বাঁকুড়া: রাজ্যে চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গি। তারই মাঝে দোসর কনজাংটিভাইটিস। বিশেষত একাধিক জেলার বিভিন্ন স্কুলে ছড়াতে শুরু করেছে চোখের ভাইরাল এই অসুখ। ইতিমধ্যে একাধিক স্কুলের তরফে নোটিস দিয়ে অভিভাবকদের সচেতনও করা হচ্ছে। শিশুদের মধ্যেই সবচেয়ে এর সংক্রমণ বাড়ছে। মানছে স্বাস্থ্য দফতরও। এই পরিস্থিতিতে সরকারি কিংবা বেসরকারি একাধিক স্কুলে কমছে উপস্থিতির হার।
গত বছরের তুলনায় এবারের জুলাইতে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা অনেকটাই বেড়েছে। রীতিমতো কোমর বেঁধে নেমেছেন স্বাস্থ্য অধিকর্তা ও পুরকর্তারা। ডেঙ্গি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাতের ঘুম ছুটছে জেলা স্বাস্থ্য দফতরের। আর তারই মাঝে গোদের উপর বিষ ফোঁড়ার মতো এবার দেখা দিল কনজাংটিভাইটিস-এর সংক্রমণ। এই ভাইলার সংক্রমণ সবথেকে বেশি শিশুদের মধ্যে।
প্রথমে চোখ লাল হওয়া, তারপর ক্রমাগত জল পড়া ও চোখে অস্বস্তিকর অনুভূতি-এই রোগের প্রধান উপসর্গ। তবে স্বাস্থ্য দফতর জানাচ্ছে এই ভাইরাল অসুখের সঙ্গে ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ ঘটে থাকলে দৃষ্টিশক্তির উপর তার প্রভাব পড়তে পারে। তবে এই ধরনের সব অসুখই চিকিৎসায় সারানো সম্ভব বলে দাবি স্বাস্থ্য দফতরের। স্বাস্থ্য দফতরের হিসাব অনুযায়ী এই রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা কমবেশি সব হাসপাতালেই বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার সংক্রমণের হার এবং সংক্রামিতের সংখ্যা অস্বাভাবিক রকমের বেশি বলে মনে করছে স্বাস্থ্য দফতর।
এদিকে কনজাংটিভাইটিসে সংক্রমণ মাত্রা ছাড়ানোয় স্কুলগুলিতে কমেছে পড়ুয়ার উপস্থিতির হার। সংক্রমণের শৃঙ্খল ভাঙতে কিছু কিছু স্কুল কমজাংটিভাইটিসে আক্রান্তদের স্কুলে পাঠানোর ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন,আক্রান্ত পড়ুয়ারা দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠছে বলে জানা গিয়েছে। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, কনজাংটিভাইটিস রোগ সাংঘাতিক ছোঁয়াচে। মূলত এটি শিশু ও কিশোর কিশোরীদের মধ্যে এই রোগের সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি। পরিষ্কার থাকলে মূলত রক্ষা পাওয়া যেতে পারে।
চিকিৎসকরা এক্ষেত্রে স্যানিটাইজার ব্যবহার করা, আলাদা রুমাল বা তোয়ালে ব্যবহার করা, কাল চশমা পরা, সাঁতার না কাটা, বারবার চোখে হাত না দেওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন।
চোখ জ্বালা করা, চোখে চুলকানি, ব্যথা কিংবা খচখচ করলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলছেন চিকিৎসকরা। সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে স্কুলগুলিকেও।
অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক সজল কুমার বিশ্বাস বলেন, “ভাইরাল ইনফেকশন। এটা ছড়ায় খুব তাড়াতাড়ি। যেমন স্কুল। স্কুলে অনেক বাচ্চা থাকে, সেখানে এক জনের থেকে অন্য জনের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে। তবে তাতে এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই। তবে এর সঙ্গে যদি কোনও ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন যুক্ত হয়, তাহলে একটু সমস্যা হচ্ছে। সেটা অবশ্য ৫-১০ শতাংশ মানুষের হচ্ছে।”