বাঁকুড়া: আশঙ্কাই সত্যি হল। অবশেষে উদ্ধার হল কংসাবতীতে ভেসে যাওয়া যুবকের মৃতদেহ। এক পরিচিতের বিয়ের নিমন্ত্রণ খেতে মেমারি থেকে বাঁকুড়া এসেছিলেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে বাকি দুই সমবয়সী যুবকের সঙ্গে কংসাবতীতে স্নান করতে নেমেছিলেন। তাতেই মর্মান্তিক পরিণতি। মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়ায় ভেসে যান তিনি। মঙ্গলবার তাঁকে উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। বুধবার মুকুটমণিপুর থেকে বেশ কিছুটা দূরে দেহটি উদ্ধার হয়। প্রথমে নদীখাতের এক পাশে মৃতদেহটি দেখতে পান স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁরাই পুলিশে খবর দেন। মৃতদেহটি উদ্ধার করলে পরিবারের সদস্য়রা শনাক্ত করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম চুরকু হেমব্রম।
মুকুটমণিপুর লাগোয়া বাগজবড়া গ্রামে একটি বিয়ে বাড়িতে এসেছিলেন পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বাসিন্দা চুরকু। মঙ্গলবার দুপুরে কংসাবতী নদীতে স্নান করতে যান। তাঁরই সঙ্গে ছিলেন জামালপুর থানার মোহনপুর গ্রামের বাসিন্দা রবি সিংহ ও শশীভূষণ সিংহ। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস থাকায় মঙ্গলবার বেলা আড়াইটা নাগাদ মোট ন’বার সতর্কতা মূলক সাইরেন বাজিয়ে মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে পাঁচ হাজার কিউসেক জল ছাড়া শুরু হয়। স্থানীয়রা বলছেন, সাইরেন বাজালেই তাঁরা সতর্ক থাকেন। সে সময় কেউই তাঁরা নদীতে নামেন না।
চুরকু হেমব্রম-সহ তিনজনই বহিরাগত হওয়ায় সাইরেনের অর্থ বুঝতে পারেননি। এরপর নদীখাতে হঠাৎ বেগে জল বইতে শুরু করে। সাঁতরেও সামাল দিতে পারেননি তাঁরা। তিনজনই তলিয়ে যেতে থাকেন। স্থানীয়দের চেষ্টায় রবি সিংহ ও শশীভূষণ সিংহকে কোনওক্রমে উদ্ধার করা সম্ভব হয়। খোঁজ মিলছিল না চুরকুর। তড়িঘড়ি মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে জল ছাড়া বন্ধ করে শুরু হয় তল্লাশি অভিযান। পুলিশ ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর রাতভর খোঁজাখুজি করে।
সকালে কিছুটা দূরে স্থানীয়রা একটি মৃতদেহ নদীখাতে পড়ে থাকতে দেখেন। বিপদ আঁচ করতে পেরেছিলেন পরিবারের সদস্যরা। তারপর আশঙ্কাই সত্যি হয়। আপাতত মৃতদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য বাঁকুড়া সম্মিলনী মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়েছে।