Alipurduar: মুখ ফিরিয়েছিল নার্সিং হোম, যমজ সদ্যোজাতদের নতুন জীবন দিল সরকারি হাসপাতাল

Alipurduar District Hospital: প্রায় দুই মাসের চেষ্টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই শিশুর যেন নব জন্ম দিয়েছে। বুধবার সুস্থ হয়ে ওঠা ওই দুই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। এর জন্য ছোট অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

Alipurduar: মুখ ফিরিয়েছিল নার্সিং হোম, যমজ সদ্যোজাতদের নতুন জীবন দিল সরকারি হাসপাতাল
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেল দুই সদ্যোজাত (নিজস্ব চিত্র)

| Edited By: Soumya Saha

Nov 10, 2021 | 11:58 PM

আলিপুরদুয়ার : মুখ ফিরিয়েছে নার্সিংহোম। যমজ শিশুদের সুস্থ করে নজির গড়ল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল। উন্নত চিকিৎসা পরিষেবার আশায় বেসরকারি নার্সিংহোমে প্রসব বেদনা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন এক মহিলা। এর পর দুই যমজ শিশু প্রসব করেন তিনি। কিন্তু দুই শিশুর ওজন এতটাই কম ছিল যে তাদের বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়ে। ফলে বেগতিক দেখে মুখ ফেরায় আলিপুরদুয়ারের ওই নার্সিংহোম।

তবে স্বল্প পরিকাঠামোর মধ্যেও ওই দুই যমজ শিশুকে সুস্থ করে এবার নজির গড়ল আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল। প্রিম্যাচিওর দুই শিশুর চিকিৎসা করে তাদের ওজন বাড়ানোর পাশাপাশি একেবারে সুস্থ করে তুলেছেন জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরা। প্রায় দুই মাসের চেষ্টায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দুই শিশুর যেন নব জন্ম দিয়েছে। বুধবার সুস্থ হয়ে ওঠা ওই দুই শিশুকে হাসপাতাল থেকে ছাড়া হয়। এর জন্য ছোট অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করেছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

জেলা হাসপাতালের শিশু রোগ বিশেষজ্ঞ সুনীল পান্না বলেন, “নার্সিংহোমে জন্মানো দুই যজম প্রিম্যাচুয়েট শিশুকে গুরুতর অবস্থায় আমাদের কাছে আনা হয়েছিল। যাদের ওজন ছিল একেবারেই কম। আমরা দুজন শিশু এসএনসিইউ’তে রেখে চিকিৎসা শুরু করি। মেডিসিন দেওয়ার পাশাপাশি চব্বিশ ঘণ্টা নজরদারিতে রাখি। নানা সাপ্লিমেন্ট দেওয়ার প্রায় ১২ থেকে ১৫ দিন পর দুই শিশুই সুস্থ হতে থাকে। এখন তারা পুরোপুরি সুস্থ। ওজনও বেড়েছে।

যমজ দুই শিশুর মা ললিতা বর্মণ বলেন, ভাল চিকিৎসা পরিষেবা পাব বলে সন্তান প্রসবের জন্য নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলাম। কিন্তু সন্তান জন্মানোর পর সঙ্কটজনক অবস্থায় নার্সিংহোম মুখ ফিরিয়েছে। পরে জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকদের দ্বারস্থ হই। তাঁদের জন্যই আমার যমজ সন্তান নব জন্ম পেল। আমি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ।”

আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১০ সেপ্টেম্বর আলিপুরদুয়ারের একটি নার্সিংহোমে যমজ শিশু প্রসব করেন কামাক্ষাগুড়ি এলাকার বাসিন্দা ললিতা বর্মণ। তিনি দুই যমজ কন্যা সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু জন্মের পরে দুই শিশুর ওজন ছিল যথাক্রমে ৮৬৫ গ্রাম এবং ১ কেজি ১০০ গ্রাম। ওজন কম হওয়ায় শ্বাসকষ্ট সহ নানা ধরনের উপসর্গ দেখা দেয় দুই শিশুর। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষ শিশু দুটিকে অন্যত্র ‘রেফার’ করার কথা বলে দেয়। কিন্তু দুঃস্থ ওই মহিলার পরিবার পরে দুই শিশুকে নিয়ে জেলা হাসপাতালে রেখেই চিকিৎসা করানোর সিন্ধান্ত নেন।

জানা গিয়েছে, এর পর জেলা হাসপাতালের চিকিৎসক সুনীল পান্না এবং কৃষ্ণেন্দু সিনহার তত্বাবধানে ওই যমজ শিশুদের চিকিৎসা শুরু হয়। হাসপাতালের এসএনসিইউ’তে রেখে টানা প্রায় দুই মাস চিকিৎসা করা হয় যমজ দুই কন্যার। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, হাসপাতালে যে অবস্থায় দুই শিশুকে আনা হয়েছিল, তাতে তাদের বাঁচানোই দায় ছিল। কিন্তু যমজ সন্তানকে বাঁচানো চ্যালেঞ্জ হিসেবেই নেন তাঁরা।

এই দুই মাস এসএনসিইউ-এর দুই চিকিৎসক এবং নার্সরা রাত-দিন এক করে দুই যমজ শিশুকে সুস্থ করে তোলার কাজ করতে থাকেন। মেডিসিন দেওয়ার পাশাপাশি নজরদারি মাধ্যমে এখন ওজন বেড়েছে দুই শিশুরই। অন্য উপসর্গগুলিও আর নেই। এখন দুই শিশু একেবারে সুস্থ হয়ে উঠেছে বলেই চিকিৎসকরা জানিয়েছেন।

জেলা হাসপাতালের সুপার চিন্ময় বর্মণ বলেন, “নার্সিংহোমে জন্ম হলেও দুই শিশুকে সুস্থ করে তুলতে ওই পরিবার আমাদের উপরে ভরসা রাখে। আমাদের হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সরা অক্লান্ত পরিশ্রম করে দুজনকে সুস্থ করে তুলেছেন। দুই শিশুরই ওজন বেড়েছে। তারা এখন অন্য খাবারও খাচ্ছে। আজ তাদের হাসপাতাল থেকে ছুটি দেওয়া হল। যে ভাবে অক্লান্ত পরিশ্রম করে চিকিৎসক, নার্সরা দুই শিশুকে সুস্থ করে তুলেছেন তাতে তাঁরা প্রশংসা পাওয়ার যোগ্য।”

আরও পড়ুন : Dilip Ghosh Exclusive: ‘যাঁরা আমাকে অপছন্দ করেন, তাঁদের জন্য বিজেপির অফার অধ্যাপক সুকান্ত’, বললেন দিলীপ