Cigarette On Mazar: ধর্ম এক বড়ই আজব জিনিস। এলাকাভেদে বদলে যায় রীতিনীতি। ভারতের মতো দেশে তো এই বদল আরও প্রকট। প্রতিটি ধর্মেই মানুষ কোনও অদৃশ্য শক্তিকে বিশ্বাস করে। যখনই কোনও সমস্যা হয়, মানুষ সমাধানের আশায় উপাসনালয়ে যায়। দেশের বিভিন্ন ধর্মীয় স্থানে কোথাও চিকেন বিরিয়ানি, কোথাও বা চকলেট ভোগ হিসেবে দেওয়া হয়। এমন খবর ভাইরাল হয় মাঝেমধ্যেই। এবার উত্তরপ্রদেশের রাজধানী লখনউতে এক অদ্ভুত ঘটনা সামনে এসেছে। মাজারে মানুষ সিগারেট দেয়, এমনটা কখনও শুনেছেন? অবাক লাগলেও কথাটি সত্যি। মুসাবাগ প্যালেস এলাকার কাছে এমন একটি মাজার রয়েছে, যেখানে চাদরের পরিবর্তে সিগারেট দেওয়া হয়।
আপনারা নিশ্চয়ই মাজারে চাদর দিতে দেখেছেন অনেককে। কিন্তু এখানে আসা লোকজন ধূপকাঠি ও ফুল বিছানো চাদরের বদলে সিগারেট নিয়ে আসে। এটি পরিচিত ওয়েলস বাবার মাজার নামে। এখানে আসা লোকজন বছরের পর বছর ধরে তাঁর দরবারে সিগারেট দিয়ে আসছে। শুধু লখনউ নয়, দূরদূরান্ত থেকে আগত ভক্তরা নানা মনস্কামনা পূরণের আশায় সিগারেটের প্যাকেট নিয়ে পৌঁছে যান এখানে।
এখানে সিগারেট চড়ে কেন জানেন?
ক্যাপ্টেন ফ্রেডরিক ওয়েলস এই মাজারটি তৈরি করেছিলেন। তিনি ব্রিটিশ সেনাবাহিনীতে চাকরি করতেন। স্বাধীনতার আগে মুসাবাগ এলাকায় বাস করত ব্রিটিশরা। 21 মার্চ, 1857 সালে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ব্রিটিশ সৈন্য এবং ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে প্রচণ্ড গোলাগুলি হয়েছিল। এতে ব্রিটিশ সৈন্যরা জয়লাভ করেছিল। কিন্তু এখানে নির্মিত একটি ব্রিটিশ ভবন সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। ধারণা করা হচ্ছে, এই গোলাগুলিতে ক্যাপ্টেন ওয়েলস নিহত হয়েছিলেন। এরপর এখানে তাঁর কবর তৈরি করা হয়। এই সমাধির উপরে একটি পাথরও স্থাপন করা হয়েছে, যার উপরে ক্যাপ্টেনের নাম এবং মৃত্যুর তারিখ লেখা রয়েছে। কথিত আছে যে, ক্যাপ্টেন ওয়েলস সিগারেট এবং অ্যালকোহল খুব পছন্দ করতেন। তাই এখানে আসা লোকেরা এখনও তাঁকে খুশি করার জন্য সিগারেট নিয়ে আসে। বিশ্বাস করা হয় যেস এখানে এলে যেকোনও মানুষের মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। হিন্দু-মুসলিম উভয় সম্প্রদায়ের মানুষ এখানে আসেন।
এখানে আসা লোকজন সমাধির ওপর সিগারেট জ্বালায়। সমাধি চত্বরে থাকা লোকেরা ওয়েলসকে ‘সিগারেটওয়ালে বাবা’ বলে ডাকে। যাদের মনস্কামনা পূরণ হয়, তারা এখানে সিগারেট দেয়। উল্লেখ্য, সিগারেটওয়ালে বাবার এই কবর লখনউয়ের মুসাবাগে রয়েছে যা আগে ধ্বংসস্তূপের আকারে ছিল। বহু বছর ধরে মানুষ এই প্রথা মেনে চলেছে। এই মাজারের বিশেষত্ব হল যে, এখানে নাকি প্রেমিক-প্রেমিকাদের ইচ্ছা পূরণ হয়। এখানে যারা আসেন তাদের অধিকাংশই যুগল। এখানে উপাসনা করলে নাকি ভাঙা সম্পর্ক যুক্ত হয়ে তারা আবার এক হয়ে যায়।