Alipurduar Elephant Death: মা ছিটকে ৫০ মিটার দূরে, চাকায় জড়ানো দুই শিশুর শরীর! উত্তরবঙ্গের রেলপথ আবারও ভাসল রক্তে

Sujit Roy | Edited By: শর্মিষ্ঠা চক্রবর্তী

Nov 27, 2023 | 12:50 PM

Alipurduar Elephant Death: রেললাইন পেরোতে ট্রেনের ধাক্কায় একের পর এক হাতির মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন বন দফতর ও রেল ৷ এভাবে হাতির মৃত্যু রোধ করতে রেল মন্ত্রক নতুন প্রযুক্তি আনার কথা ৷ তার জন্য বরাদ্দ করা হয় ৭৭ কোটি টাকা

Alipurduar Elephant Death:  মা ছিটকে ৫০ মিটার দূরে, চাকায় জড়ানো দুই শিশুর শরীর! উত্তরবঙ্গের রেলপথ আবারও ভাসল রক্তে
আলিপুরদুয়ারে ট্রেনের ধাক্কায় হাতির মৃত্যু
Image Credit source: TV9 Bangla

Follow Us

আলিপুরদুয়ার: লোহার পাতের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে তিনটে দেহ। পেট ফেটে নাড়ি ভুঁড়ি বেরিয়ে গিয়েছে। কোনওটারও আবার থেঁতলে গিয়েছে মাথা, পা। একটি শাবকের শরীর ট্রেনের সঙ্গেই পেঁচিয়ে গিয়েছে। অভিঘাত এতটা তীব্র ছিল, লাইন থেকে ছিটকে ৫০ মিটার দূরে ছিটকে পড়েছে আরেকটি দেহ। রক্তাক্ত গোটা রেললাইন। আলিপুরদুয়ারের রাজভাতখাওয়ায় তিনটে হাতির মৃত্যু হল মালবাহী গাড়ির ধাক্কায়। জানা গিয়েছে, একটি পূর্ণ বয়স্ক হাতি, আর দুটি হস্তিশাবকের মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাকে ঘিরে এলাকায় চাঞ্চল্য। আলিপুরদুয়ার-শিলিগুড়ি রুটে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। এই ঘটনায় আরও একবার প্রশ্নের মুখে পড়েছে রেল কর্তৃপক্ষ।

জানা গিয়েছে, সোমবার সকাল ৭.২৫ মিনিট নাগাদ শিলিগুড়িগামী মালগাড়িতে ধাক্কা লাগে তিনটি হাতির। মনে করা হচ্ছে, রেল লাইন পার করে জঙ্গলের এক পাশ থেকে অন্য পাশে যাচ্ছিল হাতি তিনটি। ট্রেনটিকে কোনওভাবে লক্ষ্য করেনি তারা। ট্রেনের ধাক্কায় মা হাতিটি লাইন থেকে ৫০ মিটার দূরে গিয়ে পড়ে। শাবক দুটি লাইনের ওপরেই ছিল। এর আগেও একাধিকবার এই ধরনের ঘটনা ঘটেছে ওই একই এলাকায়।

ইতিমধ্যেই রেল ইঞ্জিনটিকে সিজ্ করে পরীক্ষা করা হচ্ছে। লোকো পাইলটদেরও মেডিক্যাল পরীক্ষা করানো হবে বলে জানা গিয়েছে। প্রসঙ্গত, গত ১০ অগস্টই ট্রেনের ধাক্কায় এক অন্তঃস্বত্তা হাতির মৃত্যু হয়। এর আগে এই ধরনের ঘটনার প্রবণতা কমাতে বনদফতর ও রেল একাধিকবার আলোচনায় বসে।

রেললাইন পেরতে ট্রেনের ধাক্কায় একের পর এক হাতির মৃত্যুতে উদ্বিগ্ন বন দফতর ও রেল। হাতির মৃত্যু রোধ করতে রেল মন্ত্রক নতুন প্রযুক্তি সম্পূর্ণভাবে বসানো সম্ভব হয়নি। এই প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হয়েছে ৭৭ কোটি টাকা। জঙ্গলের বুক চিড়ে গিয়েছে রেলের ট্র্যাক। সেই কারণেই এত দুর্ঘটনা। জঙ্গল ও রেলপথের দু’ধার দিয়েই অপটিক্যাল ফাইবার পাতা হয়েছে। তাতে থাকছে সেন্সরও। তাতে দুপাশের অন্তত ১০ মিটারের মধ্যে হাতি থাকলে সেন্সরের মাধ্যমে অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে খবর পৌঁছে যাবে চালকের কাছে। গত দু’বছরে এভাবে ৮৭টি হাতির প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হয়েছে বলে রেলের তরফে দাবি করা হয়েছে। কিন্তু তারপরও এই ঘটনা।

এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন মুখ্য বনপাল অতনু রাহার বক্তব্য, “২০১০ সালের পর প্রচুর মালগাড়ি ও যাত্রীবাহী ট্রেনের রুট পরিবর্তন করে এখান থেকে করে দেওয়া হয়েছে। এটি অসংরক্ষিত এলাকা। বর্তমানের পরিস্থিতি বলতে পারব না। তবে আমার সময়ে বলেছিলাম, হাতি ওই রুটে মালগাড়ি বা ট্রেন চালাতে না। কারণ রাতেই হাতির চলাফেরা বেশি হয়। ট্রেনের গতিবেগ নিয়ন্ত্রণের কথাও বলা হয়েছিল। ট্রেনের হেডলাইট অন করে স্পিড থাকলে, কিছু করার থাকে না। কারণ হাতির চোখে ওত জোরাল আলো পড়লে ওরা দিশেহারা হয়ে যায়।”

বন্যপ্রাণী বিশেষজ্ঞ জয়দীপ কুণ্ডু বলেন, “গতি কমানো কোনও বড় ব্যাপার নয়। যদি যাত্রীবাহী ট্রেনের গতি কমানোর বিষয় থাকলে অন্য ব্যাপার। কিন্তু মালগাড়ির ক্ষেত্রে তো গতি কমানোর ক্ষেত্রে কোনও অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। তারপরও কেন এই ধরনের ঘটনা ঘটছে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। “

Next Article