বাঁকুড়া: বিঘার পর বিঘা জমিতে চাষ করেছিলেন কৃষকরা। তবে জলের তোড়ে সেই জমিতে জল ঢুকে নষ্ট হচ্ছে ফসল। জানা গিয়েছে, কংসাবতী সেচ ক্যানাল উপচে জলে ভাসল কয়েকশো বিঘে জমির রবি মরসুমের শস্য। খবর পেতেই ক্যানালে জল ছাড়া বন্ধ করল কংসাবতী সেচ কর্তৃপক্ষ। ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কায় মাথায় হাত কৃষকদের। মঙ্গলবার ঘটনাটি ঘটেছে বাঁকুড়ার রাইপুর ব্লকের কাঁটাপাল এলাকায়। বিঘের পর বিঘে ফসলের জমিতে জল দাঁড়িয়ে যাওয়ায় ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন স্থানীয় কৃষকরা। যদিও খবর পাওয়ার পর ওই সেচ ক্যানালে জল ছাড়া বন্ধ করে কংসাবতী সেচ কর্তৃপক্ষ।
এমনিতেই একের পর এক নিম্নচাপের জেরে বাঁকুড়া জেলায় চলতি বছর আলু, সরষে, বাদাম সহ রবি ফসলের মরসুম শুরু হয়েছে অনেক দেরীতে। স্বাভাবিকভাবে নাবি করে লাগানো এই ফসলের উৎপাদন হয়েছে তুলনামূলক কম। এই পরিস্থিতিতে ‘মরার উপর খাঁড়ার ঘা’-এর মতো কংসাবতী সেচ ক্যানালের জল উপচে প্লাবিত হল বিস্তীর্ণ এলাকার রবি ফসলের জমি।
গতকাল ক্যানালের জল উপচে ঢুকে পড়ে কাঁটাপাল, পাটমৌলি, বাঁদরবনি, আমলাপাল সহ বেশ কয়েকটি গ্রাম লাগোয়া প্রায় ৩০০ বিঘা জমিতে। আলু,বাদাম,সরষে সহ অন্যান্য রবি ফসলের জমিতে কোথাও এক হাঁটু কোথাও আবার এক ফুট উচ্চতায় জল দাঁড়িয়ে যায়। এর ফলে চূড়ান্ত লোকসানের আশঙ্কার প্রহর গুণতে শুরু করেছে স্থানীয় কৃষকরা।
কংসাবতী সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রবি ফসলে সেচের জন্যই মুকুটমণিপুর জলাধার থেকে দিন সাতেক আগে জল ছাড়া হয়। রাইট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানালে ৬০০ কিউসেক হারে জল ছাড়া সেচ দফতরের পক্ষ থেকে। তবে ক্যানালের শেষ প্রান্তে জল না পৌঁছনোয় জলের প্রেসার বৃদ্ধি করতে জল ছাড়ার পরিমাণ দিন চারেক আগে বৃদ্ধি করে কংসাবতী কর্তৃপক্ষ। ব্যাস! ওই সেচ ক্যানালে জল ছাড়ার পরিমাণ ৬০০ কিউসেক থেকে বাড়িয়ে ১২০০ কিউসেক করতেই রাইপুরের কাঁটাপাল এলাকায় ক্যানাল উপচে জল ঢুকতে শুরু করে পার্শ্ববর্তী জমিতে। ঘটনার কথা জানাজানি হতেই দ্রুত খবর দেওয়া হয় মুকুটমণিপুর জলাধারে।
খবর পাওয়ার পর গতকাল রাতেই রাইট ব্যাঙ্ক মেইন ক্যানালে জল ছাড়া বন্ধ করে দেয় মুকুটমণিপুর জলাধার কর্তৃপক্ষ। আপাতত জল ছাড়া বন্ধ করা হলেও কাঁটাপাল,পাটমৌলি, বাঁদরবনি ও আমলাপাল গ্রামের কৃষকদের দাবিযা ক্ষতি হওয়ার তা হয়ে গেছে। এরপর সরকার ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের পাশে না দাঁড়ালে সেক্ষেত্রে কৃষকদের না খেয়ে মরতে হবে।