বাঁকুড়া: নিয়মিত স্কুলে না আসার কারণে স্কুলের সেমেস্টারে বসার অনুমতি দেওয়া হয়নি। এদিকে সেই অনুমতি আদায়ে অধ্যক্ষকে ঘেরাও করলেন পড়ুয়ারা। বাঁকুড়ার খ্রিস্টান কলেজের ঘটনা। সোমবারের এই ঘটনার জেরে পড়াশোনা কার্যত লাটে ওঠে। পড়ুয়াদের দাবি, কম উপস্থিতি থাকার পরও কাউকে কাউকে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হচ্ছে। সকলের ক্ষেত্রে নিয়ম এক হওয়া দরকার। পাল্টা অধ্যক্ষ জানান, দু’জনকে বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়েছে ঠিকই। তবে সেটা মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে। তবে পড়ুয়ারা নিজেদের দাবিতে অনড়। প্রায় ৮ ঘণ্টা অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখা হয় বলে অভিযোগ।
বাঁকুড়া জেলার অন্যতম খ্যাতনামা এই খ্রিস্টান কলেজ। সোমবার দুপুরের পর থেকে সেখানেই অধ্যক্ষকে ঘেরাও করে রাখেন ছাত্র ছাত্রীরা। তাঁদের বক্তব্য, আন্ডার গ্র্যাজুয়েট স্তরে প্রথম, তৃতীয় ও পঞ্চম সেমেস্টারের পড়ুয়াদের কলেজের পরীক্ষার জন্য সর্বনিম্ন উপস্থিতির হার হিসাবে ৫০ শতাংশ ঠিক করেছে কর্তৃপক্ষ।
এদিকে ৩টি সেমেস্টার মিলিয়ে প্রায় ৪০ জন পড়ুয়ার উপস্থিতির হার ৫০ শতাংশের কম। ফলে তাঁরা পরীক্ষায় বসার অনুমতি পাচ্ছেন না। দিশা চৌধুরী নামে এক ছাত্রীর দাবি, স্যরদের কাছে টিউশনি পড়ার কারণে কেউ কেউ কম দিন ক্লাস করেও পরীক্ষায় বসতে পারছে। তাঁর বক্তব্য, অনেকেই প্রিয় ছাত্র ছাত্রী হতে পারেন, তবে নিয়ম সকলের জন্য এক হওয়া দরকার।
এ বিষয়ে প্রসূন রজক নামে এক ছাত্র বলেন, “৬০ শতাংশ উপস্থিতির কথা জানিয়েছিল কলেজ কর্তৃপক্ষ। আমরাও তা মেনে নিই। অনেকের ৪৩ শতাংশ উপস্থিতি ছিল। তাদের অনেকেই কিন্তু ভিতরে ভিতরে সুবিধা পেয়ে গিয়েছে। অথচ যারা সত্যিই কোনও সমস্যায় পড়েছে, কলেজ আসতে পারেনি, তাদেরটা স্যর দেখছেন না। আমরা ৪০ শতাংশ উপস্থিতির দাবিতে এসেছি। সেটা মেনে নিলে অধিকাংশেরই হয়ে যায়। আমরা অধ্যক্ষকে এই দাবি জানালাম। উনি মানতে চাইছেন না। অথচ একটা পরীক্ষায় বসতে না পারলে তো পড়ুয়াদের খুবই ক্ষতি হয়ে যাবে।”
এ বিষয়ে বাঁকুড়া খ্রিস্টান কলেজের অধ্যক্ষ ফটিকবরণ মণ্ডল বলেন, “ওদের দাবি সকলকে পরীক্ষায় বসতে দিতে হবে। আমরা টিচার্স কাউন্সিলের মিটিংয়ে সিদ্ধান্ত নিই ৫০ শতাংশ উপস্থিতি থাকলে পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হবে। আর ওরা যে বলছে কেউ কেউ ছাড় পেয়েছে বিষয়টা অন্যরকম। একজনের শরীরে বড়সড় অস্ত্রোপচার হয়েছে, আরেকজনের আবার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ। আমি বললাম, মেডিক্যাল গ্রাউন্ডে আর কারও যদি এরকম হয় ছাড় পাবে। ওদের দাবি সকলকেই ছাড়তে হবে। সেটা করা যাবে না।”