বাঁকুড়া: সরকারি সেচ খাল ও নিকাশি নালা দখল করে গড়ে উঠছে একের পর এক নির্মাণ, অবৈধ নির্মাণ রুখতে প্রশাসনের দ্বারস্থ খোদ তৃনমূল নেতা। দখলদারি নিয়ে অভিযোগ পাল্টা অভিযোগ বিজেপি তৃণমূলের।
বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের নাড়িচা বাজারের একদিক দিয়ে চলে গিয়েছে হরিণমুড়ি সেচ খাল। অন্যদিক দিয়ে গিয়েছে এলাকার একমাত্র নিকাশী নালা। বাজারের মাঝখান দিয়ে গিয়েছে পাত্রসায়ের বিষ্ণুপুর রাজ্য সড়ক। দীর্ঘদিন ধরেই নাড়িচা এলাকায় পূর্ত দফতরের নিকাশি নালা ও সেচ খাল দখল করে অস্থায়ী দোকানঘর তৈরি করে ব্যবসা করে আসছিলেন ১৫ থেকে ২০ জন ব্যবসায়ী। সম্প্রতি ওই এলাকার সেচ খাল ও নিকাশি নালা দখল করে আরও ১০ থেকে ১২ টি পাকা নির্মাণের কাজ শুরু হয়। মুখ্যমন্ত্রী যখন রাজ্য জুড়ে সরকারি জায়গাকে দখলদার মুক্ত করতে পদক্ষেপের কথা বলছেন, তখন বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের ব্লকের নাড়িচা গ্রামের এই ছবি নতুন করে প্রশ্নের মুখে ফেলেছে প্রশাসনকে। প্রশাসন অবশ্য অভিযোগ পেতেই বিষয়টি নিয়ে দ্রুত পদক্ষেপের আশ্বাস দিয়েছে।
সম্প্রতি বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় পাত্রসায়ের ব্লকের বিডিও অফিসের দ্বারস্থ হয়ে লিখিত অভিযোগ জানান তৃণমূলের স্থানীয় কুশদ্বীপ অঞ্চল সভাপতি শাহজাহান মিদ্যা। অভিযোগ পেতেই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। অভিযোগকারী শাহজাহানের বক্তব্য, “রাজ্য সরকার যেখানে বারবার সরকারি জমি দখল মুক্ত করার চেষ্টা করছে, তখন নাড়িচা মোড়ের এই ঘটনা কোনওভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।”
অভিযোগ কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন দখলদার ব্যবসায়ীরাও। বিষ্ণপুর সাংগঠনিক জেলার বিজেপি মুখপাত্র দেবপ্রিয় বিশ্বাস বলেন, “তৃণমূল নেতাদের মদতেই ওই দখলদারি চলছে। বিজেপি এই ঘটনার প্রতিবাদ করায় এখন পিঠ বাঁচাতে তৃণমূল নেতা অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছেন।” অন্যদিকে, তৃণমূল এই ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে। বিষ্ণুপুরের তৃণমূলের সহ সভাপতি দিব্যেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “যতদূর জানি, ওখানকার অঞ্চল সভাপতি অভিযোগ জানিয়েছেন। যদি বেআইনি ব্যাপার থাকলে, তৃণমূল কোনও মেনে নেয় না। এটা কোনওভাবেই বরদাস্ত করা হবে না। বিজেপিই হয়তো সরকারি জমিতে কোনও লোক বসিয়ে দিচ্ছে, তারপর এরকম কথা বলছে। ”
বিষ্ণুপুরের মহকুমা শাসক প্রসেনজিৎ ঘোষ জানিয়েছেন, অভিযোগ পাওয়ার পরই দ্রুত পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট ব্লকের বিডিওকে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।