বাঁকুড়া: নতুন বছর শুরু হতেই পর্যটন কেন্দ্রের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন মানুষগুলি আনন্দ বদলে গিয়েছিল এক লহমায়। ভরা মরশুমে চিন্তায় পড়েছিলেন তাঁরা। কারণ করোনার জন্য রাজ্য সরকার সমস্ত পর্যটন কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছিল। কীভাবে পেট চালাবেন বুঝে উঠতে পারছিলেন না। তবে এখন কিছুটা লাগাম পরানো গিয়েছে করোনায়। সংক্রমণ অনেকটা নিয়ন্ত্রিত। সেই কারণে সোমবার নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন স্কুল খোলার পাশাপাশি এবার ফের খুলে যাবে পর্যটন কেন্দ্রগুলি। ফলত, কিছুটা হাসি ফুটেছে এই শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের মুখে।
করোনার বাড় বাড়ন্তে দীর্ঘ এক মাস বন্ধ থাকার পর রাজ্য সরকারের নির্দেশে অবশেষে খুলে গেল বাঁকুড়ার পর্যটনকেন্দ্রগুলি। শীত বিদায় নেওয়ার আগেই পর্যটন কেন্দ্রগুলি খুলে যাওয়ায় কিছুটা হলেও লোকসান ঠেকানো সম্ভব হবে বলে মনে করছেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত অসংখ্য হস্তশিল্প ব্যবসায়ী থেকে শুরু করে হোটেল মালিকরা।
করোনার জেরে গত দুবছরের খরা কাটিয়ে গত বছরের শেষে কিছুটা হলেও ছন্দে ফিরেছিল বাঁকুড়ার পর্যটন শিল্প। গত বছর পুজোর পর থেকে বাঁকুড়ার মুকুটমণিপুর, শুশুনিয়া ও বিষ্ণুপুর সহ অন্যান্য পর্যটনকেন্দ্রগুলিতে পর্যটকরা আসতে শুরু করায় নতুন করে আশার আলো দেখতে শুরু করেছিলেন পর্যটন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা। কিন্তু চলতি বছরের গোড়াতেই ফের করোনা সংক্রমণ রোধে পর্যটনকেন্দ্রগুলি বন্ধের নির্দেশ জারি করে রাজ্য সরকার। তারপর প্রায় এক মাস ধরে পর্যটকশূন্য ছিল বাঁকুড়ার সবকটি পর্যটনকেন্দ্র।
একের পর এক হোটেল বুকিং বাতিল হয়ে যাওয়ায় সমস্যায় পড়েন হোটেল মালিকরা। ক্রেতাশূন্য অবস্থায় হা পিত্যেশ করে বসে ছিলেন ব্যবসায়ীরা। নিজেদের পসরা বিক্রি না হওয়ায় চূড়ান্ত লোকসানের আশঙ্কার প্রহর গুণছিলেন তাঁরা। এর মধ্যেই গতকাল রাজ্য সরকারের নির্দেশ। বিষ্ণুপুরের এক গাইড বলেন, “আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। এই যে মন্দিরগুলো খুলে দিয়েছে এতে কিছুটা হলেও হয়ত হাল ফিরবে আমাদের।” বিষ্ণুপুর হোটেল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশানের অসিত কুমার চন্দ্র বলেন, “তৃতীয় ঢেউয়ে আমরা বিধ্বস্ত। সমস্ত বুকিং বাতিল হয়ে যায়। সরকারকে সাধুবাদ জানাই যে পর্যটন কেন্দ্রগুলি খুলে দিয়েছেন। তবে জানি না আদৌ পর্যটকরা কতটা আসবেন।”
মঙ্গলবার থেকে খুলে গেল পর্যটনকেন্দ্রগুলির দরজা। সরকারি নির্দেশ ঘোষণা হতেই ফের বাতিল হওয়া হোটেলের বুকিং নতুন করে আসতে শুরু করেছে। পর্যটকরা ফের আসতে শুরু করবে এই আশায় আজ সকাল থেকে ফের বিষ্ণুপুরের মন্দিরগুলির সামনে পসরা সাজিয়ে দোকান শুরু করেছে বিভিন্ন হস্তশিল্পী সামগ্রীর বিক্রেতারা।