আলিপুরদুয়ার: শিশুসাথী প্রকল্পে বিনা পয়সায় হার্ট অপারেশন করানো হয়েছিল তার। তখন দশম শ্রেণিতে পড়ত সে। সালটা ২০১৫। কিন্তু অভিযোগ, অপারেশন সাকসেসফুল হয়নি। পঙ্গু হয়ে পড়ে মাদারিহাট থানার রাঙ্গালিবাজনার জান্নাতুল ফেরদৌসি। এখন সালটা ২০২২। বর্তমানে যুবতী জান্নাতুল। প্রায় সাত বছর ধরে হাসপাতালে শয্যাশায়ী সে। প্রায় একশো শতাংশ পঙ্গু হয়ে গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে একটি মামলা কলকাতা হাইকোর্টে বিচারাধীন। মামলার শুনানি হবে ২৯ মার্চ। অথচ পরিবারের অভিযোগ, এর কোনও দায়ই নিচ্ছে না স্বাস্থ্য় দফতর।
মেয়েটি বীরপাড়া হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকাকালীন শনিবার গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। দুপুর থেকে শ্বাসকষ্ট শুরু হলে শনিবার রাতে তাকে আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। এদিন হাসপাতাল চত্বরে দাঁড়িয়ে বীরপাড়া হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অবহেলার অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন জান্নাতুনের বাবা আমজাদ হোসেন ও তাঁদের আত্মীয় স্বজনরা।
জানা গিয়েছে, মাটিগাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মেয়েটির হার্ট অপারেশন করানো হয় ২০১৫ সালের জুলাই মাসে। জ্ঞান ফেরে দুমাস পর। দেখা দেয় মস্তিষ্ক বিকৃতি। কথা বলার শক্তি হারায় সে। ধীরে ধীরে প্রায় একশো শতাংশ পঙ্গু হয়ে যায় জান্নাতুন। ২০১৬ সালে হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হলে ২০১৮ সালের জানুয়ারি মাসে তাকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। ২০১৮ সালের মে মাসে তাঁকে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে পর্যবেক্ষণ ও ফিজিওথেরাপির জন্য নিয়ে আসা হয়। আবার হাইকোর্টের নির্দেশে ২০২০ সালের ১৬ জুন বাঙ্গুর ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস তাকে ভর্তি করে স্বাস্থ্য দফতর। পরে আবার তাকে বীরপাড়া রাজ্য সাধারণ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। বীরপাড়া হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, জান্নাতুলের শ্বাসকষ্ট হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে আলিপুরদুয়ারে পাঠানো হয়েছে।
আমজাদের অভিযোগ, ভুল চিকিৎসায় তার মেয়ের জীবন বিপন্ন হয়েছে। অথচ দায় নিচ্ছে না স্বাস্থ্য দফতর। বীরপাড়া হাসপাতালের সুপার অন ক্যামেরা কোনও প্রতিক্রিয়া দিতেই রাজি নয়। শুধু এটাই জানিয়েছেন, জান্নাতুলকে এখন আলিপুরদুয়ারে পাঠানো হবে। স্বাস্থ্য় দফতরের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যাচ্ছে না।