সামনে স্কুলের স্পোর্টস বলে কথা। ভাল কিছু করতে হবে! তাই প্র্যাকটিস একটু একটু করে বাড়ছিল প্রতিদিন। কিন্তু, বন্ধুদের সঙ্গে একদিন দৌড়াতে গিয়ে দরদর করে ঘামতে শুরু করল চোদ্দ বছরের ছেলেটি! কারও কিছু বোঝার আগে শুরু হয় ছটফটানি। মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায় শরীর। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে সব শেষ! ঘটনাটা উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের সিরাউল গ্রামে। মোহিত চৌধুরীর মৃত্যুর কারণটা কী? চিকিৎসকরা বলছেন হার্ট অ্যাটাক! মাত্র চোদ্দ বছর বয়স, তখনই হার্ট অ্যাটাক এবং মৃত্যু। ফুটফুটে ছেলেটাকে বাঁচানোর সুযোগটুকু পাওয়া যায়নি। মোহিতের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, গত ২৫ দিনে উত্তরপ্রদেশের শুধু আলিগড়েই হৃদরোগ পাঁচ-পাঁচজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে দুজনই শিশু। বাচ্চাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এভাবে হার্ট অ্যাটাকের কিছুক্ষণের মধ্যে পরপর বাচ্চা মারা যাচ্ছে, তা কিন্তু, যথেষ্ট উদ্বেগের।
পরিসংখ্যান বলছে –
৫ নভেম্বর, ২০২৪: খেলার সময় অসুস্থ হয়ে, মৃত্যু হয়েছে ৮ বছরের বালিকার।
২৮ নভেম্বর, ২০২৪: দৌড়াতে গিয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: লখনউয়ের স্কুলে খেলতে খেলতে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
এপ্রিল, ২০২৪: রাজকোটে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন মৃত্যু সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের।
১৯ মার্চ, ২০২৪: কাডাপ্পায় ঘুমের মধ্যে মারা যায় ১৪ বছরের ছাত্রী।
আমাদের রাজ্যেও এমন উদাহরণ কম নয়। কী বলছে পরিসংখ্যান?
ফেব্রুয়ারি, ২০২৪: খিদিরপুরের স্কুলে গিয়ে অসুস্থ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী, পরে মৃত্যু, সন্দেহ হার্ট অ্যাটাক।
জুন, ২০২৩: এলগিন রোডের স্কুলে প্রার্থনার সময় অসুস্থ ছাত্রী, অনুমান হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক মাসের পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিচ্ছে বাচ্চাদের জন্য কীভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে এই মারণ রোগ। এতদিন আমরা কী জানতাম হার্ট অ্যাটাক হলে, তা সাধারণত চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ পেরোনোর পর হয়। তা বলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যু, এ তো বেড়েই চলেছে।
আলিগড়ের পাড়ায় পাড়ায় কান্নার রোল। হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে একটার পর পর মৃত্যু। কেন ছোট বয়সে বাচ্চারা এভাবে ঝরে পড়ছে বুঝে উঠতে পারছেন না অভিভাবকরা। যেসব বাচ্চা হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা গেল তা নিয়ে সেখানকার চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, আগের কোনওরকম লক্ষণ ছাড়া এত কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব নয়। হতে পারে শিশুটির শরীরে অন্য কোনও রোগ বাসা বেঁধেছিল। যেটা বাড়ির লোক এতদিন টেরই পায়নি!
হার্ট অ্যাটারের পর ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়, প্রথম এক ঘণ্টা থেকে দু’ঘণ্টাকে। কিন্তু আলিগড়ের পরপর ঘটনায় সেই সুযোগটাও পায়নি পরিবার। ফলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সব শেষ! ভারতে শিশুদের শরীরে হৃদরোগ কিন্তু ভালমতো ডাল-পালা মেলেছে।
ইন্ডিয়ান পেডিয়াট্রিকসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয় ২ লক্ষের বেশি শিশু। জন্মগত যাদের হার্টের গন্ডগোল, তাদের মধ্যে ১/৫ অংশের অবস্থা ভাল নয়। দেশে সারা বছর মোট মৃত্যুর ২৪.৫% হৃদরোগের কারণে।
কিন্তু, কেন বাচ্চাদের মধ্যে হৃদরোগ এত বাড়ছে? এমনকী মৃত্যু হয়ে যাচ্ছে বেঘোরে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এখন যেদিকে তাকান, ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিডের মতো ক্রনিক অসুখ।
এত রোগের মধ্যেও দাপট দেখাচ্ছে হৃদরোগ। ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে হার্টের অসুখ। বাচ্চাদের যেভাবে অসুস্থ এবং মৃত্যু হওয়ার ঘটনা ঘটছে তা কপাল ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এ প্রকাশিত এক গবেষণা জানাচ্ছে, ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে যে সংখ্যক মৃত্যুর সংখ্যা ঘটেছে, তার সিংহভাগের নেপথ্যে রয়েছে হার্টের সমস্যা।
শুধু তাই নয়, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রাণঘাতী রোগের তালিকায় একেবারে প্রথম দিকে উঠে আসবে হৃদরোগ। আর শিশুদের মধ্যে সেই সংখ্যা তো ক্রমেই বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ছোট বয়সে হার্ট অ্যাটাকের পিছনে আছে জন্মগত কারণ। অনেকেরই জন্ম থেকেই শিরা-ধমনীর কিছু সমস্যা থাকে। আরও একটি বিষয় এক্ষেত্র উঠে এসেছে, তা হল কাওয়াসাকি রোগ। অনেকেরই অল্প বয়সে এই অসুখটি হয়। ফলে থ্রম্বোসিসের সমস্যা থেকে যেতে পারে। পরে তাদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা দেখা দেয়।
অকালে মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখতে না চাইলে হৃদরোগ ঠেকাতে দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। না হলে কিন্তু মুশকিল।
সামনে স্কুলের স্পোর্টস বলে কথা। ভাল কিছু করতে হবে! তাই প্র্যাকটিস একটু একটু করে বাড়ছিল প্রতিদিন। কিন্তু, বন্ধুদের সঙ্গে একদিন দৌড়াতে গিয়ে দরদর করে ঘামতে শুরু করল চোদ্দ বছরের ছেলেটি! কারও কিছু বোঝার আগে শুরু হয় ছটফটানি। মাথা ঘুরে পড়ে গিয়ে একেবারে নিস্তেজ হয়ে যায় শরীর। হাসপাতালে নিয়ে যেতে যেতে সব শেষ! ঘটনাটা উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের সিরাউল গ্রামে। মোহিত চৌধুরীর মৃত্যুর কারণটা কী? চিকিৎসকরা বলছেন হার্ট অ্যাটাক! মাত্র চোদ্দ বছর বয়স, তখনই হার্ট অ্যাটাক এবং মৃত্যু। ফুটফুটে ছেলেটাকে বাঁচানোর সুযোগটুকু পাওয়া যায়নি। মোহিতের ঘটনা বিচ্ছিন্ন কিছু নয়, গত ২৫ দিনে উত্তরপ্রদেশের শুধু আলিগড়েই হৃদরোগ পাঁচ-পাঁচজনের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। এর মধ্যে দুজনই শিশু। বাচ্চাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা নতুন কিছু নয়। তবে এভাবে হার্ট অ্যাটাকের কিছুক্ষণের মধ্যে পরপর বাচ্চা মারা যাচ্ছে, তা কিন্তু, যথেষ্ট উদ্বেগের।
পরিসংখ্যান বলছে –
৫ নভেম্বর, ২০২৪: খেলার সময় অসুস্থ হয়ে, মৃত্যু হয়েছে ৮ বছরের বালিকার।
২৮ নভেম্বর, ২০২৪: দৌড়াতে গিয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে।
২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪: লখনউয়ের স্কুলে খেলতে খেলতে অসুস্থ হয়ে পড়ে, তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী। পরে মৃত্যু হয় তাঁর।
এপ্রিল, ২০২৪: রাজকোটে ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন মৃত্যু সপ্তম শ্রেণির ছাত্রের।
১৯ মার্চ, ২০২৪: কাডাপ্পায় ঘুমের মধ্যে মারা যায় ১৪ বছরের ছাত্রী।
আমাদের রাজ্যেও এমন উদাহরণ কম নয়। কী বলছে পরিসংখ্যান?
ফেব্রুয়ারি, ২০২৪: খিদিরপুরের স্কুলে গিয়ে অসুস্থ তৃতীয় শ্রেণির ছাত্রী, পরে মৃত্যু, সন্দেহ হার্ট অ্যাটাক।
জুন, ২০২৩: এলগিন রোডের স্কুলে প্রার্থনার সময় অসুস্থ ছাত্রী, অনুমান হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যু হয়েছে।
গত কয়েক মাসের পরিসংখ্যান বুঝিয়ে দিচ্ছে বাচ্চাদের জন্য কীভাবে প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে এই মারণ রোগ। এতদিন আমরা কী জানতাম হার্ট অ্যাটাক হলে, তা সাধারণত চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ পেরোনোর পর হয়। তা বলে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে শিশুমৃত্যু, এ তো বেড়েই চলেছে।
আলিগড়ের পাড়ায় পাড়ায় কান্নার রোল। হৃদরোগ আক্রান্ত হয়ে একটার পর পর মৃত্যু। কেন ছোট বয়সে বাচ্চারা এভাবে ঝরে পড়ছে বুঝে উঠতে পারছেন না অভিভাবকরা। যেসব বাচ্চা হার্ট অ্যাটাকের কারণে মারা গেল তা নিয়ে সেখানকার চিকিৎসকদের একাংশ বলছেন, আগের কোনওরকম লক্ষণ ছাড়া এত কম বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়া সম্ভব নয়। হতে পারে শিশুটির শরীরে অন্য কোনও রোগ বাসা বেঁধেছিল। যেটা বাড়ির লোক এতদিন টেরই পায়নি!
হার্ট অ্যাটারের পর ‘গোল্ডেন আওয়ার’ বলা হয়, প্রথম এক ঘণ্টা থেকে দু’ঘণ্টাকে। কিন্তু আলিগড়ের পরপর ঘটনায় সেই সুযোগটাও পায়নি পরিবার। ফলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগেই সব শেষ! ভারতে শিশুদের শরীরে হৃদরোগ কিন্তু ভালমতো ডাল-পালা মেলেছে।
ইন্ডিয়ান পেডিয়াট্রিকসের তথ্য বলছে, দেশে প্রতি বছর হার্টের সমস্যা নিয়ে জন্ম নেয় ২ লক্ষের বেশি শিশু। জন্মগত যাদের হার্টের গন্ডগোল, তাদের মধ্যে ১/৫ অংশের অবস্থা ভাল নয়। দেশে সারা বছর মোট মৃত্যুর ২৪.৫% হৃদরোগের কারণে।
কিন্তু, কেন বাচ্চাদের মধ্যে হৃদরোগ এত বাড়ছে? এমনকী মৃত্যু হয়ে যাচ্ছে বেঘোরে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে এখন যেদিকে তাকান, ঘরে ঘরে ডায়াবেটিস, কোলেস্টেরল, ইউরিক অ্যাসিডের মতো ক্রনিক অসুখ।
এত রোগের মধ্যেও দাপট দেখাচ্ছে হৃদরোগ। ক্রমশ ভয়ঙ্কর হয়ে উঠছে হার্টের অসুখ। বাচ্চাদের যেভাবে অসুস্থ এবং মৃত্যু হওয়ার ঘটনা ঘটছে তা কপাল ভাঁজ ফেলার পক্ষে যথেষ্ট। মেডিক্যাল জার্নাল ল্যানসেট-এ প্রকাশিত এক গবেষণা জানাচ্ছে, ২০২২ সালে গোটা বিশ্বে যে সংখ্যক মৃত্যুর সংখ্যা ঘটেছে, তার সিংহভাগের নেপথ্যে রয়েছে হার্টের সমস্যা।
শুধু তাই নয়, ২০৫০ সালের মধ্যে প্রাণঘাতী রোগের তালিকায় একেবারে প্রথম দিকে উঠে আসবে হৃদরোগ। আর শিশুদের মধ্যে সেই সংখ্যা তো ক্রমেই বাড়ছে।
চিকিৎসকরা বলছেন, ছোট বয়সে হার্ট অ্যাটাকের পিছনে আছে জন্মগত কারণ। অনেকেরই জন্ম থেকেই শিরা-ধমনীর কিছু সমস্যা থাকে। আরও একটি বিষয় এক্ষেত্র উঠে এসেছে, তা হল কাওয়াসাকি রোগ। অনেকেরই অল্প বয়সে এই অসুখটি হয়। ফলে থ্রম্বোসিসের সমস্যা থেকে যেতে পারে। পরে তাদের হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা দেখা দেয়।
অকালে মৃত্যুকে কাছ থেকে দেখতে না চাইলে হৃদরোগ ঠেকাতে দৈনন্দিন জীবনে কিছু নিয়ম মেনে চলা জরুরি। না হলে কিন্তু মুশকিল।