আলিপুরদুয়ার: আলিপুরদুয়ারের ফালাকাটা নতুন পুরসভা। সেখানে অভাব পড়েছে কর্মীদের। যার জেরে ব্যাহত হচ্ছে উন্নয়নের কাজ। কোনও কাজই করতে পারছে না পুরসভা। জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার ট্রেজারিতে ৯৮ লক্ষ টাকা পড়ে রয়েছে। ফালাকাটা পুরসভার বোর্ড গঠনের দু’মাস পরেই পুরসভার উন্নয়নে ওই টাকা এসেছে। ফলে টাকা খরচ করতে পারছে না পুরসভা। এই টাকা কোন খাতে খরচ করবে তার ডিটেলস প্রোজেক্ট রিপোর্টও তৈরি করতে পারছে না। আর এই কারণে প্ল্যান এস্টিমেট যাঁরা তৈরি করবেন সেই ইঞ্জিনিয়ার বা সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগই করতে পারেনি পুরসভা। ফলে, ট্রেজারিতে এসে টাকা পড়ে রয়েছে। সামান্য চেয়ার টেবিল কেনা থেকে নিকাশিনালা পরিষ্কারের কাজ করা যাচ্ছে না। তাই ইঞ্জিনিয়ার চেয়ে এবার জেলাশাসক ও রাজ্যের দ্বারস্থ হচ্ছে পুরসভা।
ফালাকাটা পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ মহুরী বলেন, ‘আমরা পুরসভার প্রাথমিক কাজ করার জন্য ৯৮ লক্ষ টাকা পেয়েছি। কিন্তু ওই টাকায় কী করব কী কিনব তার এস্টিমেট বানানোর জন্য ইঞ্জিনিয়ার কিংবা সাব অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার চেয়ে জেলাশাসক ও রাজ্যকে চিঠি দিয়েছি।’
বস্তুত, গত ২৩ মার্চ পুরসভার বোর্ড গঠন হয়। তারপর থেকে পুরসভার অ্যাকাউন্টে কোনও টাকা দেয়নি রাজ্য। সম্প্রতি রাজ্য ৯৮ লক্ষ টাকা দিয়েছে। তা দিয়ে পুরসভার চেয়ার টেবিল, কম্পিউটার, ইন্টারনেট ব্যবস্থা করা হবে। এছাড়া নিকাশিনালা সংস্কার করা হবে। টাকা এসেছে। কিন্তু ডিপিআর না থাকায় কোনও জিনিস কিনতে পারছে না পুরসভা।
এদিকে, ফালাকাটা পুরসভা সূত্রে জানা খবর, ইঞ্জিনিয়ার নিয়োগ করতে সময় লাগবে। বিকল্প ব্যবস্থা কী করা যায় তার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে পুরসভা। ফলে ফালাকাটা নতুন পুরসভার কাজ থমকে। ফালাকাটা ১, পারঙ্গেরপাড় গ্রাম পঞ্চায়েত এবং ফালাকাটা ২ গ্রামপঞ্চায়েত ও গুয়াবারনগর গ্রামপঞ্চায়েতের অর্ধেক অংশ নিয়ে ফালাকাটা পুরসভা গঠিত হয়েছে। এই পুরসভায় ২৫ জন অস্থায়ী কর্মী রয়েছেন। একজন কোষাধ্যক্ষ রয়েছেন। আর কোনও কর্মী নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারাদের অভিযোগ, কোনও কাজই হচ্ছে না। রাস্তায় পড়ে থাকছে জঞ্জালের স্তূপ, ড্রেন সংস্কার, পানীয় জল সবই নৈব নৈব চ। দু’টি গ্রামপঞ্চায়েতের ব্যাপক অংশের মানুষ আগে গ্রামপঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজ পেতেন। পুরসভা হওয়ায় ১০০ দিনের কাজ থেকে বঞ্চিত। আবার পুর পরিষেবাও পাচ্ছেন না।
ফালাকাটার বিজেপি বিধায়ক দীপক বর্মণ অভিযোগ করেন, ‘কে ডিপিআর তৈরি করবে? এখানে এক্সিকিউটিভ বলে কেউ নেই। বিডিও সাহেব কাজ চালাচ্ছেন। অফিসে লোক পাওয়া যায় না। কোনও পরিষেবাই নেই। এটা পুরসভা নামে মাত্র। নির্বাচন হয়েছে। ওরা জিতে গেছে। ব্যাস। কাজ শেষ।’