আলিপুরদুয়ার: ভাইয়ের বয়স ১৬। আর দাদার ২৮। এক মুঠোভাতের জন্য সেই ভাইয়ের হাতে খুন হলেন দাদা! আলিপুরদুয়ারের শামুকতলা থানার কার্তিকা এলাকার ঘটনা। তাদের মা নেই, বাবাও নেই। দুই ভাইই একে অপরের সহায়। মাসির বাড়িতে থাকত একসঙ্গে। দিনমজুরি করে ভাইকে খাওয়াতেন বড় ভাই বাবুলাল কুজুর। তাঁকেই ভাইয়ের হাতে খুন হতে হয়েছে বলে অভিযোগ।
জানা যাচ্ছে, বাবুলাল নিজে রান্না করে খাওয়াতেন ছোট ভাই বিমান কুজুরকে। কিন্তু রবিবার রাতে, বাবুলাল রান্না শেষ করে নিজেই খেতে বসে পড়েন। সেটা দেখতে পেয়ে ছোট ভাই বিমান রেগে যায়। বড় ভাইকে খাবার ছেড়ে উঠিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে বলেও জানিয়েছেন পরিবারের সদস্যরা। তখন দুই ভাইয়ের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হয়ে যায়। বড় ভাই বাবুলাল বিমানকে মারধর করে! একে পেটে খিদের জ্বালা, তার ওপর মার খেয়েই কি এতটা হিংস্র হয়ে ওঠে বিমান?
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘরে পড়ে থাকা একটি ইট তুলে সোজা দাদা বাবুলালের মাথায় আঘাত করে বিমান। রক্তাক্ত অবস্থায় লুটিয়ে পড়েন ২৮ বছরের বাবুলাল। এরপরেও রাগ কমেনি! সামনে থাকা বড় পাথর দিয়ে বড় ভাইয়ের মাথা থেঁতলে দেয় বলে অভিযোগ বিমানের বিরুদ্ধে। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বাবুলালের। রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে পড়ে থাকে তাঁর নিথর দেহ।
তবে রাগ তখনও কমে না। পুলিশ জানতে পেরেছে, দাদা আর বেঁচে নেই, বুঝতে পেরে বিমান দাদার মৃতদেহ লোপাট করার জন্য বাড়িতেই মাটি খুঁড়ে চার ফুট গর্ত করে। এই কাজ শেষ করতে করতে সকাল হয়ে যায়। দাদার ভারী দেহ একা টেনে নিয়ে যেতে চেষ্টা করে ওই গর্তে, কিন্তু একার পক্ষে সেটা সম্ভব হচ্ছিল না। এই সময় এক প্রতিবেশী তাকে দেখে ফেলে। তিনিই শামুকতলা থানায় খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মৃতদেহ থানায় নিয়ে যায়। ছোট ভাই বিমানকে গ্রেফতার করে জুভেনাইল কোর্টে পাঠিয়ে ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।