Domahani Incident: অমাবস্যাতেই নাকি বেশি উৎপাত! বাঁশ ঝাড় থেকে দুর্ঘটনাগ্রস্ত বগি-সবই চষে ফিরলেন কর্তারা
Domahani Incident: গ্রামবাসীদের মনে আরও সাহস যোগাতে আমাবস্যার রাতে ওই এলাকায় স্ত্রী ভাস্বতী রায়চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে রাত জাগলেন ময়নাগুড়ি থানার আই সি তমাল দাস।
জলপাইগুড়ি: দোমহনি রেল দুর্ঘটনাস্থলে এলাকাবাসীর মন থেকে ভীতি দূর করতে সস্ত্রীক রাত জাগলেন ময়নাগুড়ি থানার আইসি। দোমহনির মৌয়ামারি গ্রামে মানুষের মন থেকে ভূতের আতঙ্ক কাটাতে সম্প্রতি গ্রামে রাত জেগেছিলেন ময়নাগুড়ির বিডিও শুভ্র নন্দী। এবার গ্রামবাসীদের মনে আরও সাহস যোগাতে আমাবস্যার রাতে ওই এলাকায় স্ত্রী ভাস্বতী রায়চৌধুরীকে সঙ্গে নিয়ে রাত জাগলেন ময়নাগুড়ি থানার আই সি তমাল দাস।
গ্রামবাসীদের বক্তব্য, আমাবস্যার রাতেই নাকি তেঁনারা বেশি ঘোরাফেরা করে। সুযোগ পেলেই ওরা নাকি মানুষের ঘাড়ে চেপে বসছে। গ্রামে গুজব ছড়িয়েছে উল্কা গতিতে। ভ্রান্ত ধারণার শিকার হয়ে আতঙ্কে ভুগছেন ময়নাগুড়ি দোমহনির বিকানের এক্সপ্রেস দুর্ঘটনাগ্রস্থস্থল মৌয়ামারি গ্রামের বাসিন্দারা। তাঁদের মন থেকে ভূতের আতঙ্ক কাটাতে ইতিমধ্যেই রাত জেগেছিলেন ময়নাগুড়ি ব্লকের বিডিও শুভ্র নন্দী। এবার গ্রামবাসীদের মনে সাহস যোগাতে মৌয়ামারি গ্রামে স্বস্ত্রীক রাত জাগলেন ময়নাগুড়ি থানার আই সি তমাল দাস।
সোমবার রাতে ময়নাগুড়ি থানার আইসি তমাল দাসের সঙ্গে ছিলেন দমকল বিভাগের ওসি এবং আরপিএফ আধিকারিকেরা। রাত ১২ টার পর থেকে ভোর পর্যন্ত ঘুরে বেরালেন গ্রামের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্ত। বাঁশ ঝাড়, রেল দুর্ঘটনাগ্রস্ত বগি- কোনও জায়গাই বাদ দেননি তাঁরা। এবার যাতে মানুষের মন থেকে ভয় যায়! আশাবাদী তাঁরা। ভূত কোথায়, গোটা চত্বরে একটা শেয়াল-কুকুরেরও দেখা পাননি তাঁরা, বিষয়টি বুঝিয়ে বলছেন গ্রামবাসীদের।
ঘটনায় তমাল দাস বলেন, ” আসলে গ্রামে যে ভূতের আতঙ্ক ছড়িয়েছে তা কাটতেই আমাদের এখানে আসা। আমরা মানুষদের বোঝাতে চাইছি ভূত-প্রেত বলে কিছু নেই। আর গ্রামবাসীদের এই কথা বোঝাতে পারলে রেলের ভূত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।”
চলতি মাসের ১৩ তারিখ ময়নাগুড়ির দোমহনি এলাকায় বিকানের গুয়াহাটি এক্সপ্রেস দুর্ঘটনা ফিরিয়ে দেয় ২৩ বছর আগে ঘটে যাওয়া সাঁইথিয়ার স্মৃতি। দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে ৯ জনের। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। ইতিমধ্যেই রেলের ট্র্যাক মেরামতি করে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে ওই লাইনে। কিন্তু স্বাভাবিক ছন্দে ফিরতে পারছেন না দোমহনির বাসিন্দারা।
এক অজানা আতঙ্ক তাড়া করে ফিরছে তাঁদের। কানে বাজছে বুক ফাঁটা সেই কান্নার আওয়াজ। তাঁদের মনে হয়, ‘কাউকেই তো দেখছি না, কিন্তু কেউ যেন রয়েছে পাশেই…’। তাঁদের কথায়, এ কেবল অনুভব করা যায়, ভাষায় ব্যক্ত করা যায় না। গ্রামবাসীদের বক্তব্য, অপঘাতে মৃত্যু, তাই আত্মারা শান্তি পায়নি এখনও। কিছুদিন আগেই গ্রামবাসীরা এলাকায় কীর্তনের আয়োজন করেন।
ময়নাগুড়ি দোমহনি এলাকার মানুষের মনে বসে থাকা ভূতের আতঙ্ক কাটাতে এলাকায় প্রায়শই রাত কাটাচ্ছেন আধিকারিকেরা। কিন্তু সমাজেরই একপক্ষের দাবি, এলাকায় মানসিক চিকিৎসক কিংবা যুক্তিবাদী সংগঠনের তরফ থেকে একটি সচেতনতামূলক প্রচারের প্রয়োজন। তা না হলে মানুষের মন থেকে ভ্রান্ত ধারণা সরানো সম্ভব হবে না।