। বালুরঘাট শহর সহ জেলার বড় বড় পূজা মন্ডপ গুলির সজ্জার জন্য বিভিন্ন ধরনের নকশা করা হয়। সবজির বীজ, পুথি বা পাতা দিয়ে নানা রকমের ডিজাইন তৈরি করা হয়৷ যেগুলি মূলত শোলার উপর লাগানো হয়। পুজো মন্ডপের মূল কাজ পুরুষরা করলেও কারুকার্যের কাজ সাধারণত মহিলারাই করে থাকেন। আর এই হাতের কাজে নিয়োগ করা হয় মহিলাদের। এই কাজ সারা বছরে পুজোর আগেই শুধু করতে পারেন। কেউ কলেজের ক্লাস শেষ করে, কেউবা পরিবার সামলে ছেলেমেয়েকে স্কুলে দিয়ে বাড়তি সময়টা নষ্ট না করে এই পুজো মন্ডপের বাইরে বা ভেতরের কারুকার্যের কাজ করেন। এতে যা উপার্জন হয় তা দিয়ে পুজোর হাত খরচ হয়ে যায়। কেউবা আর্থিকভাবে সাহায্য করেন তার পরিবারকে। কখনো ঘন্টা ভিত্তিক চুক্তিতে কখনো বা হাজিরার চুক্তিতে কাজের টাকা দিয়ে থাকেন ব্যবসায়ীরা। এদের কি রকমের নকশা হবে তা বলে দেওয়া হয়৷ এবং তার সব রকম উপকরণ দেওয়া হয়। বালুরঘাট শহরে ব্রিজ কালি, উত্তামশা, সাহেব কাছাড়ি, পাওয়ার হাউস সর্বত্রই বড় ডেকোরেটর ব্যবসায়ীদের ঘর, গোডাউনে বর্তমানে এই কাজ চলছে। সর্বত্রই ব্যস্ততা তুঙ্গে। পুজো মন্ডপকে সুন্দরভাবে সাজিয়ে তুলতে যে সুদক্ষ কাজ দর্শনার্থীরা দেখেন তার পিছনে থাকেন এই সমস্ত মহিলা শিল্পীরাই। কারণ তারাই পারেন নিজেদের হাতের দক্ষতায় নিখুঁতভাবে তা সাজিয়ে তুলতে। সেভাবে প্রথাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ তাদের নেই বললেই চলে। সুদূর মেদিনীপুর কিংবা অন্যান্য জায়গা থেকে মূল শিল্পীরা আসেন পূজোর প্রায় তিন মাস আগে। সেই সমস্ত প্রশিক্ষকরা এসে তারাই এই পরিকল্পনাগুলি করে কর্মীদের বুঝিয়ে দেন। সেই মতোই চলে মন্ডপ শয্যার কাজ। এবিষয়ে বালুরঘাটের কলেজ পড়ুয়া রত্না সরকার বলেন, গত চার পাঁচ বছর ধরে এই কাজ করি৷ পড়াশোনার ফাঁকে ফাঁকে এই কাজ করি। এথেকে যা উপার্জন করি পুজোর আগে বাড়তি উপার্জন হয়। পাশাপাশি পরিবারকেও আর্থিক ভাবে সহযোগিতা করতে পারি। আর এই কাজ করতে ভাল লাগে। বালুরঘাটের গৃহবধূ মীনাক্ষী রায় বলেন, সারা বছর এই কাজ করি। অন্য সময় তেমন কাজ থাকে না। তবে পুজোর আগে খুব চাপ থাকে। এই কাজ করে সংসার চলে। পুজোর সময় বাড়তি কাজ করলে বাড়তি উপার্জন হয়। বিভিন্ন জায়গা থেকে কাজের অর্ডার আসে। সেই মত কাজ করি। ঘন্টাভিত্তিক বা হাজিরা চুক্তিতে কাজ বেতন পাই। অন্যদিকে এবিষয়ে প্রশিক্ষক পঞ্চানন মাইতি বলেন, গত জুলাই মাস থেকে কাজ শুরু হয়েছে। আমার এখানে সব মিলিয়ে ৫৬ মহিলা বর্তমানে কাজ করছে৷ তাদের কেমন কাজ করতে হবে তা বলে দেওয়া হয়। এবং তারা দক্ষতার সঙ্গে কাজ করেন। বর্তমানে বিভিন্ন ধরনের বীজ দিয়ে মন্ডপ সজ্জার নকশা তৈরি করা হচ্ছে।

Follow Us: