জলপাইগুড়ি: এবার করোনায় আক্রান্ত হয়ে জলপাইগুড়ি জেলায় মৃত্যু হল ছয় দিনের এক শিশুর। ঘটনাটি ঘটেছে জলপাইগুড়ি জেলার ওদলাবাড়ি অঞ্চলে। শিশুর দেহ ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করল পরিবার।
সূত্রের খবর, গত ১১ জানুয়ারি ওদলাবাড়ি গ্রামপঞ্চায়েত তুড়িবাড়ি এলাকার বাসিন্দা মনোমায়া প্রধান নামে এক গর্ভবতী মহিলা স্থানীয় ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালে ভর্তি হন। সেদিনই তিনি এক শিশুর জন্ম দেন। ২৪ ঘন্টা পর মা এবং শিশুকে ছুটি দিয়ে দেয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। বাড়ির লোকে শিশুটির নাম রেখেছিল আনমোল।এরপর রবিবার শিশুটি অসুস্থ হলে তাকে ফের হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসা চলাকালীনই হাসপাতালে মারা যায় শিশুটি। মাত্র ৬দিনের মাথাতেই শিশুর মৃত্যুতে ভেঙে পড়েছে গোটা পরিবার। পাশাপাশি চিন্তা বেড়েছে স্বাস্থ্য দফতরের। কারণ তৃতীয় ঢেউয়ে বলি হচ্ছে সদ্যোজাত শিশুরা। শিশুদের উপর তৃতীয় ঢেউয়ের রেশ ইতিমধ্যেই পড়তে শুরু করেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিন ওদলাবাড়ি গ্রামীণ হাসপাতালের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে শিশুটির চিকিৎসাকারী ডাক্তার অরিন্দম চৌধুরী বলেন, ‘আজ সকাল ১১টার দিকে বাচ্চাটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় সর্দি কাশির সমস্যা নিয়ে। আমি সেই অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করি। নেবুলাইজার দিয়েছিলাম। নেবুলাইজ করার সময়ই দেখা যায় বাচ্চাটি মারা গিয়েছে। এরপর তড়িঘড়ি আমরা বাচ্চাটির র্যাপিড টেস্ট করি। বাচ্চাটির করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট পজিটিভ আসে। পাশাপাশি বাচ্চাটির আইফোগ্লাইসেমিয়া ছিল। আজকে বুকের দুধ খাওয়াও বন্ধ করে দিয়েছিল শিশুটি। আমরা বাড়ির লোককে জানিয়েছি কাল এসে যেনো সকলেই নিজেদের আরটিপিসিআর টেস্ট করায়। বাচ্চাটির মাও সম্ভবত পজিটিভ হতে পারেন’।
অরিন্দমবাবু আরও জানান, প্রশাসনের নিয়ম অনুযায়ী, পুলিশ শিশুটির দেহ নিয়ে যাবে। বাড়ির লোকেদের আইসোলেশনে থাকতে বলা হয়েছে। তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী বাড়ির লোক ওই শিশুটির মৃতদেহ ফিরিয়ে নিতে অস্বীকার করেছে। গোটা ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
এই মুহূর্তে সারা দেশজুড়েই করোনার তৃতীয় ঢেউ চলছে। প্রতিদিনই পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তরবঙ্গেও প্রতিদিন বাড়ছে সংক্রমণের সংখ্যা। তবে তৃতীয় ঢেউয়ে বেশি করে আক্রান্ত হবে শিশুরা এমন আগাম ভবিষ্যতবাণী আগে থেকেই ছিল। তৃতীয় ঢেউয়ে সারা দেশের পাশাপাশি এ রাজ্যেও বেশকিছু শিশুর মৃত্যু নথিভুক্ত হয়েছে যা চিন্তা বাড়িয়ে তুলেছে প্রশাসনের। ইতিমধ্যেই দেশে ১৫ থেকে ১৮ বছর বয়সীদের টিকাকরণ শুরু হলেও অনুর্ধ ১৫ বছর বয়সীদের টিকাকরণ নিয়ে এখনও কিছু জানানো হয়নি কেন্দ্রীয় সরকারের তরফে।