Konnagar News: গোঁফ দিয়ে টোটো টানেন!
"গোঁফকে বলে তোমার আমার–গোঁফ কি কারো কেনা ? গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা ।" কবি সুকুমার রায় এর গোঁফ চুরি কবিতা ছোট বেলায় আমরা অনেকেই পড়েছি। তবে এক্ষেত্রে গোঁফ চুরি না হলেও গোঁফের জন্যই তার পরিচিতি।
“গোঁফকে বলে তোমার আমার–গোঁফ কি কারো কেনা ? গোঁফের আমি গোঁফের তুমি, তাই দিয়ে যায় চেনা ।” কবি সুকুমার রায় এর গোঁফ চুরি কবিতা ছোট বেলায় আমরা অনেকেই পড়েছি। তবে এক্ষেত্রে গোঁফ চুরি না হলেও গোঁফের জন্যই তার পরিচিতি। তবে সুকুমার রায় পড়েননি তিনি। ছাপোসা শান্ত স্বভাবের মানুষটির শখ গোঁফ রাখা। তাকে কেউ কিছু বললেও সে কথায় তার কোন তাপ উত্তাপ নেই তার। বরং উৎসাহ পান তিনি। হুগলির কানাইপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশোক মাহাতো। এলাকার লোকজন তাকে চেনেন গোঁফ ওয়ালা নামে। তার গোঁফ যেমন তার পরিচিতি তেমনি গোঁফ তার এক প্রকার শক্তি ও বটে। তাই জন্যই তো গোঁফ দিয়ে একের পর এক করনামা করে আসছেন বছর ৫৫ এর অশোক।
যুবক বয়স থেকেই তার শখ ছিল গোঁফ রাখার। গোঁফের জন্য স্ত্রী এর সাথে একাধিক ঝগড়াও হয়েছে। তবে নিজের শখ মেটাতে সব কিছু কে উপেক্ষা করে এগিয়ে চলেছেন এলাকার গোঁফদা ওরফে অশোক মাহাতো। পেশায় তিনি একজন টোটো চালক। তবে তার গোঁফের কেরামতির দেখলে অবাক হতে হয়। গোঁফ দিয়েই তিনি তুলে ফেলছেন বাটখারা, ইট, গোঁফ দিয়েই টেনে আনছেন টোটো গাড়ি। যা দেখে স্তম্ভিত এলকার মানুষজন।
অশোক মাহাতো প্রথমে তার গোঁফ দিয়ে দুইটি এক কেজির বাটখারা চাগিয়ে তোলেন। পরবর্তীতে বাটখারার বদলে জায়গা নেয় দুইটি আস্ত ইট। যে ইটের ওজন প্রায় ১০ কেজির কাছাকাছি। সফলভাবে দুটি ইট গোঁফ দিয়ে চাগিয়ে তোলার পর রাউন্ড ৩ । এবারের লক্ষ্য গোঁফ দিয়ে টোটো টানা। গোঁফের মধ্যে দড়ি বেঁধে অনায়াসে একটি টোটোকে টেনে নিয়ে চলে যেতে সক্ষম হন অশোক বাবু। পরবর্তীতে আরেকটু কঠিন করার জন্য টোটোর মধ্যে একজন লোককে বসিয়ে তাকেও টেনে নিয়ে এগিয়ে যেতে সক্ষম হন তিনি। গোঁফ দিয়ে ওয়েট লিফটিং একেবারে নজিরবিহীন ঘটনা ঘটিয়ে ফেললেন হুগলির কোন্নগরের কানাইপুর পঞ্চায়েতের বাসিন্দা অশোক মাহাতো।
স্থানীয় বাসিন্দা কৃষ্ণা সাহা বলেন, আগে কোনদিনও দেখিনি ,এই প্রথম দেখলাম গোঁফ দিয়ে টোটো টানা যায়। শুধু কি টোটো! ইট বাটখারা সবে তুলে ফেলছেন। এখন নিজেদেরও অনেকটা গর্ব লাগছে, যে আমাদের পাড়াতেও এরকম একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি রয়েছে।
নিজের গোঁফের বিষয় বলতে গিয়ে অশোক বলেন, গোঁফ রাখা তার ছোট থেকে শখ। শেষ ২০ বছর ধরে এই গোঁফ কে তিনি রেখে আসছেন। তার জন্য পরিবারে অনেক সময় স্ত্রী ও মেয়ের সঙ্গে গন্ডগোল হয়েছে। তবে তাকে থোড়াই কেয়ার। আমি কারোর শখে ব্যাঘাত ঘটায় নি, তাই আমার শখেও কেউ যেন ব্যাঘাত না ঘটায়। তিনি যেখানেই যান গোফের জন্য বিশেষ সম্মান পান। গোঁফের জন্য পরিচর্যায় করতে হয়। নিজের গোঁফের পরিচর্যার জন্য বাইরের বাজারে কোন বিয়ার্ড অয়েল বা এই জাতীয় তেল তিনি না ব্যবহার করে দেশীয় সরষের তেল তার কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ। টোটো নিয়ে বাইরে বেরোলে অনেকে তার সাথে ছবি তোলার জন্য আবদার করে তবে কোন রাগ করে নয় হাসিমুখে তাদের আবদার মেটান কোন অনুষ্ঠান বাড়িতে গেলেও তার গোঁফ দেখে তাকে নিয়ে অনেকেই মেতে ওঠেন।
এই বিষয়ে অশোক মাহাতোর স্ত্রী অঞ্জনা মাহাতো তিনি জানান, বিয়ের পর থেকেই গোঁফ রাখার প্রবণতা বাড়ে অশোকের। প্রথমেই গোঁফের জন্য তাদের দুজনার মধ্যে ঝগড়া হলেও বর্তমানে তার গোঁফের কেরামতির জন্য তারা সকলেই গর্ব বোধ করেন।।