আলিপুরদুয়ার: অফুরান উদ্যম, সাহসিকতা ও ভাল কাজের জন্য এবার পুরস্কার পাচ্ছেন আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম থানার আইসি বাসুদেব সরকার। শৌর্য পদকের পর এবার ইন্ডিয়ান পুলিশ মেডেল (আইপিএম) পাচ্ছেন তিনি। উত্তরবঙ্গের একটি বিস্তীর্ণ অঞ্চল যখন কেএলও (KLO) আন্দোলনে জেরবার রাজ্য সরকার, সেই সময় আলিপুরদুয়ারের (Alipurduar) কুমারগ্রাম থানার দায়িত্ব পান বাসুদেব সরকার। আর দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই একের পর এক সাফল্য। আলফা, কেএলও এনডিএফবি এবং কেএলও দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন তিনি। পুলিশ মহলে এই সবের জন্য তাঁর যথেষ্ট সুখ্যাতি রয়েছে। সেই বাসুদেব সরকার এবার জাতীয় স্তরের পুরস্কার পাওয়ায় খুশির হাওয়া আলিপুরদুয়ার পুলিশ প্রশাসনেও।
কেএলও আন্দোলনের কালো মেঘে যখন ঢেকে গিয়েছিল উত্তরের আকাশ, ঠিক সেই সময়ে ধুমকেতুর মত আবির্ভাব ঘটে পুলিশ অফিসার বাসুদেব সরকার। পুলিশ মহলে ‘বিডি’ বলেই সুপরিচিত তিনি। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত কেএলও আন্দোলন চরমে পৌঁছে গিয়েছিল উত্তরবঙ্গে। লাগামহীন সন্ত্রাস। সেই সময়েই দায়িত্বে আসেন বাসুদেব সরকার। কেএলও-দের নিয়ন্ত্রণে আনতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন তিনি। ২০০১ সাল থেকে উত্তরবঙ্গের একাধিক থানায় ডিউটি সামলানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাঁর। মাটিগারা, কুমারগ্রাম, জয়গাঁ, গোয়ালপোখর, শামুকতলা, বাগডোগরা, এনজিপি, মালবাজার থানার ওসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। কোনও কোনও থানায় দুইবারও পোস্টিং পেয়েছেন তিনি। ২০১৬ সালে পদোন্নতি হয়ে আইসি হিসেবে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের দায়িত্ব পালন করেন। পরে আবার সিতাই এবং কুমারগ্রাম থানার আইসি হিসেবে দায়িত্ব নেন তিনি।
ভয়ডরহীন মনোভাব, বাহাদুরি ও বীরত্বের পুরষ্কার আগেই পেয়েছেন তিনি। বাহাদুরির পুরস্কার হিসেবে ২০০৩ সালে স্টেট গ্যালান্ট্রি অ্যাওয়ার্ড ‘শৌর্য পদক’ এবং ২০০৫ সালে ভারত সরকারের ‘মেডেল ফর গ্যালান্ট্রি’ (পিএমজি) পদক পেয়েছেন তিনি। এবার ফের একবার ভাল কাজের জন্য পুরস্কৃত হচ্ছেন তিনি। পাচ্ছেন ইন্ডিয়ান পুলিশ মেডেল (আইপিএম)। তিনি বর্তমানে আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম থানার আইসি পদে রয়েছেন। নতুন এই মেডেলপ্রাপ্তির কথা শুনে খুশি বাসুদেববাবুও। বলছেন, ‘পদক পাচ্ছি জেনে খুব ভাল লাগছে।’ জানা গিয়েছে, ভারত সরকার পুরস্কার পদক এবং শংসাপত্র রাজ্যে পাঠিয়ে দেবে। রাষ্ট্রপতির পক্ষে রাজ্যপাল আনুষ্ঠানিকভাবে এই পদক তুলে দেবেন।