Bengali Scientist: ইন্টারনেট ছাড়াই চোখের পলকে যাবে বিশালাকার ফাইল, এমন অ্যান্টেনা তাক লাগালেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী

TV9 Bangla Digital | Edited By: জয়দীপ দাস

Nov 30, 2022 | 11:45 PM

Bengali Scientist: তবে এই প্রথম নয়, এর অনেক আগেই আন্তর্জাতিক স্তরের বৈজ্ঞানিক মহলে পরিচিতি পেয়েছেন শ্রীকান্ত পাল। আমেরিকায় বিশ্বের বৃহত্তম টেলিস্কোপ হিসাবে পরিচিত নাসার গ্রিন ব্যান্ড টেলিস্কোপে সঙ্কেত গ্রহণ সংক্রান্ত দীর্ঘকালীন একটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে সকলের নজর কেড়েছিলেন তিনি।

Bengali Scientist: ইন্টারনেট ছাড়াই চোখের পলকে যাবে বিশালাকার ফাইল, এমন অ্যান্টেনা তাক লাগালেন বাঁকুড়ার বিজ্ঞানী
অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল

Follow Us

বাঁকুড়া: প্রায় ২৪ বছর আগে আবিষ্কার হয়েছিল ব্লুটুথ (Bluetooth)। ওয়ারলেস কমিউনিকেশনের (Wireless Communication) ক্ষেত্রে বল্টুথের আবিষ্কার খুলে দেয় নব দিগন্ত। তারপর গঙ্গ-যমুনা দিয়ে বয়ে গিয়েছে অনেক জল। জনপ্রিয় সেই প্রযুক্তির গতি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের গবেষণাগারে নিরন্তর গবেষণা শুরু হয়। আসে দ্রুত গতির ব্লুটুথ প্রযুক্তি। এর মধ্যে এবার বিশ্বের সবথেকে ছোট অ্যান্টেনা তৈরি করে সাড়া ফেললেন বাঁকুড়ার (Bankura) বিজ্ঞানী তথা রাঁচির মেশরার বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক শ্রীকান্ত পাল। তাঁর এই এই আবিষ্কার তথ্য-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে নতুন বিপ্লবের সূচনা করবে বলে দাবি শ্রীকান্তর। 

শুধু আকারে বিশ্বের ক্ষুদ্রতম তাই নয়, ফাইল আদানপ্রদানের এই অ্যান্টেনা ব্লুটুথের থেকে কমপক্ষে একশো গুণ বেশি গতি সম্পন্ন বলে জানাচ্ছেন শ্রীকান্তবাবু। ফ্রিকোয়েন্সি ১.৮ গিগাহার্জ থেকে ১৮ গিগাহার্জ পর্যন্ত। এই অ্যান্টেনাতে তথ্য আদানপ্রদানের জন্য উচ্চমানের ব্যান্ডউইথ ব্যবহার করা হয়েছে। আকারে ছোট হওয়ায় অনায়াসেই এই অ্যান্টেনা সংযুক্ত করা যাবে মোবাইল ফোন বা যে কোনও স্মার্টও যন্ত্রে। একশো মিটার এলাকার মধ্যে দুটি বা তার বেশি এই অ্যান্টেনা যুক্ত যন্ত্র ইন্টারনেট সংযোগ ছাড়াই চোখের নিমেষে আদানপ্রদান করতে পারবে বড় আকারের ফাইল-ফোল্ডার। বোতামের মতো দেখতে এই অ্যান্টেনার উৎপাদন খরচও অত্যন্ত কম হবে বলে জানিয়েছেন শ্রীকান্তবাবু। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন বহুজাতিক সংস্থার তরফে বাণিজ্যিকভাবে অ্যান্টেনাটি উৎপাদনের প্রস্তাব পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তিনি।

সাফল্যের পর কী বলছেন শ্রীকান্তবাবু ?

শ্রীকান্তবাবু তাঁর সহযোগী মৃন্ময় চক্রবর্তীকে নিয়ে এই অ্যান্টেনা তৈরি করেন ২০১৩ সালে। বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির গবেষণাগারে চলে সামগ্রিক কাজ। সে সময় অ্যান্টেনার পেটেন্টের জন্য আবেদন জানানো হয়। সম্প্রতি, ভারত সরকার এই অ্যান্টেনার পেটেন্ট প্রদান দিয়েছে। শ্রীকান্তবাবুর দাবি, “আমার আবিস্কৃত এই অ্যান্টেনা আগামী দিনের শিক্ষা, স্বাস্থ্য থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে স্মার্ট প্রযুক্তি ব্যবহারের অন্যতম মাধ্যম হয়ে উঠবে। স্মার্ট সিটি তৈরির যে পরিকল্পনা দেশে প্রাথমিক ভাবে শুরু হয়েছে সেক্ষেত্রেও দিগন্ত খুলে দেবে এই অ্যান্টেনা। আমি নিশ্চিত এই অ্যান্টেনার বাণিজ্যিকভাবে উৎপাদন ও ব্যবহার শুরু হলে আগামীদিনে পৃথিবী থেকে মুছে যাবে ব্লুটুথ প্রযুক্তি। বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, বেসরকারি সংস্থা ও বহুজাতিক সংস্থা আমাকে বানিজ্যিক ভাবে এই অ্যান্টেনা উৎপাদনের প্রস্তাব দিয়েছে। আমি এখনও কোনও স্থির সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে পারিনি।”

আগেই পেয়েছেন আন্তর্জাতিক মহলে স্বীকৃতি 

তবে এই প্রথম নয়, এর অনেক আগেই আন্তর্জাতিক স্তরের বৈজ্ঞানিক মহলে পরিচিতি পেয়েছেন শ্রীকান্ত পাল। আমেরিকায় বিশ্বের বৃহত্তম টেলিস্কোপ হিসাবে পরিচিত নাসার গ্রিন ব্যান্ড টেলিস্কোপে সঙ্কেত গ্রহণ সংক্রান্ত দীর্ঘকালীন একটি সমস্যার স্থায়ী সমাধান করে সকলের নজর কেড়েছিলেন তিনি। পরবর্তীতে ব্রিটেনের জড্রেল ব্যাঙ্ক মানমন্দিরে থাকা টেলিস্কোপের জটিল যান্ত্রিক গোলযোগ ঠিক করে দেন। তাঁর পড়াশোনা শুরু বাঁকুড়া জেলা স্কুলে। সেখানে মাধ্যমিক পাশ করার খ্রিষ্টান কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক।  যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এম টেক পাশের পর অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ও বার্মিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পোস্ট ডক্টরেট করেন তিনি। চাকরি জীবনের শুরুতে ভারত ইলেক্ট্রনিক্স লিমিটেডে কাজ করতেন তিনি। দিল্লি ও রুড়কি আইআইটিতে অধ্যাপনারও কাজ করেছেন তিনি। বর্তমানে বিড়লা ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজির অধ্যাপক পদে রয়েছেন তিনি। 

Next Article