আলিপুরদুয়ার: রাজ্যজুড়ে ধুমধামের সঙ্গে পালিত হচ্ছে বিশ্ব আদিবাসী দিবস। তবে সেই অনুষ্ঠান ঘিরেই এবার তৈরি হল বিতর্ক। অভিযোগ, আদিবাসী বিজেপি নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদের সঙ্গে একসঙ্গে বসতে আপত্তি তৃণমূল নেতাদের। গোটা ঘটনায় রাজনৈতিক দড়ি টানাটানি আলিপুরদুয়ারে।
কয়েকদিন আগে দেশের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি হিসাবে শপথ নিয়েছেন দ্রৌপদী মুর্মু। ভারতে প্রথম আদিবাসী রাষ্ট্রপতি হিসেবে ইতিহাসে লিখিত হয়েছে তাঁর নাম। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গে এমন ছবি দেখে রীতিমতো শোরগোল পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।
ঠিক কী ঘটেছে?
আলিপুরদুয়ারের কুমারগ্রাম ব্লকের মারাখাতা এলাকায় বিশ্ব আদিবাসী দিবস উপলক্ষে মঙ্গলবার আদিবাসী উদযাপন কমিটির তরফে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।ওই অনুষ্ঠানে তৃণমূল নেতাদের পাশাপাশি আমন্ত্রণ জানানো হয় আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন সাংসদ তথা বিজেপির নেতা দশরথ তির্কিকে।অভিযোগ, অনুষ্ঠানের শুরুতেই তৃণমূল নেতারা দশরথ তির্কির সঙ্গে একই অনুষ্ঠানে থাকতে অস্বীকার করেন। এরপরই তৈরি হয় বিতর্ক। ফলে এক প্রকার বাধ্য হয়েই বিজেপি এই নেতা অনুষ্ঠান চলাকালীন মঞ্চ থেকে অনেকটা দূরেই একটি ফাঁকা জায়গায় চেয়ার নিয়ে সস্ত্রীক বসেন।
জানা গিয়েছে, আলিপুরদুয়ার জেলা তৃণমূল চেয়ারম্যান মৃদুল গোস্বামী, রাজ্য তৃণমূলের সম্পাদক তথা এসজেডিএ-র চেয়ারম্যান সৌরভ চক্রবর্তী, ডিপিএসসি-র চেয়ারম্যান পরিতোষ বর্মণ, আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি লুইস কুজুর সহ একাধিক তৃণমূল নেতাদের উপস্থিতিতে আরম্ভ হয় অনুষ্ঠান। এরপর অনুষ্ঠান শেষে তৃণমূল নেতারা চলে গেলে, দশরথবাবুকে বরণ করে অনুষ্ঠান মঞ্চে নিয়ে যাওয়া হয় আয়োজকদের পক্ষ থেকে। এরপর প্রাক্তন সাংসদ ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূল নেতাদের বিরুদ্ধে।
এ প্রসঙ্গে দশরথ তির্কি বলেন, ‘বিশ্ব আদিবাসী দিবসের মতো একটা পবিত্র দিনে এই ব্যবহার আমাকে আঘাত দিয়েছে। আমি সত্যিই আমার জীবনে এমন ব্যবহার পাইনি। তৃণমূল নেতাদের মানসিকতা তলানিতে এসে ঠেকেছে। ওদের বিশ্ব আদিবাসী দিবস নিয়ে কোনও ধারনাই নেই। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ওরা আদিবাসী দিবস নিয়ে কিছুই বলতে পারল না। ওরা শুধু পঞ্চায়েত এবং লোকসভা ভোটের প্রচার করেছে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে। সারা বিশ্ব আজ জানে বাংলার নেতারা সব চোর।’
অপরদিকে বিষয়টি অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা সৌরভ চক্রবর্তী দাবি করেন, ‘দশরথকে আমি অনুষ্ঠানের জায়গায় দেখিনি। আর উনি এমন কোনও বড় নেতা না যে উনি কী করেন তাঁর খোঁজ রাখতে হবে।’