ফলতা: কোভিড মহামারীর সময় ‘রোল মডেল’ হয়ে উঠেছিল অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার (Diamond Harbour) লোকসভা কেন্দ্র। সংক্রমণ মোকাবিলায় মোবাইল ভ্যানে করে সকলের কোভিড-টেস্ট মডেল শুরু হয়। এবার সরকারি প্রকল্প বার্ধক্য ভাতা দেওয়ার ক্ষেত্রেও বড় পদক্ষেপ করার ঘোষণা করলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তথা তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। বার্ধক্য ভাতায় নতুন রেজিস্ট্রেশন করেছেন অথচ এখনও ভাতা পাচ্ছেন না, এরকম ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের ৭০ হাজার মহিলাকে বার্ধক্য ভাতা (Old age pension) দেওয়ার কথা ঘোষণা করলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের সক্রিয় তৃণমূল কর্মীদের সহায়তা নিয়েই বার্ধক্য ভাতায় রেজিস্ট্রেশন করা মহিলাদের আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি (Abhishek Banerjee)।
সম্প্রতি দুয়ারে সরকারে রাজ্যজুড়ে বহু মানুষ বার্ধক্য ভাতার আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু, রেজিস্ট্রেশন হওয়ার কয়েক মাস পার হয়ে গেলেও তাঁদের বার্ধক্য ভাতা চালু হয়নি। এদিন ফলতায় জনসভা থেকে সেই প্রসঙ্গ তুলে সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি যখনই রাস্তায় বেরিয়েছি, ফলতা, মহেশতলা সহ যেখানে গিয়েছি, সেখানেই অনেক বয়স্ক মহিলারা আমাকে ধরেছেন। তাঁরা বলেছেন, বার্ধক্য ভাতা পাই না। দুয়ারে সরকারে অনেকবার বলেছি। বয়স হয়ে গিয়েছে, ছেলেপুলে নেই, একটু ব্যবস্থা করে দাও।” তাঁদের সেই কাতর আবেদনে এবার সাড়া দিতে চলেছেন তৃণমূল সেনাপতি। তিনি জানান, ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে এবারে ৭০ হাজার বয়স্ক মানুষ দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে বার্ধক্য ভাতায় রেজিস্ট্রার করেছেন। কিন্তু, এখনও তাঁরা ভাতা পাচ্ছেন না। তাই এবার ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ তাঁর সীমাবদ্ধ সাহায্য নিয়েই ওই বয়স্ক মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর প্রতিশ্রুতি দিলেন।
এদিন ফলতার জনসভা থেকে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “সরকার বার্ধক্য ভাতা দিচ্ছে। কিন্তু, যাঁরা নতুন রেজিস্ট্রেশন করেছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে একটা পলিসিগত সমস্যা রয়েছে। সেটারও দ্রুত সমাধান হবে। তবে সরকার যবে দেবে দেবে। আমি কথা দিচ্ছি, আমরা আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাঁদের পাশে দাঁড়াব। ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রে তৃণমূল কংগ্রেসের এক থেকে দেড় লক্ষ সক্রিয় কর্মী রয়েছেন। তাঁদের সহায়তা নিয়েই যে ৭০ হাজার মহিলা বার্ধক্য ভাতায় রেজিস্ট্রেশন করিয়েছেন, তাঁদের পাশে দাঁড়াব। নতুন বছরের ১ জানুয়ারি থেকেই আমাদের সীমাবদ্ধ অনুযায়ী প্রতি মাসে তাঁদের আর্থিক সাহায্য করব।”
কোভিড মহামারী হোক বা আমফানের মতো ঝড়-বৃষ্টি বা অগ্নিকাণ্ড, এমনকি কেউ অসুস্থ হলেও তৃণমূল কর্মীরা তাঁদের পাশে দাঁড়ান। বার্ধক্য ভাতার ক্ষেত্রেও ডায়মন্ড হারবারের তৃণমূল কর্মীরা বয়স্ক মানুষের প্রতি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে এবং রাজ্যে মডেল হয়ে উঠবে জানিয়ে পরোক্ষে বিরোধীদেরও একহাত নেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায়। তিনি বলেন, “এটাই জনপ্রতিনিধির কাজ। দাঙ্গা ছড়ানো, ধর্মের ভেদাভেদ করা, টাকা আটকে রাখা জনপ্রতিনিধির কাজ নয়। নিজের জীবন বিপন্ন করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই জনপ্রতিনিধির কাজ।”